—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
সমীক্ষায় আবাস প্লাসের তালিকা থেকে বাদ গেল প্রায় ২০ শতাংশ নাম।তালিকায় গরমিল নিয়ে প্রথম থেকেই অভিযোগ করে আসছিল বিরোধীরা।সমীক্ষায় বিশাল সংখ্যক নাম বাদ যাওয়ায় তাদের অভিযোগ অমূলক ছিল না বলে দাবি বিরোধীদের।
তবে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, বাদ যাওয়া নামের সকলেই যে ঘর পাওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য তা নয়। নাম বাদ যাওয়ার পিছনে একাধিক কারণ আছে। কারণ যাই থাক, সমীক্ষার কাজ শেষ হওয়ার পর তালিকা হাতে আসতেই সরব বিরোধী দলগুলি।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার দ্বিতীয় পর্যায় অর্থাৎ আবাস প্লাসের তালিকা তৈরির প্রথম সমীক্ষা হয় ২০১৮ সালে। সেই সমীক্ষার শেষে নদিয়ায় তালিকায় ২ লক্ষ ৯৮ হাজার ২৫৬ জনের নাম ওঠে। পরে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল ঘুরে যাওয়ার পরে ফের ওই তালিকার উপরে সমীক্ষা করতে বলা হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশমত, ২০২২ সালে আবারও সেই তালিকার উপর সমীক্ষা হয়। সমীক্ষার শেষে অযোগ্যদের বাদ দিয়ে ১ লক্ষ ৮০ হাজার ৯১৯ জনের তালিকা তৈরি হয়। তারপরই বিপুল সংখ্যক নাম বাদ যাওয়া নিয়ে প্রশাসন ও শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে আবাসের তালিকা তৈরিতে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে সরব হয়।
এরই মধ্যে কেন্দ্র আবাস প্লাসের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, রাজ্য সরকারই আবাস প্লাসের তালিকায় নাম থাকা পরিবারগুলিকে ঘর দেবে। সেইমত ২১ অক্টোবর থেকে ফের নতুন করে সমীক্ষা শুরু হয়। ১৪ নভেম্বর সমীক্ষা শেষ হওয়ার পর যোগ্য ব্যক্তিদের নামের তালিকা বের হয়। দেখা যায় সেই তালিকায় থাকা ১ লক্ষ ৬৭ হাজার ১২৯ জনের অস্তিত্ব আছে। অর্থাৎ আগের তালিকার থাকা ১৩ হাজার ৭৯০ জনের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
এখানেই সরব হয়েছে বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, ২০২২ সালে দ্বিতীয়বার সমীক্ষা করে প্রথম অর্থাৎ ২০১৮ সালের তালিকা থেকে প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার জনের নাম বাদ যায়। এবার আবার সমীক্ষা করে প্রায় ৩৩ হাজার নাম বাদ যাওয়ায় পরিষ্কার যে, তালিকা তৈরি ও সমীক্ষায় কী পরিমাণ অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে।
বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার মিডিয়া আহ্বায়ক সন্দীপ মজুমদার বলেন, “এত বিপুল সংখ্যায় দুর্নীতি হয়েছে বুঝতে পেরেই কেন্দ্র সরকার দ্বিতীয়বার সমীক্ষা করতে বলেছিল। আমরাও বারবার বলে এসেছি যে তৃণমূল তাদের দলের লোকদের ঘর পাওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য হলেও ঘরের টাকা পাইয়ে দিতে চেয়েছে। সেটা এ বার পরিষ্কার হয়ে গেল।”
সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুমিত বিশ্বাস বলেন, “আবারও যদি সমীক্ষা হয়, তাহলে আবারও কয়েক হাজার নাম বাদ যাবে। দেখা যাবে আশ্রয়হীন দরিদ্র মানুষের নাম বাদ দিয়েই তালিকা তৈরি হয়েছে। প্রকৃত যোগ্যরা যে বাদ গেল তার দায় কে নেবে?”
তৃণমূলের কৃ্ষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার মুখপাত্র দেবাশিস রায় বলেন, “তালিকা থেকে অযোগ্যদের নাম কিন্তু রাজ্য সরকারের কর্মীরাই বাদ দিয়েছেন। আর সেটা সম্ভব হয়েছে তৃণমূল সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে বলেই।”