Minority Community

সংখ্যালঘুদের বঞ্চনার কথা শুনল কমিশন

ইমামদের প্রতিনিধি হিসাবে আফিদুল আজিজ এ দিন দাবি করেন, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় রাস্তাঘাট ঠিক নেই। স্কুলগুলিতে শিক্ষক-সংখ্যা পড়ুয়ার সংখ্যার অনুপাতে কম।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:২৬
সংখ্যালঘু প্রতিনিধিরা একাধিক সমস্যার কথা তুলে ধরে উষ্মা প্রকাশ করেন।

সংখ্যালঘু প্রতিনিধিরা একাধিক সমস্যার কথা তুলে ধরে উষ্মা প্রকাশ করেন। নিজস্ব চিত্র।

সংখ্যালঘু কমিশনের সামনে বিভিন্ন বঞ্চনার কথা তুললেন ইমামেরা। বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে আসা সংখ্যালঘু প্রতিনিধিরাও একাধিক সমস্যার কথা তুলে ধরে উষ্মা প্রকাশ করেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে যা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা।

মঙ্গলবার কৃষ্ণনগরে জেলা পরিষদের সভাকক্ষে নদিয়া জেলা পুলিশ-প্রশাসনের পাশাপাশি ইমাম ও অন্যান্য ক্ষেত্রের সংখ্যালঘু প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন সংখ্যালঘু কমিশনের প্রতিনিধিরা। উপস্থিত ছিলেন কমিশনের চেয়ারপার্সন মমতাজ সঙ্ঘমিতা। প্রথমে তাঁরা ইমাম ও অন্যান্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে সংখ্যালঘুদের নানা সমস্যার কথা শোনার পর বৈঠক করেন পুলিশ ও প্রশাসেনর কর্তাদের সঙ্গে। সেই বৈঠকে জেলার একাধিক বিধায়কও উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

ইমামদের প্রতিনিধি হিসাবে আফিদুল আজিজ এ দিন দাবি করেন, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় রাস্তাঘাট ঠিক নেই। স্কুলগুলিতে শিক্ষক-সংখ্যা পড়ুয়ার সংখ্যার অনুপাতে কম। ন্যূনতম প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটুকু নেই, থাকলেও সেগুলিতে উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই। উদাহরণ হিসাবে দেবগ্রাম প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কথা তুলে ধরে তিনি দাবি করেন, “দেবগ্রামের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একটা ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ পর্যন্ত পাওয়া যায় না। আমাদের কাছে তার ভিডিয়ো ক্লিপ আছে। সংখ্যালঘু এলাকার মানুষ স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।”

ইমাম ভাতা প্রসঙ্গে আফিদুলের অভিযোগ, “ব্লকে যখন কাগজ জমা দেওয়া হয়, তখন কমিটির চাপে প্রকৃত ইমামের পরিবর্তে সাধারণ মানুষকে ইমাম সাজিয়ে ভাতার জন্য আবেদন করানো হয়। পরবর্তী কালে সেই তালিকা থেকে নাম বাতিলের ক্ষমতা কারও নেই। সেই ক্ষমতা কাউকে দেওয়া হয়নি।” তাঁর ক্ষোভ, অন্যান্যদের ভাতা দুই-তিন গুণ বেড়ে গেলেও ইমামদের ভাতা বাড়েনি। তা অতি সামান্যই রয়ে গিয়েছে। এক জনের ভাতা বন্ধ করে দিলেও নতুন করে ভাতা চালু করা হচ্ছে না। ২০১২ সালে যখন ইমাম ভাতা চালু হয়েছিল তখন প্রায় দু’হাজার ইমাম ভাতা পেতেন। এখন সেটা কমতে কমতে দেড় হাজারের কম হয়ে গিয়েছে।

বৈঠকে অভিয়োগ ওঠে, সংখ্যালঘুদের ওবিসি সার্টিফিকেট থেকে শুরু করে পড়ুয়াদের স্কলারশিপ পাওয়ার ক্ষেত্রে হয়রানির শিকার হতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে কন্যাশ্রী ও বাংলা শিক্ষা পোর্টালের যুক্ত না হওয়ার কারণে হয়রানির কথাও তুলে ধরেন কেউ কেউ। কৃষ্ণনগরের কাছে পানিনালায় সরকারি মাদ্রাসা ভবন সংস্কার ও শিক্ষকের অভাবের কথাও তুলে ধরা হয়। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে একাধিক কবরস্থানে পরিকাঠামোগত সমস্যার কথা বৈঠকে জানানো হয়েছে।

এই সমস্ত অভিযোগ প্রসঙ্গে কমিশনের চেয়ারপার্সন মমতাজ সংঘমিতা বলেন, “প্রতিটি সমস্যার সমাধানের জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করব। দ্রুত সমাধানের জন্য নিজেরাও উদ্যোগী হব।” পরে জেলার পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এই সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন বলেও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন
Advertisement