—প্রতীকী চিত্র।
স্থানীয় এক মহিলার সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে স্বামীর। সেই কথা স্ত্রী জানতে পারায় শুরু হয়েছিল অশান্তি। সেখান থেকে ঘটল নৃশংস ঘটনা। অভিযোগ, নিজের বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের কথা ধামাচাপা দিতে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর পেটে চাকু মেরে তাঁকে ক্ষতবিক্ষত করেছেন স্বামী। অভিযুক্তকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নদিয়ার গাংনাপুর থানার অনন্তপুর এলাকার ওই ঘটনায় শোরগোল এলাকায়। দেহ উদ্ধার করে পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর দুয়েক আগে নদিয়া থানার মাঝেরগ্রাম এলাকার বাসিন্দা রিয়া বিশ্বাসের বিয়ে হয় গাংনাপুরের রিপন বিশ্বাসের। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, বিয়ের পর তাঁদের দাম্পত্য কলহ ছিল কি না, তা কেউই জানতেন না। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক ভালই বলে জানতেন তাঁরা। কিন্তু শনিবার স্ত্রীকে ছুরি দিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে রিপনের বিরুদ্ধে। পরিবারের লোকজন জানাচ্ছেন, ভোরের দিকে রিয়ার চিৎকারে তাঁদের ঘুম ভাঙে। রিপন এবং রিয়া যে ঘরে থাকতেন, তার দরজা খুলে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন বাড়ির অন্য সদস্যেরা। কিন্তু দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। তাই জানলা ভেঙে ঘরের ভিতরে ঢোকেন তাঁরা। এর পর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন রিয়াকে।
সঙ্গে সঙ্গে রিয়াকে উদ্ধার করে রানাঘাট মহাকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পরে গাংনাপুর থানার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন রিয়ার স্বামী। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রাথমিক যে তথ্য পেয়েছে পুলিশ, সেখান থেকে অনুমান করা হচ্ছে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই এই খুন। তবে ময়নাতদন্তের পর বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে বলে জানাচ্ছেন তদন্তকারীরা।
মৃতার বাবার কথায়, “বিকেলেও (শুক্রবার) মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। ফোন করে আমায় জিজ্ঞাসা করল, ‘বাবা তুমি কী করছ?’ আমি বললাম, ‘দোকানে আছি মা।’ তখন ও আমায় বলল, ‘আমরা আনন্দে আছি।’ এক রাতের মধ্যে কী থেকে কী হল জানি না। আজ (শনিবার) সকালে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির পাশের একটি বাড়ি থেকে আমায় ফোন করে জানানো হয় যে ওকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সকাল হলে ওর (রিয়ার) শ্বশুর ফোন করে আমাদের। হাসপাতালে গিয়ে দেখি আমার মেয়ে আর বেঁচে নেই!’’ পুলিশি তদন্তের দাবি করে জামাইয়ের শাস্তির দাবি জানান কন্যাহারা বাবা।
অন্য দিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রিয়ার শ্বশুরবাড়ির এক সদস্য বলেন, ‘‘রিপনের সঙ্গে বেশ কিছু দিন ধরে স্থানীয় এক মহিলার সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। ওর স্ত্রী সেটা হাতেনাতে ধরতে পারে। প্রমাণ সমেত স্বামীকে ধরে ফেলায় অশান্তি বাড়ে দু’জনের মধ্যে। মনে হচ্ছে, তার জেরেই ওই খুন।’’