—নিজস্ব চিত্র।
কেউ এসেছেন বর্ধমান থেকে। আবার কেউ ৩০০ কিলোমিটার পথ পারি দিয়ে মালদহ থেকে কৃষ্ণনগরে এসেছেন। উদ্দেশ্য একটাই— কৃষ্ণনগরের রাজ পরিবারের রানিমার সঙ্গে সিঁদুর খেলা। রাজ ঐতিহ্যকে ছুঁয়ে দেখার হাতছানিতে নজিরবিহীন জনজোয়ার কৃষ্ণনগর চকের পাড়ার রাজবাড়ি চত্বরে। দুপুর গড়াতেই লম্বা লাইন দর্শনার্থীদের। কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের প্রতিষ্ঠিত রাজরাজেশ্বরীর সঙ্গে সঙ্গে ছোট রানিমাকে সিঁদুর খেলার মধ্যে দিয়ে ছুঁয়ে দেখার সুযোগ হাতছাড়া করতে রাজি নন কেউই। সেই ভিড় সামলাতে হিমশিম খেল রাজ পরিবারের স্বেচ্ছাসেবক থেকে পুলিশ প্রশাসন।
রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় কৃষ্ণনগর রাজ পরিবারে দুর্গাপুজোর প্রচলন করেছিলেন। জনপ্রিয়তাও শীর্ষ ছুঁয়েছিল তাঁর সময়ে। রাজবাড়ির চিরাচরিত নিয়ম মেনে রাজদীঘিতে ভাসানের আগে রাজ পরিবারের প্রতিষ্ঠিত দুর্গা রাজ-রাজেশ্বরীকে বরণ করেন রানিমা। আগত দর্শনার্থীদের সঙ্গে সিঁদুরও খেলেন। সেই রীতি মেনেই কৃষ্ণনগর রাজ পরিবারের রানিমা অমৃতা রায় সকাল থেকেই কাতারে কাতারে দর্শনার্থীদের সঙ্গে সিঁদুর খেললেন। দূরদূরান্ত এমনকি, ভিন্রাজ্য থেকে আসাও দর্শনার্থীরা রানিমার সঙ্গে নিজস্বী তুললেন। কেউ আবার পা ছুঁয়ে প্রণাম করলেন।
মালদা থেকে আসা সুচরিতা দাস বলেন, ‘‘কৃষ্ণচন্দ্র রায়, গোপাল ভাঁড়ের অনেক গল্প পড়েছি। সংবাদপত্রে দেখেছিলাম যে, দশমীর দিন রাজমাতা সাধারণের সঙ্গে সিঁদুর খেলেন। তাই গতকাল রাতেই এখানে এসেছি।’’ কৃষ্ণনগরের রানিমা অমৃতা রায় বলেন, ‘‘বংশীয় ঐতিহ্য ও পরম্পরা মেনে রাজ পরিবারের গৃহবধূ হিসাবে আগত প্রত্যেকের সঙ্গেই সিঁদুর খেলেছি। কৃষ্ণনগর রাজ পরিবারের প্রতিষ্ঠিত মা রাজেশ্বরীর কাছে সবার জন্য প্রার্থনা জানিয়েছি।’’