CITU

CITU: বহু সদস্য কমেছে, তহবিলে টান সিটুর

সিটুর অষ্টম মুর্শিদাবাদ জেলা সম্মেলনে সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে উঠে এল জেলায় সিটু এই সাংগঠনিক দুরবস্থার কথা।

Advertisement
বিমান হাজরা
জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২২ ০৫:০৬

ফাইল চিত্র।

সদস্য সংখ্যা নেমেছে অর্ধেকে। শাসক দল তৃণমূলে ভিড়েছেন বহু সদস্য। ফলে তহবিলে টান পড়ায় সংগঠন চালাতে বেকায়দায় পড়েছে সিটু। সিটুর অষ্টম মুর্শিদাবাদ জেলা সম্মেলনে সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে উঠে এল জেলায় সিটু এই সাংগঠনিক দুরবস্থার কথা। জঙ্গিপুর টাউন ক্লাব হলে বৃহস্পতি ও শুক্রবার সিটুর দু’দিনের অষ্টম জেলা সম্মেলন শেষ হল। এ বারের সম্মলন হয়েছে প্রকাশ্য সমাবেশ ছাড়াই। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিটুর রাজ্য সভাপতি সুভাস মুখোপাধ্যায়। এ বারের সম্মেলনে যোগ দেন প্রায় ৩০০ জন প্রতিনিধি।

সম্মেলনে সম্পাদকীয় রিপোর্ট পেশ করেন সিটুর জেলা সম্পাদক মহম্মদ নিজামুদ্দিন। রিপোর্টের ছত্রে ছত্রে প্রকাশ পেয়েছে সাংগঠনিক দুরবস্থা ও তা কাটিয়ে ওঠার কথা। ২০১৮ সালে জেলায় সিটুর নিয়ন্ত্রণে ছিল ৩২টি ইউনিয়ন। সদস্য সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ৭৬ জন। ২০১৯ সালে ইউনিয়নের সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ২৫-এ, সদস্য সংখ্যা নেমে আসে ৫১০৫৭ জনে। ২০ সালে তা কিছুটা বেড়ে জেলায় সিটুর সদস্য দাঁড়িয়েছে ৬৭,৩০৫ জন।

Advertisement

সাংগঠনিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীপঙ্কর চক্রবর্তী সহ ৬ নেতাকে বহিষ্কার, শাসকের সন্ত্রাসে সন্ত্রস্ত হয়ে ১৮ জন জেলা কমিটির সদস্যের নিষ্ক্রিয়তা, জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর ৫ প্রবীণ সদস্যের সরে যাওয়া এবং ইউনিয়ন ও ব্লক পর্যায়ে অনেক সদস্যের শাসক দলে যোগদান সংগঠনকে দুর্বল করেছে।

এর উপরেও দায়িত্ব প্রাপ্ত বেশিরভাগ ‘কমরেড’ তাঁদের কাজের ধারাবাহিকতা রাখতে পারছেন না। করোনা সংক্রমণ কমে যাওয়ার পরও অনেক সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন না। বলা হয়েছে, জেলা কমিটির সিদ্ধান্ত কার্যকরী করার ক্ষেত্রে অধিকাংশ ব্লক দায়িত্ব পালন করতে পারছে না। রানিনগর, ইসলামপুর, হরিহরপাড়া, রেজিনগর, শক্তিপুর, বড়ঞা, জিয়াগঞ্জ, ভগবানগোলা ২ ব্লকগুলিতে ন্যূনতম সাংগঠনিক কাজও হয় না। ফলে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে ওই ব্লকগুলি।

সংগঠনের প্রধান ভরসা বিড়ি শ্রমিকেরা। কিন্তু বর্ধিত মজুরি পাচ্ছেন না শ্রমিকরা। স্বীকার করা হয়েছে, নির্মাণ, পরিযায়ী, পরিবহণ, প্লাস্টিক শিল্প ক্ষেত্রগুলিতে শ্রমিকদের কাছে সংগঠন পৌঁছতেই পারেনি। সুতি ও রঘুনাথগঞ্জের ৪টি ব্লকে বেশ কয়েক বছর যাবত দুর্বল হয়ে পড়েছে সংগঠন। সংগঠিত শিল্পেও খুব সামান্য শ্রমিক সিটুর সঙ্গে রয়েছে। সংগঠনের দুর্বলতার অন্যতম প্রধান কারণ কর্মীর অভাব। হকার্স সংগঠনেও দুর্বলতার উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে ১৪ টি ব্লকে সদস্য ছিলেন ৮৯৫ জন। ২০২০ সালে তা ৯টি ব্লকে এসে ঠেকেছে ৪৮৬ জনে।

এরিয়া কমিটিগুলিকে এ ব্যাপারে সক্রিয় হতে জোর দেওয়া হয়াছে। রাষ্ট্রীয় পরিবহণ, পুরসভাগুলিতেও সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়েছে। ফলে সংগঠনের আর্থিক তহবিলের অবস্থাও খুব খারাপ। বলা হয়েছে, তহবিল সংগ্রহে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সমস্ত ব্লক তা নিয়ে ভাবছে না। ইউনিয়নগুলি তাদের লেভি ও অন্যান্য অর্থ সঠিক সময়ে দিচ্ছেন না। অর্থ ঠি কমত জেলায় জমা না পড়ার ফলে বাজেটে ঘাটতি হচ্ছে। দেশের প্রচলিত ২৯ টি শ্রম আইনকে বাতিল করে বিজেপি সরকার যে ৪টি শ্রমকোড চালু করতে চলেছে তার সমালোচনা করে সিটুর জেলা সম্মেলন থেকে তার তীব্র বিরোধিতা করার ডাক দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন
Advertisement