Sub Inspector

ঘুষ না-পেয়ে অত্যাচারের অভিযোগ, সাব-ইনস্পেক্টর বরখাস্ত, তদন্তের নির্দেশ কোর্টের

প্রসঙ্গত, গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে চাপড়া এলকায় পর-পর চুরির ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাঁদের অন্যতম ছিল চাপড়া বাঙ্গালঝি বড় মসজিদ এলাকার বাসিন্দা দবীর হালসানা।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:৫৪
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দাবি মতো এক লক্ষ টাকা ঘুষ না দেওয়ায় এক যুবককে মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে চাপড়া থানার এক সাব ইনস্পেক্টরের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত সাব ইনস্পেক্টকে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সেই সঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সিআইডিকে ওই অফিসারের বিরুদ্ধে এফআইআর করে তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে।

এই ঘটনায় জেলা পুলিশের অন্দরে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি অভিযুক্ত সাব ইনস্পেক্টর চন্দন সাহা। আর কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার ঈশানী পাল বলেন, “আদালতের রায়ের কপি এখনও হাতে পাইনি। সেটি না দেখে কোনও মন্তব্য করব না।”

Advertisement

অভিযোগকারীর আইনজীবী বিশ্বদেব টামটা বলেন, “বৃহস্পতিবার জয়মাল্য বাগচী ও অজয় কুমার গুপ্তার ডিভিশন বেঞ্চ এডিজি (সিআইডি)-কে অভিযুক্ত সাব ইনস্পেক্টর চন্দন সাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে ন্যূন্যতম এসপি পদমর্যাদার কোনও অফিসারকে দিয়ে তদন্ত করানোর নির্দেশ দিয়েছে। সেই সঙ্গে রাজ্য পুলিশের ডিআইজিকে চন্দন সাহার বিরুদ্ধে ‘ডিপিপ্লিনারি অ্যাকশন’ নিতে সাসপেন্ড করতে নির্দেশ দিয়েছেন।” তাঁর আরও বক্তব্য, “আমরা আশা করছি যে, আদালতের এই নির্দেশ মানা হবে এবং আমার মক্কেলসুবিচার পাবেন।”

প্রসঙ্গত, গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে চাপড়া এলকায় পর-পর চুরির ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাঁদের অন্যতম ছিল চাপড়া বাঙ্গালঝি বড় মসজিদ এলাকার বাসিন্দা দবীর হালসানা। ওই কেসের তদন্তকারী অফিসার ছিলেন চন্দন সাহা। অভিযোগ, তিনি দবীর হালসানার বাড়ির লোকের কাছে ঘুষ চাইতে থাকেন। হালসানার পরিবারের দাবি, ওই অফিসার প্রস্তাব দেন যে, তাঁকে এক লক্ষ টাকা দিলে তিনি দবীর হালসানাকে ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেবেন। কিন্তু দবীর হালসানার পরিবার সেই ঘুষের টাকা দিতে চায়নি। অভিযোগ, তখন চন্দন সাহা দবীরর বাড়ির সবাইকে গ্রেফতার করা হবে বলে হুমকি দিতে থাকেন।

শুধু তাই নয়, সার্চ ওয়ারেন্ট ও মহিলা পুলিশ ছাড়াই দবীরের বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর করা ও জমির দলিল জোর করে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগও ওঠে ওই অফিসারের বিরুদ্ধে। বাড়ির মহিলাদের গহনা বন্ধকের কাগজও তিনি নিয়ে যান বলে অভিযোগ। গোটা ঘটনাটি দবীর হালসানার ভাই সাদ্দাম হালসানা জেলার পুলিশ সুপারকে লিখিত ভাবে জানান। তাতে আরও রেগে গিয়ে একটি চুরির মিথ্যা অভিযোগে চন্দন সাহা সাদ্দামের নাম জড়িয়ে তাঁকে গ্রেফতার করেন বলে অভিযোগ।

মানবাধিকার আন্দোলনে জড়িত একাধিক সংগঠন বিষয়টি নিয়ে লাগাতার প্রতিবাদ জানাতে থাকে প্রশাসন ও পুলিশের সর্বস্তরে। শেষ পর্যন্ত ওই অফিসারকে ‘ক্লোজ’ করতে বাধ্য হন জেলা পুলিশের কর্তারা। হালসানা পরিবার এর পর আদালতের যায়। তারা হাইকোর্টে মামলা করে। এ দিনের রায়ের পর দবীর হালসানার স্ত্রী জেসমিনা হালসানা বলেন, “দিনের পর দিন আমাদের উপরে ওই অফিসার যে অত্যাচার করেছেন তা আমরা কোনও দিন ভুলতে পারব না। আমরা চাই উনি ওঁর কৃতকর্মের শাস্তি পান। লড়াই এখনও বাকি। আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব।”

আরও পড়ুন
Advertisement