ফাইল চিত্র।
উৎসবের রেশ মিটতে না মিটতে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা আছড়ে পড়ায় শঙ্কায় কপালে ভাঁজ পড়ো শুরু হয়েছে স্বাস্থ্য কর্তাদের কপালে। কারণ, সদ্য সমাপ্ত শারদোৎসবে লাগাম ছাড়া ভিড়, বেড়ানোর হিড়িক এবং মাস্কে অনীহা। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, অক্টোবরের শেষের দিকে করোনা আবার বাড়তে পারে। তাই আজ সোমবার থেকেই জেলা জুড়ে করোনা পরীক্ষা অনেকটাই বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। মেগা ক্যাম্পের আয়োজন করে প্রচুর মানুষকে টিকা দিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনাও করা হচ্ছে। ”
দিন সাতেকের মধ্যে মানুষ মাস্ক না-পরা এবং দূরত্ববিধি না মানার ফল পেতে শুরু করবে বলে বিশেষজ্ঞেরা ভয় পাচ্ছেন। সেটা যতটা সম্ভব ঠেকিয়ে রাখা যায় প্রতিদিন করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া হবে। এখন প্রতিদিন প্রায় ৫০০ করে আরটিপিসিআর ও ২০০০ র্যাপিড টেস্ট করা হচ্ছে। সোমবার থেকে সেটা বাড়িয়ে আরটিপিসিআর ৯০০টি ও র্যাপিড টেস্ট ৩০০০ করে হবে। সেই সঙ্গে বাড়িয়ে দেওয়া হবে দৈনিক টিকাদানের সংখ্যা।
রবিবার পর্যন্ত জেলার হাতে পর্যাপ্ত টিকা আছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। এ দিন জেলায় কোভিশিল্ড ছিল প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজারের মতো আর কোভ্যাকসিন ছিল ১৬ হাজারের মত। জেলায় প্রায় ১০০টি টিকাদান কেন্দ্র তৈরি রাখা হয়েছে। সেগুলিই আবার চালু করা হবে। জেলার এক কর্তার কথায়, “আমরা মেগা ক্যাম্প করে টিকা দেব। বিশেষ করে যে সব এলাকায় টিকাদান তুলনায় কম হয়েছিল সেই রকম এলাকাগুলি এ ক্ষেত্রে চিহ্নিত করা হয়েছে।”
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুজোর সময় খুবই কম সংখ্যাক মানুষ করোনা পরীক্ষা করতে এসেছেন। ফলে সংক্রমণের প্রকৃত অবস্থা সামনে আসেনি। পুজোর দিনে বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্প করে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা হলেও খুব বেশি মানুষ টিকা নেননি। ফলে এক দিকে যেমন উৎসবের ভিড়ে করোনা ছড়ানোর আশঙ্কা থাকছে তেমনই মানুষ সে ভাবে পরীক্ষা না-করানোয় এবং টিকা নিতে না-আসায় করোনার বিরুদ্ধে লড়াই অনেকটাই ঝিমিয়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন হাসপাতালের আউটডোরে যাঁরা চিকিৎসা করাতে আসবেন উপসর্গ থাক বা না থাক তাদের সকলকেই র্যাপিড টেস্ট করানো হবে। আশাকর্মীদের আরও সক্রিয় হতে বলা হয়েছে। যেহেতু তাঁরা এলাকার প্রতিটি বাড়ির নিয়মিত খোঁজ খবর রাখেন তাই তারা জানতে পারবেন যে, কোনও বাড়িতে কারও জ্বর এসেছে কিনা বা করোনার উপসর্গ দেখা দিয়েছে কিনা।
তেমন কারও সন্ধান পেলেই তাঁরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন এবং নিজেরাই সেই ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে এসে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করবেন। জেলার কর্তারা বলছেন, “আমরা চাই, পরীক্ষা বাড়িয়ে সংক্রমিতদের দ্রুত চিহ্নিত করে ফেলতে। তৃতীয় ঢেউয়ের বিরুদ্ধে লড়াইের ক্ষেত্রে এ ছাড়া বিকল্প কোনও পথ খোলা নেই” রানাঘাট মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক পুষ্পেন্দু ভট্টাচার্যের কথায়,“পুজোর পরে সংক্রমণ বাড়়ার আশঙ্কা করা তাই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আমরা অনেক বেশি সংখ্যক মানুষের করোনা পরীক্ষা করানোর পাশাপাশি মেগা ক্যাম্প করে করে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা।”