Ranaghat Murder Case

রানাঘাটে তৃণমূল নেতা এবং তাঁর গাড়িচালক খুনে নয়া মোড়, গ্রেফতার নির্মীয়মাণ বাড়ির মালিক

তদন্তে উঠে এসেছে, জমি কেনাবেচা এবং সুদের কারবারের সূত্রে সুমনের সঙ্গে দীপকের দীর্ঘ দিনের পরিচয়। ফাঁকা এলাকায় দীপকের ওই নির্মীয়মাণ বাড়িতে বেশ কয়েক জন ব্যবসায়ী মিলে নিয়মিত মদের আসর বসাতেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
রানাঘাট শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪ ১৬:৫৭
ধৃত বাড়ির মালিক।

ধৃত বাড়ির মালিক। —নিজস্ব চিত্র।

রানাঘাটে জোড়া দেহ উদ্ধারের ঘটনায় নির্মীয়মাণ বাড়ির মালিককে গ্রেফতার করল পুলিশ। শুক্রবার রাতে দফায় দফায় দীপক স্বর্ণকার নামে ওই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। তাঁর একাধিক জবাবে অসঙ্গতি মেলার পর গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানাল পুলিশ। এখন ধৃত ব্যক্তি খুনের ঘটনায় কী ভাবে যুক্ত, তা জানতে অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করিয়ে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করা হবে। শনিবারই রানাঘাট আদালতে হাজির করানো হচ্ছে দীপককে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার স্থানীয় তৃণমূল নেতা সুমন চক্রবর্তী এবং তাঁর গাড়িচালক রূপম দাসের দেহ উদ্ধার হয়। ওই জোড়া খুনের ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। রানাঘাট থানা এলাকার আনুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মনসাতলায় নির্মীয়মাণ যে বাড়ি থেকে সুমন এবং তাঁর গাড়িচালকের দেহ উদ্ধার হয়, শনিবার সকালে সেই বাড়ির মালিককে পাকড়াও করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, জমি কেনাবেচা এবং সুদের কারবারের সূত্রে সুমনের সঙ্গে দীপকের দীর্ঘ দিনের পরিচয়। ফাঁকা এলাকায় দীপকের ওই নির্মীয়মাণ বাড়িতে বেশ কয়েক জন ব্যবসায়ী মিলে নিয়মিত মদের আসর বসাতেন। জোড়া খুনের ঘটনায় সেখান থেকে কোনও সূত্র থাকতে পারে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ বাড়ি থেকে বার হন সুমন চক্রবর্তী। পুলিশ সূত্রে খবর, তিনি যে মনসাতলার নির্মীয়মাণ বাড়িতে যাবেন, এ বিষয়ে আততায়ীরা নিশ্চিত ছিল। সেই মতোই ছকা হয় পরিকল্পনা। ঘটনাস্থলের সুমন পৌঁছতেই দুষ্কৃতীরা ধারালো অস্ত্রের কোপ এবং ভারী কোনও বস্তু দিয়ে আঘাতে করে। খুনের পর তথ্যপ্রমাণ লোপাটের জন্য মেরে ফেলা হয় তৃণমূল নেতার গাড়ির চালককেও। নিজেদের উপস্থিতি মুছে ফেলতে স্পিরিট ব্যবহার করে দুষ্কৃতীরা। তাই ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের এনেও ঘটনাস্থল থেকে তেমন কিছুই উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। তবে একাধিক ফোনালাপের সূত্র ধরে তাদের সন্দেহের তালিকায় আসে বাড়ির মালিক দীপক।

মৃত ব্যবসায়ীর স্ত্রীর দাবি, খুনের পরেও অত্যাচার করা হয়েছিল তাঁর স্বামীর উপরে। এমনকি, ব্যবসায়ীর গলায় থাকা মোটা সোনার হার, আংটি , টাকার ব্যাগ, দু’টি মোবাইল নিয়ে নেয় আততায়ীরা। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সন্দেহের তালিকায় থাকা কয়েক জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। পুলিশ তদন্ত করে সব সত্যি প্রকাশ্যে আনুক।’’ আর এ নিয়ে রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার এস সানি রাজ বলেন, ‘‘ঘটনার পর থেকেই জেলা পুলিশ অতি তৎপরতার সঙ্গে তদন্ত শুরু করেছে। অভিযোগপত্রে নাম থাকা ব্যক্তি ছাড়াও এই ঘটনায় যুক্ত থাকতে পারে এমন বেশ কয়েক জন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্ত চলছে। আশা করছি, খুব শীঘ্রই এই খুনের কিনারা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement