Bharat Jodo Nyay Yatra

রাহুলকে দেখতে ভিড় কি ভোটে পড়বে, প্রশ্ন

শুক্রবার জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘নিম্নচাপের মতো শক্তি বাড়িয়ে সুনামি আছড়ে পড়ল মুর্শিদাবাদে। জনপ্লাবন সুনামিতে পরিণত হল।

Advertisement
সামসুদ্দিন বিশ্বাস
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১০:২৫
রাহুল গান্ধীর ন্যায় যাত্রা কান্দিতে। শুক্রবার।

রাহুল গান্ধীর ন্যায় যাত্রা কান্দিতে। শুক্রবার। ছবি : কৌশিক সাহা।

এক সময় মুর্শিদাবাদ কংগ্রেসের ঘাঁটি ছিল। মুর্শিদাবাদ অধীর গড় বলেও পরিচিত ছিল। কিন্তু ২০১৬ সালের পর থেকে দল ভাঙানো থেকে শুরু করে নানা ভাবে কংগ্রেসকে দুর্বল করতে থাকে শাসক দল তৃণমূল। কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পাশাপাশি বিধায়কেরা তৃণমূলে নাম লেখাতে থাকেন। দল ভাঙিয়ে জেলার পুরসভা থেকে শুরু করে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নিজেদের দখলে নেয় তৃণমূল। যার জেরে মুর্শিদাবাদে একদিকে তৃণমূল যত পুষ্ট হয়েছে, কংগ্রেস ততটাই দুর্বল হয়েছে। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদে কংগ্রেস একটিও আসন পায়নি। লোকসভা নির্বাচন দুয়ারে কড়া নাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা মুর্শিদাবাদে দু’দিন কাটিয়ে গেল। রাহুলের যাত্রা কী মুর্শিদাবাদ কংগ্রেসকে চাঙ্গা করতে পারবে সেই প্রশ্ন উঠছে। তবে জেলা কংগ্রেসের নেতাদের দাবি, লোকসভা ভোটে বিস্তর লাভ হবে তা লোকসমাগম বুঝিয়ে দিয়েছে। তবে বিরোধীরা সে সব একেবারেই মানতে নারাজ।

Advertisement

শুক্রবার জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘নিম্নচাপের মতো শক্তি বাড়িয়ে সুনামি আছড়ে পড়ল মুর্শিদাবাদে। জনপ্লাবন সুনামিতে পরিণত হল। পঞ্চায়েত ভোটের পরে ঝিমিয়ে পড়া কংগ্রেস দলটা অনেকটাই পুনর্জীবিত হল। ধন্যবাদ জানাব মুর্শিদাবাদ জেলাবাসীকে যাঁরা প্রশাসনিক বিভিন্ন বাধাকে চ্যালেঞ্জে করে কংগ্রেসের পাশে দাঁড়িয়ে মুর্শিদাবাদের আতিথেয়তায় ভরিয়ে তুলেছেন রাহুল গান্ধীকে। ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় রাহুল গান্ধী সে কথা ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছেন। আগামী লোকসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ‌ে তৃণমূল দলটা আর দাঁড়াতে পারবে না। রাহুল গান্ধীর ন্যায় যাত্রা সফল হয়েছে।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা বলেন, ‘‘রাহুল গান্ধী অন্যায়ের বিরুদ্ধে ভারত জোড়া ন্যায় যাত্রা বের করেছে। রাজ্য ও কেন্দ্রের অন্যায়ের বিরুদ্ধে এই যাত্রা। ওরা আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তাই সংহতি জানাতে গিয়েছিলাম। ভাল সাড়া পড়েছে এই ন্যায় যাত্রা। আমরাও ইনসাফ যাত্রায় রাজ্য জুড়ে ভাল সাড়া পেয়েছিলাম।’’

বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি অপূর্ব সরকার যদিও বলেন, ‘‘রাহুল গান্ধীর কর্মসূচিকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না। এবঙ্গে ওদের হাল রাজস্থানের মতোই হবে। খুনি সিপিএমকে নিয়ে কংগ্রেস এ রাজ্যে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। তাতে কোনও লাভ হবে না।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের নেতানেত্রীদের দিল্লি সহ বিজেপি শাসিত রাজ্যের পুলিশ গ্রেফতার করেছে হেনস্থা করেছে, নানা ভাবে অত্যাচার করে। তারপরেও আমরা বিজেপির বিরুদ্ধে পথে নেমে লড়াই করি। বিজেপি যেমন অত্যাচার করে, তারা করলে করবে। আমরা পথে নেমে প্রতিবাদ করব। কারও দয়ায় আমরা দলটা করি না।’’ অপূর্ব আরও বলেন, ‘‘ঠাকুর গেলেও লোকজন রাস্তায় ভিড় করে। জেলার ২৬ টি ব্লকের লোকজনকে রাস্তার ধারে এনে দাঁড় করিয়েছিল। তাতে লোক ছিল না। এ ছাড়়া আমরা কোথাও বাধা দিইনি। বরং আদালতের নির্দেশ অমান্য করে পরীক্ষার মধ্যে এই কর্মসূচি করেছেন।’’

তবে বিজেপির বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শাখারভ সরকার বলেন, ‘‘জওহরলাল নেহেরু, ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধীর বংশধরকে লোকজন দেখতে এসেছিলেন। এর সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই।’’

আরও পড়ুন
Advertisement