Sagardighi By Election

জমজমাট রবিবারের প্রচার সব দলেরই

একই অভিযোগে এ দিন দুপুরে সেখদিঘিতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেসের শতাধিক নেতা-কর্মী।

Advertisement
বিমান হাজরা
সাগরদিঘি শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৬:৩৫
তৃণমূল প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় প্রচারে (বাঁদিকে), পুলিশি হেনস্থার অভিযোগে জাতীয় সড়ক অবরোধ কংগ্রেসের।

তৃণমূল প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় প্রচারে (বাঁদিকে), পুলিশি হেনস্থার অভিযোগে জাতীয় সড়ক অবরোধ কংগ্রেসের। সাগরদিঘিতে। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়

উপনির্বাচনের আর পক্ষকাল বাকি। তার আগে প্রচার জমে উঠেছে সাগরদিঘিতে। একই সঙ্গে, রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে চাপানউতোরও বাড়ছে।

রবিবার ভোটের প্রচারে যাওয়ার পথে মোটরবাইক আরোহী দুই কংগ্রেস সমর্থককে পুলিশ হেনস্থা করেছে বলে অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। দলের দুই কর্মীর উপর ‘পুলিশি নিগ্রহের’ কথা জানিয়ে এবং সাগরদিঘি থানার এক এএসআই সুমন পালের বিরুদ্ধে দেশের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। এমনকি, এ বিষয়ে জেলার নির্বাচনী আধিকারিক তথা জেলাশাসকের বিরুদ্ধেও নিয়ম ভেঙে ‘অনুচিত ভূমিকা পালনের’ অভিযোগ করেছেনতিনি। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘নিগ্রহে’র অভিযোগের কথা জানাতে জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্রকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। যদিও এটা তাঁর কর্তব্যের মধ্যে পড়ে বলে জানিয়ে এ ব্যাপারে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করেছেন অধীর।

Advertisement

একই অভিযোগে এ দিন দুপুরে সেখদিঘিতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেসের শতাধিক নেতা-কর্মী। এর ফলে ওই রাস্তায় ব্যাপক যানজট হয়। বিক্ষোভের জেরে রাস্তার দু’পাশে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে কয়েকশো যান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান সাগরদিঘি থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক (ওসি) অভিজিৎ সরকার। তিনি ঘটনার তদন্ত করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওই পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে প্রায় ৪০ মিনিট পর অবরোধ ওঠে। তবে তৃণমূলের জঙ্গিপুরের চেয়ারম্যান এই ঘটনাকে ‘কংগ্রেসের নাটক’ বলে উল্লেখ করেছেন।

এই আবহে, আজ, সোমবার থেকে বিভিন্ন দলের রাজ্যস্তরের নেতারা প্রচারে আসছেন সাগরদিঘিতে। প্রদেশ সভাপতি আজ প্রচার শুরু করবেন বাড়ালা অঞ্চল থেকে। প্রতিটি অঞ্চলেই পর পর সভা ও মিছিল করবেন তিনি। মঙ্গলবার বোখারায় সভা করবেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। ১৭ ও ২১ ফেব্রুয়ারিও সাগরদিঘিতে আসবেন শুভেন্দু। ১৯ ফেব্রুয়ারি সাগরদিঘির দিঘার মোড়ে সভা তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সব মিলিয়ে বিভিন্ন দলের অন্তত ১৭ জন নেতা-নেত্রীর প্রচারে আসার কথা সাগরদিঘিতে। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরাও পথে টহল দিচ্ছেন।

এ দিন সকাল থেকেই প্রচারে বেরিয়ে পড়েন তৃণমূল, কংগ্রেস ও বিজেপি প্রার্থীরা। বন্যেশ্বর অঞ্চলের গ্রামগুলিতে প্রচারে বেরোন কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাস। বোখারা ১ অঞ্চলে প্রচারে ছিলেন তৃণমূলের দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি প্রচার করেছে সাগরদিঘি বাজার ও বোখারা ২ অঞ্চলে। এদিকে, পুলিশি ‘নিগ্রহে’র অভিযোগ নিয়ে কংগ্রেসের জেলার সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, “বন্যেশ্বরে মিছিলে যোগ দিতে আসছিলেন আথুয়া গ্রামের দুই কর্মী। হাজিপুরের কাছে তাঁদের বাইক থামায় টহলদার পুলিশ। এক আধিকারিক বাইক থেকে দলের পতাকা খুলে ফেলতে বলেন। তাঁরা প্রতিবাদ করতেই সালাম শেখ নামে এক দলীয় কর্মীকে চড় মেরে বাইক থেকে দু’টি পতাকা খুলে ছুড়ে ফেলে পুলিশ।” তারপরই ক্ষুব্ধ কংগ্রেস কর্মীরা জাতীয় সড়ক অবরোধ শুরু করেন। তবে ঘটনা নিয়ে তৃণমূলের চেয়ারম্যান কানাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “কোথাও কোনও বিশৃঙ্খলা হলে পুলিশ তা দেখবে। আমরা চাই নিরপেক্ষ ভোট হোক। কংগ্রেস বুঝে নিয়েছে তাদের হার নিশ্চিত। সেই জন্য ওরা পুলিশের উপর দোষ চাপাচ্ছে। আর জাতীয় সড়কের মতো রাস্তা অবরোধ নাটক ছাড়া কিছু নয়।’’ বন্যেশ্বরে কংগ্রেস প্রার্থীকে ঘিরে উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। বোখারায় তৃণমূলের প্রচারেও ভিড় ছিল। মহিলাদের উপস্থিতি ছিল নজরকাড়া। বিজেপিও ঢোল, কাঁসর নিয়ে সকালে সাগরদিঘিতে, বিকেলে বোখারা ২ অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে প্রচারে করে। এক কথায়, রবিবাসরীয় প্রচারে প্রতিটি দলই পূর্ণউদ্যম নিয়ে ভোটের প্রচার সারল।

আরও পড়ুন
Advertisement