রং বদলে গেল পঞ্চায়েত দফতরের। নিজস্ব চিত্র।
শুধু নিজেরাই দল বদলালেন না, ভোল বদলে দিলেন গ্রাম পঞ্চায়েত ভবনেরও।
পঞ্চায়েত ছিল বিজেপির দখলে। পঞ্চায়েত ভবনের রং ছিল গেরুয়া। সদস্যদের দল বদলে পঞ্চায়েতের দখল গিয়েছে তৃণমূলের হাতে। পঞ্চায়েত ভবনের রংও বদলে তা হয়ে গেল নীল সাদা। আর এই রং বদলে খরচ হল প্রায় লক্ষাধিক টাকা।
সুতি ১ ব্লকের আহিরণ গ্রাম পঞ্চায়েত ভবনের এই ভোল বদল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, অর্থহীন এই অপচয় কেন? ১৭ সদস্যের ওই পঞ্চায়েতে বিজেপি ও তৃণমূলের ৮ জন করে সদস্য জয়ী হন। এক তৃণমূল নেতা দলের মনোনয়ন না পেয়ে নির্দলীয় হিসেবে দাঁড়িয়ে জয় লাভ করে পরে বিজেপিতে যোগ দেন। উপপ্রধান হন। বোর্ড গড়ে বিজেপি। তফসিলি মহিলা সংরক্ষিত প্রধান পদে নির্বাচিত হন বুল্টি মাঝি সরকার।
গত দু সপ্তাহে ওই নির্দল সদস্য এবং প্রধান সহ ৬ জন যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। স্বভাবতই প্রধান ও উপপ্রধান পদে পরিবর্তন না হলেও গ্রাম পঞ্চায়েত এখন বিজেপির হাত থেকে তৃণমূলের দখলে। বর্তমানে ওই পঞ্চায়েতে ১৪ জন সদস্য তৃণমূলের এবং বিজেপির ৩ জন।
আর পঞ্চায়েত যে তৃণমূলের দখলে তা বোঝাতেই রাতারাতি গোটা পঞ্চায়েত ভবনটির ভোলই বদলে ফেলা হয়েছে। বিজেপির দখলে থাকা পঞ্চায়েত ভবনের রং ছিল গেরুয়া। সে গেরুয়া মিটিয়ে পঞ্চায়েত এখন নীল সাদা রঙে সেজেছে। আর এতেই খরচ হয়েছে প্রায় লক্ষ টাকার কাছাকাছি।
বিজেপির উত্তর মুর্শিদাবাদের জেলা সভাপতি সুজিত দাস বলছেন, “সদস্যরা রং বদল করেছেন বলে পঞ্চায়েত ভবনেরও রং বদল করতে হবে এর কোনও মানে নেই। রাজ্য সরকার বলছেন তার হাতে টাকা নেই। অর্থাভাব চলছে। তখন শুধু শুধু এভাবে অর্থের অপচয়ের কী দরকার ছিল? বরং এই টাকা কোভিড খাতে মুখ্যমন্ত্রীর তহবিলে দান করলে তা কাজে লাগত।”
পঞ্চায়েত প্রধান বুল্টি মাঝি সরকার বলছেন, “পঞ্চায়েত এখন তৃণমূলের দখলে। পঞ্চায়েত সদস্যরা চেয়েছেন তাই নিজস্ব ফান্ড থেকে ভবনের নতুন রং করা হয়েছে। বাড়িতে প্রতি বছর রং করলে দেওয়াল মজবুত থাকে। সদস্যদের প্রস্তাব মেনেই এবারে নীল সাদা করা হয়েছে।”
সুতি ১ ব্লকের বিডিও এইচ এম রিয়াজুল হক বলছেন, “এটা পঞ্চায়েতের সম্পূর্ণ নিজস্ব ব্যাপার। এ ব্যাপারে তাই আমার কিছু বলার নেই।”
জঙ্গিপুর বিধানসভা এলাকার মধ্যে পড়ে আহিরণ পঞ্চায়েত। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি গৌতম ঘোষ বলেন, “পঞ্চায়েত ভবনের রং বদল না করলেও চলত। এর জন্য বাড়তি খরচ হয়েছে তো বটেই। তবে দলবদলের পর সদস্যদের মধ্যে একটা আবেগ তো থাকেই। সেই আবেগের বশেই গেরুয়া থেকে নীল সাদায় রূপান্তর। আর কিছু নয়।’’