Price Hike

আনাজের বেলাগাম দরে গৃহস্থের চোখে অন্ধকার 

লম্বা সময় ধরে বাজারে আলু, পেঁয়াজ-সহ যাবতীয় আনাজের দাম বেলাগাম। মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি থেকে টাস্ক ফোর্সের অভিযান, কিছুতেই লাগাম টানা যাচ্ছে না।

Advertisement
দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 
শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:২০

— প্রতীকী চিত্র।

একদা বঙ্গদেশে নববর্ষ শুরু হত অগ্রহায়ণ বা অঘ্রাণ মাসে। ধান, গম, রবিশস্যে উপচে পড়ত খেত। মরসুমি আনাজের চোখ ধাঁধানো বৈচিত্র্য। সে বড় সুখের সময় ছিল। এমন পরিপূর্ণ সময়েই শুরু হত বাংলা বছর। তাই সে কালে এই মাসের নাম ছিল ‘মার্গশীর্ষ’।

Advertisement

সেই নববর্ষের গৌরব হারিয়েছে অনেকদিন। কিন্তু তারপরেও ভোজনরসিক বাঙালির অন্যতম পছন্দের মাস অঘ্রাণ। কেননা বাজার করার এমন সুখ আর কোনও মাসে মেলে না। সদ্য ওঠা ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলো, পালংশাক, বেগুন, টম্যাটো, মটরশুঁটি— শীতকালীন আনাজের বিপুল সম্ভারে বাজার ঝলমল করে। কিন্তু এ বার মাসের মাঝামাঝি হতে চললেও বাজারের সেই চেনা ছবি চোখে পড়ছে না। আনাজের দরে চোখে অন্ধকার দেখছেন ক্রেতারা।

লম্বা সময় ধরে বাজারে আলু, পেঁয়াজ-সহ যাবতীয় আনাজের দাম বেলাগাম। মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি থেকে টাস্ক ফোর্সের অভিযান, কিছুতেই লাগাম টানা যাচ্ছে না। সম্প্রতি পেঁয়াজের দাম সামান্য কমলেও আলু অগ্নিমূল্যই। নদিয়ার বিভিন্ন এলাকায় খুচরো বাজারে মঙ্গলবার পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা কেজি দরে। যদিও নাশিকের পেঁয়াজের দাম ছিল ৭০ টাকা কেজি। এদিন চন্দ্রমুখী আলু ৪৫ টাকা, হেমাঙ্গিনী ৪০ টাকা এবং জ্যোতি বিক্রি হয়েছে ৩৫ টাকা কেজি দরে। ভাল মানের ফুলকপি ২৫-৪৫ টাকা প্রতিটি। বাঁধাকপি ৩৫-৪০ টাকা। পালং শাক, মুলো, লাউ ৩০ টাকা। বেগুন ৬০-৭০ টাকা।

হরেন্দ্র বিশ্বাস নামে এক চাষি বলেন, “এবারের বর্ষায় ভালর চেয়ে আমাদের খারাপ হয়েছে বেশি। এতবৃষ্টি যে জমির মাটিই তৈরি করতে পারিনি। ফলন দূরের কথা। তবে এখন আবহাওয়া খুব ভাল। মাঠে ফসল হচ্ছে। তবে বাজার নরম হতে হতে অঘ্রাণ শেষ হয়ে যাবে।” আনাজের পাইকারি এবং খুচরো বিক্রেতাদের মুখেও সেই একই কথা। তাঁরা জানাচ্ছেন, নভেম্বরে অন্যান্য বার যে পরিমাণ শীতকালীন আনাজ বাজারে আসে, এবার সেই জোগান এখনও নেই। ফলে দাম চড়ে আছে। তবে আশা করা যায়, এ বার ক্রমশ বাজারদর নিম্নমুখী হবে।

নদিয়ার সহ-কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, “এ বার সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে, তা অস্বাভাবিক। ফলে জলদি জাতের শীতকালীন আনাজ চাষ করতে পারেননি চাষিরা। অন্যান্য বার বাজারে এসময় ওই জলদি আনাজই আসে। যখন আবহাওয়া একটু সামাল দিয়েছে তখনই এল ‘দানা’।” তিনি জানান, গোটা চাষের সময় পিছিয়ে গিয়েছে। তার পরিণামেই জোগানে বিলম্ব এবং দামের এই ঊর্দ্ধগতি। তাঁর আশ্বাস, “এখন পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। দিন পনেরোর মধ্যে বাজারদর স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশা করা যায়।”

Advertisement
আরও পড়ুন