জাকিরের সভা। নিজস্ব চিত্র।
নিমতিতায় তাঁর উপর বোমা হামলার বিচার চেয়ে বুধবার সুতির অরঙ্গাবাদে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিধায়ক জাকির হোসেন। এক বছর পূর্তি হল এই বিস্ফোরণ কাণ্ডের। এনআইএ এই বিস্ফোরণ কাণ্ডের তদন্ত করছে। প্রথম দফায় দু’জনের বিরুদ্ধে চার্জশিটও দিয়েছে তাঁরা।
জাকিরের দাবি, ‘‘এই চার্জশিট লোক দেখানো। এই কাণ্ডে জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের এখনও গ্রেফতার করা হয়নি। কাউকে বাঁচাতে চাইছে কেন্দ্রীয় সংস্থা।’’ হামলার পিছনে সন্দেহের কথা তিনি বার বার জানিয়েছেন তদন্তকারী অফিসারদের।
২০২১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি রাত পৌনে ১০টা নাগাদ যখন জাকির কলকাতায় দলীয় বৈঠকে যাওয়ার জন্য ট্রেন ধরতে যান, তখন নিমতিতা রেল স্টেশনের ২ ও ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝে অন্ধকারে পড়ে থাকা একটি ব্যাগে রাখা বোমার বিস্ফোরণে আহত হন জাকির সহ বহু দলীয় সমর্থক। প্রথমে রাজ্য সরকার সিট গঠন করে সিআইডিকে এই ঘটনার তদন্ত ভার দেয়। তদন্ত চলাকালীন দু’সপ্তাহের মধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে সেই বিস্ফোরণের তদন্ত ভার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএকে দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে রাজ্যের সিআইডির তদন্তের বাইরে এক পা’ও এগোতে পারেনি এনআইএ। সিআইডি এই বিস্ফোরণ কাণ্ডে সুতিরই দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। এনআইএ তাদের বিরুদ্ধেই প্রথম চার্জশিট দিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে আদালতকে।
এই তদন্তে বিন্দু মাত্র আস্থা নেই বলে বার বার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাকির। নিমতিতা রেল স্টেশনে বিক্ষোভও দেখানো হয়েছে। এদিনই এক বছর পূরণ হচ্ছে এই বোমা হামলার। তাই এলাকা জুড়ে এ ধরনের বিশাল জমায়েতের ডাক দিয়ে জাকিরের বিক্ষোভ বিশেষ মাত্রা যোগ করেছে।
শুধু জাকির নন, সুতির সাধারণ মানুষও মনে করেন, বোমা বিস্ফোরণের পিছনে বড় মাথারা জড়িত রয়েছে। কিন্তু তদন্তকারী সংস্থা তাদের খুঁজে বের করতে সে ভাবে তৎপরতা দেখায়নি। বৃহস্পতিবার সুতিতে জাকিরের এই বিক্ষোভ মিছিলে ডাকা হয়নি সুতির তৃণমূল বিধায়ক ইমানি বিশ্বাসকে। এই বিস্ফোরণ কাণ্ডে একাধিকবার এনআইএ’র জেরার মুখে পড়তে হয়েছে ইমানিকে।
অরঙ্গাবাদে নিজের বাড়িতে বসে জাকির এ দিন বলেন, “আমাকে প্রাণে মারার জন্য যে এই বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল, এনআইএ তা স্বীকার করেছে। এর পিছনে বড় সড় চক্রের হাত রয়েছে সেটাও মেনে নিয়েছে এনআইএ। কিন্তু কারা সেই চক্রের হোতা তাদের ধরার কোনও চেষ্টা হয়নি এ পর্যন্ত। কয়েক সেকেন্ডের জন্য সেদিন আমি প্রাণে বাঁচলেও আজও হামলার সে ক্ষত বয়ে বেরাচ্ছি। যারা আমার সঙ্গে সেদিন আমাকে ঘিরে রেখেছিল তাদের মধ্যে ২৭ জন সেই বোমা হামলায় আহত হন। তাদের পরিবার চরম সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে। শুধু আমি বা আমার পরিবারই নয়, অরঙ্গাবাদের মানুষ এই ঘটনার ন্যায় বিচার ও দোষীদের গ্রেফতার চান।”