Mamata Banerjee

Jangipur: জেলা ভেঙে কি পঞ্চায়েত ভোট, জল্পনা অব্যাহত

সেক্ষেত্রে বিডিও এবং এসডিও-দের প্রশাসক রেখে আপাতত পঞ্চায়েতগুলি চালাতে হতে পারে, জেলা বিভাজন পর্যন্ত নির্বাচন স্থগিত রেখে।

Advertisement
বিমান হাজরা
জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২২ ০৮:০৫
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

দিন কয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী মুর্শিদাবাদ জেলা ভেঙে আরও দু’টি নতুন জেলা গঠনের কথা জানিয়েছেন। সেক্ষেত্রে জেলা বিভাজনের জেরে কি মুর্শিদাবাদে পিছিয়ে দেওয়া হতে পারে পঞ্চায়েত ভোট? জেলার রাজনৈতিক মহলে এ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।

মুর্শিদাবাদ জেলা ভেঙে তিনটি প্রশাসনিক জেলা করার প্রাথমিক ঘোষণা হয়েছে। ৬ মাসের মধ্যে নতুন জেলা কাজ শুরু করবে বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই জেলায় পঞ্চায়েত ভোট শেষ করতে হবে ২০২৩ সালের মে মাসের মধ্যে। অর্থাৎ, হাতে সময় মাত্র ৯ মাস। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, জেলা বিভাজন করেই কি তিনটি জেলায় পৃথক ভাবে পঞ্চায়েত ভোট হবে, নাকি একটি জেলা ধরেই পঞ্চায়েত ভোট হবে। নতুন জেলা তৈরির পর পঞ্চায়েতে নানা পুনর্গঠন জরুরি।

Advertisement

রাজনীতির কারবারিদের একাংশের ধারণা, অন্য কয়েকটি জেলায় ভোট হলেও মুর্শিদাবাদ এবং আরও দু’টি জেলায় বিভাজনের জন্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন স্থগিত করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে বিডিও এবং এসডিও-দের প্রশাসক রেখে আপাতত পঞ্চায়েতগুলি চালাতে হতে পারে, জেলা বিভাজন পর্যন্ত নির্বাচন স্থগিত রেখে।

গত ১ অগস্ট মুখ্যমন্ত্রীর ওই ঘোষণায় প্রাথমিক ভাবে জানানো হয়েছিল, কান্দি মহকুমা নিয়ে একটি, জঙ্গিপুর মহকুমা নিয়ে একটি এবং অন্য সব এলাকা নিয়ে আর একটি জেলা গঠিত হবে। মুখ্যমন্ত্রী নবান্ন থেকে জেলা বিভাজনের কথা ঘোষণা করলেও তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এ নিয়ে কোনও সরকারি বিজ্ঞপ্তি এখনও জারি করা হয়নি। কবে সেই বিজ্ঞপ্তি বেরোবে, জেলা তৃণমূল নেতৃ্ত্বও তা নিয়ে অন্ধকারে।

তবে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। সিপিএমের জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা বলেন, “না আঁচালে বিশ্বাস নেই। যত ক্ষণ না জেলা ভাগের নোটিফিকেশন হচ্ছে, তত ক্ষণ বোঝা যাবে না ভোট একটি জেলা ধরে হবে, নাকি তিনটি জেলা ধরে। নাকি জেলা ভাগের অজুহাত দেখিয়ে অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত থাকবে এই জেলার পঞ্চায়েত নির্বাচন! আসলে মুখ্যমন্ত্রী জেলা বিভাজনের ঘোষণাটা করেছেন ‘চোর ধরো, জেলে ভরো’ আন্দোলন থেকে মানুষের নজর ঘোরাতে। এ রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীর কথা বিশ্বাসযোগ্য নয়, যত ক্ষণ না নোটিফিকেশন বেরোচ্ছে।’’ এর সঙ্গেই তাঁর সংযোজন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে কোনও সর্বদলীয় বৈঠক এখনও হয়নি। মানুষের মন ঘোরাতে জেলা ভাগের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। কারও সঙ্গে কোনও মত বিনিময় করা হয়নি। এলাকা চিহ্নিতকরণ করা হয়নি। তাই এটা কোনও পদ্ধতি নয়। প্রশাসনের কাউকে জেলা ভাগের ব্যাপারে কিছুই জানানো হয়নি। জেলা বিভাজনে সংশয় আছে বলেই এ জেলায় পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।” বিজেপি-র উত্তর মুর্শিদাবাদের জেলা সভাপতি ধনঞ্জয় ঘোষ বলেন, “৬ মাসের মধ্যে জেলা বিভাজনের ঘোষণা হয়েছে। এর মধ্যে এলাকা চিহ্নিতকরণ করে তার পরিকাঠামো তৈরি করতে হবে। বিরোধী দলের সঙ্গে কোনও আলোচনা নেই। সরকারি নোটিফিকেশন নেই। পঞ্চায়েত ভোট আগে হবে, না আগে জেলা বিভাজন, কেউ জানে না। বিভাজন পরে হলে জেলা পরিষদ নিয়ে জটিলতা তৈরি হবে। মুর্শিদাবাদে এ বার শাসক দলকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে ভেবেই শেষ পর্যন্ত পঞ্চায়েত ভোট স্থগিত করাও হতে পারে।’’

কংগ্রেসের জেলার সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত দাস অবশ্য বলছেন, “অনুব্রত মন্ড্ল ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে বিব্রত রাজ্য সরকার পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জেলা ভাগ করতে পারবে বলে মনে হয় না। সেক্ষেত্রে একটা জেলা ধরেই নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা। আবার নির্বাচন স্থগিত রাখাও বিচিত্র নয়। কী হবে, তা একমাত্র জানেন দিদিই। তবে যখনই হোক পঞ্চায়েতে ভোট লুঠ ওরা সহজে করতে পারবে না।”

তৃণমূলের জঙ্গিপুর জেলার সভাপতি ও সাংসদ খলিলুর রহমান বলছেন, “জেলা ভাগের সরকারি বিজ্ঞপ্তি কবে বেরোবে, আমরাও জানি না। তাই ৬ মাসের মধ্যে তিনটি প্রশাসনিক জেলা চালু হয়ে যাবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে জেলা বিভাজন আগে নাকি পঞ্চায়েত নির্বাচন আগে হবে, সে ব্যাপারে কোনও ইঙ্গিত আমরা এখনও পাইনি। বিষয়টি রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারভুক্ত। তাই তারাই বলতে পারবে সঠিক চিত্রটা।”

আরও পড়ুন
Advertisement