Breast Cancer

স্ত্রীর ক্যানসার, প্রতিবন্ধী দুই ছেলেকে ফেলে পলাতক বাবা, নদিয়ায় নাছোড় লড়াই পরিবারের

অভাবকে সঙ্গী করে চলছেন তিন জন। সম্বল বলতে, সরকারের দেওয়া মাথা গোঁজার এক চিলতে ঠাঁই এবং লক্ষ্মীর ভান্ডারের ৫০০ টাকা। এত প্রতিবন্ধকতাকে জয় করেও এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন অর্চনা।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
রানাঘাট শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৩ ১৯:০৬
Image of Archana\\\\\\\'s family in nadia

হাজার প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে সুখে বাঁচার স্বপ্ন অর্চনার মনে। — নিজস্ব চিত্র।

অভাবের সংসার। ক্যানসারে আক্রান্ত মা। দুই ছেলে হাঁটাচলা করতে পারেন না। এই অবস্থায় সংসার ছেড়ে ‘পালালেন’ বাবা। ঘটনাটি নদিয়ার বীরনগর পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর পালিত পাড়া এলাকার।

প্রথম সন্তান, দীপক সরকারের বয়স ২২ এবং দ্বিতীয় ছেলে পঙ্কজ সরকারের ১৭ বছর। দু’জনের কেউই কথা বলতে পারেন না। ঠিকমতো চলাফেরা করতেও সমস্যা। আর পরিবারের প্রধান, মা অর্চনা সরকার আক্রান্ত দুরারোগ্য ক্যানসারে। কঠিন ব্যয়বহুল রোগে আক্রান্ত বাড়ির তিন জনই। এত দিন সংসার টানতেন দীপক, পঙ্কজের বাবা কালু সরকার। ফেরিওয়ালার কাজ করে সংসার টানতেন তিনি। স্ত্রী অর্চনা অন্যের বাড়িতে রান্নার কাজ করে সংসারে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছিলেন। কিন্তু দু’বছর আগে অর্চনার স্তনে ক্যানসার ধরা পড়ার পর রান্নার কাজটি চলে যায়। তখন থেকেই কালু বাড়ি ছেড়েছেন, আর বাড়ি ফেরেননি। কাজ চলে যাওয়ার পর আর সে ভাবে কাজও জোটেনি অর্চনার। এখন অভাবকে নিত্যসঙ্গী করে চলতে হচ্ছে তিন জনকে। সম্বল বলতে, সরকারের দেওয়া মাথা গোঁজার এক চিলতে ঠাঁই এবং লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের ৫০০ টাকা। তবু এত প্রতিবন্ধকতাকে জয় করেও এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন অর্চনা।

Advertisement

এক দিকে অর্চনার ক্যানসারের ব্যয়বহুল চিকিৎসা, অন্য দিকে দুই ছেলের ওষুধ ও খাওয়াদাওয়া— সব সামাল দিতে কঠিন সংগ্রামের মুখে দাঁড়িয়ে পুরো পরিবার। দুই ভাই কথা না বলতে পারলেও ছবি আঁকতে পারেন। ছবির মাধ্যমেই মনের কথা প্রকাশ করেন দুই ভাই। কথায় প্রকাশ করতে না পারলেও ইশারায় তাঁরা বুঝিয়ে দেন, মায়ের লড়াইয়ে তাঁর পাশেই আছেন দুই ছেলে। মা অর্চনা বললেন, ‘‘এত দিন সুস্থ ছিলাম। নতুন করে আবার অসুস্থতা বেড়েছে। আমি অসুস্থ বলে স্বামী পালিয়ে গিয়েছেন। যত দিন বেঁচে আছি লড়াই চালিয়ে যাব।’’

আরও পড়ুন
Advertisement