প্রতীকী ছবি।
কলকাতার ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের জন্য শুক্রবারই জেশপ বিল্ডিংয়ে ভোট-মহড়া শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সামনে ব্যালট বক্স ও পোস্টাল ব্যালট চেকিং হয়েছে। তাতেই মনে করা হচ্ছে, মাস দু’য়েকের মধ্যেই রাজ্যে বকেয়া সাতটি কেন্দ্রে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। এর অন্যতম হল নদিয়ার শান্তিপুর।
বিজেপি-বিধায়কের ইস্তফায় এখানে উপনির্বাচন হবে। দু’মাসের মধ্যে এখানে ভোটের সম্ভাবনাকে মাথায় রেখেই নিজেদের ঘর গুছিয়ে নিতে চাইছে সব রাজনৈতিক দল। এ বারই প্রথম শান্তিপুর আসনে জিতেছে বিজেপি, আবার পরপর দু’টি বিধানসভা ভোটেই শান্তিপুরে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে তৃণমূলকে। উভয়ক্ষই এ বার মরিয়া হয়ে মাঠে নামতে চাইছে।
দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপুর আসনে জয় পেয়ে এসেছে কংগ্রেস। ১৯৯১ সাল থেকে জিতে আসা সেই কংগ্রেস বিধায়ক অজয় দে ২০১৩ সালে দলত্যাগ করে তৃণমূলে যাওয়ার পরে ইস্তফা দেন। তারপরে ২০১৪ সালের উপনির্বাচনে এখানে তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে জেতেন। ওই একবারই শান্তিপুরে বিধায়ক পেয়েছে তৃণমূল। ২০১৬ এবং ২০২১ এর নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়ে হেরে যান অজয়। ২০১৬ সালে শান্তিপুরে জয়ে ফেরে কংগ্রেস।
বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী হিসাবে অরিন্দম ভট্টাচার্য জিতলেও বছর খানেকের মধ্যে তিনি যোগ দেন তৃণমূল এবং এ বারের ভোটের আগে তিনি তৃণমূল ছেড়ে চলে যান বিজেপিতে। এ বারের ভোটের ফলে তৃতীয় স্থানে ছিল কংগ্রেস। জিতে যায় বিজেপি। বছর দু’য়েক আগের লোকসভা ভোট থেকেই এখানে বিজেপির জমি শক্ত হচ্ছিল। তবে বিধানসভা ভোটে শান্তিপুরে জিতলেও লোকসভার তুলনায় তাদের ভোটের হার কমেছে। শান্তিপুর শহরে অল্প ব্যবধানে এগিয়ে ছিল তৃণমূল। বিজেপির জয়ী প্রার্থী জগন্নাথ সরকারের ইস্তফার কারণে ফের ভোট হতে চলেছে শান্তিপুর।গত কয়েক বছরে শান্তিপুরে তৃণমূলের অন্দরেও কোন্দল বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার ভোটের পরেই মারা গিয়েছেন অজয় দে। তার পর শাসক দলের মধ্যে বিভাজন স্পষ্ট হচ্ছে। আবার বিজেপির মধ্যেও কোন্দল আছে। বিধায়ক পদে জিতেও বিজেপির জগন্নাথ সরকারের ইস্তফা মানুষ কতটা ভালভাবে নিয়েছেন, সে প্রশ্নও আছে। মানুষের রায়কে বিজেপি অসম্মান করেছ বলে আগেই দাবি করেছিল তৃণমূল। স্বস্তিতে কোনও তরফই নেই।
জেলা তৃণমূলের অন্যতম কো-অর্ডিনেটর তথা জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি দীপক বসু বলেন, “শান্তিপুরে আমাদের ভোট বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষও বুঝছেন, বিজেপিকে ভোট দিয়ে ভুল করেছেন। এখানে এ বার মানুষ আমাদের সঙ্গেই থাকবেন।”
বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অশোক চক্রবর্তীর কথায়, “শান্তিপুরের মানুষ লোকসভা ভোটের সময় থেকেই প্রমাণ দিচ্ছেন যে, তাঁরা আমাদের সঙ্গে আছেন। এ বারেও আমরাই জিতব। ভোটে হেরেও মুখ্যমন্ত্রী হয়ে মানুষের রায়কে অসম্মান করেছেন আসলে তৃণমূল নেত্রীই।”