কিরীটেশ্বরী মন্দির। ফাইল চিত্র Goutam Pramanik
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ‘দেশের সেরা পর্যটন গ্রাম’ হিসেবে কিরীটেশ্বরী গ্রামকে চিহ্নিত করা হয়। গ্রামের উন্নয়নের স্বার্থে কয়েকশো কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হবে বলেও জানা যায়। কিন্তু ঘোষণার এক বছর পরেও কেন্দ্রের তরফ থেকে কোনও অনুদান বা, উন্নয়ন গ্রামবাসীদের নজরে আসেনি বলে তাঁদের অভিযোগ। জেলার পৌরাণিক স্থান হিসেবে কিরীটেশ্বরী মন্দির সর্বজন স্বীকৃত। এবং জেলার একমাত্র সতী-পীঠ হিসেবে খ্যাত এখানকার মন্দির।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আজও দেশের সেরা পর্যটন গ্রাম শুধু কেন্দ্রীয় সরকারের খাতা-কলমেই সীমিত রয়ে গিয়েছে। গ্রামের উন্নয়নের ক্ষেত্রে, কোনও ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়িত করার মতো পরিকল্পনা চোখে পড়েনি গ্রামবাসীর। জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, “গত এক বছরে কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে কোনও আর্থিক অনুদান এখনও পর্যন্ত আমার দফতরে এসে পৌঁছয়নি।”
স্থানীয় বাসিন্দা সুজয় দাস বলেন, “দেশের সেরা পর্যটন গ্রাম হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পরে পর্যটক ও ভক্তের সংখ্যা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু উপযুক্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও পরিকাঠামোর অভাবে দীর্ঘ দিন ধরে বহু ভক্ত এবং পর্যটকেরা দেবী দর্শন করে এখান থেকে ফিরে যাচ্ছেন।” ওই গ্রামের বাসিন্দা তথা মন্দির কমিটির সদস্য আমিরুল ইসলাম বলেন, “এক বছর হতে চলল, কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নজরে আসেনি। গ্রাম ও মন্দিরকে কেন্দ্র করে যা কিছু উন্নয়ন হচ্ছে, সবটাই রাজ্য সরকারের উদ্যোগে। সাংসদ তহবিলের ৭২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে খলিলুর রহমান ভক্তদের থাকার জন্য ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। রাজ্যের পর্যটন দফতর থেকে মন্দির সংস্কারের কাজও শুরু হয়েছে। অথচ এ বিষয়ে কেন্দ্র সরকার উদাসীন।”
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, গত দু’দশক ধরে কিরীটেশ্বরী প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি অবহেলায় পড়ে রয়েছে। সেখানে আগে প্রসূতি বিভাগ ছিল। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে সেটি বন্ধ। জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক সন্দীপ সান্যাল বলেন, “হাসপাতালটির ভগ্নদশা ছিল। কয়েক মাসে আগে নতুন করে ভবনটি নির্মাণ করা হয়। সেখানে নিয়মিত চিকিৎসক বসছেন। গ্রামের উন্নয়নের স্বার্থে আরও কিছু পদক্ষেপ করা হবে।” সপরিবার কিরীটেশ্বরী মন্দির দর্শন করতে এসেছিলেন এক ভক্ত মানস মণ্ডল। তাঁর অভিযোগ, “শৌচালয় নির্মাণ করা হলেও সেটি সব সময় তালা বন্ধ থাকে।” কিরীটেশ্বরী মন্দির কমিটির সম্পাদক পঙ্কজ দাস বলেন, “নিয়মিত বেতনভুক্ত স্থায়ী কর্মী নেই। রক্ষণাবেক্ষণ ও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায়, সেটি তালা বন্ধ রাখা হয়। চাবি রাখা থাকে, প্রয়োজনে খুলে দেওয়া হয়।”