নদিয়ায় একটি মুদির দোকানে ইডির আধিকারিকেরা। —নিজস্ব চিত্র।
এ বার মুদির দোকানেও হানা দিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। বুধবার নদিয়ার কৃষ্ণনগর পুরসভার মল্লিক পাড়ার একটি মুদির দোকানের মালিকের বাড়ি যান ইডির আধিকারিকেরা। তার পরে তাঁর দোকানেও যান তাঁরা। সূত্রের খবর, রেশনে ‘দুর্নীতি’র অভিযোগ নিয়ে ওই মুদি দোকানের মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা।
যে দোকানে ইডি হানা দিয়েছে, স্থানীয় সূত্রে খবর সেই দোকানের মালিক জনৈক প্রদীপ দে। তাঁর কাছে রেশনে ‘দুর্নীতি’ সম্পর্কিত তথ্য নিতে গিয়েছেন তদন্তকারীরা বলে ইডির একটি সূত্রে খবর। শুধু কৃষ্ণনগরই নয়, নদিয়ার হরিণঘাটার নিমতলা বাজার এলাকায় একটি কারখানাতেও তল্লাশি চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। কৃষ্ণনগরের চালকলেও চলছে হানা। এ ছাড়াও, শান্তিপুরের বাবলা কন্দখোলা বাইপাসের ধরে ‘ইএসএসজিই রাইস মিল’ এবং ‘জিকে এগ্রো ফুড প্রোডাক্টস’ নামের দুটি কারখানায় হানা দিয়েছে ইডি। ওই দুটি কারখানার মালিক সুব্রত ঘোষ নামে এক ব্যক্তি বলে স্থানীয় সূত্রে খবর।
উল্লেখ্য, পুর-নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সোমবারও রাজ্যের নানা জায়গায় হানা দিয়েছে ইডি। ওই একই দিনে রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডির আধিকারিকেরা। তৃণমূল দাবি করে রাজ্যের বকেয়ার দাবিতে তাদের দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কর্মসূচি’র পাল্টা হিসাবে ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করছে বিজেপি। তাই জায়গায় জায়গায় কেন্দ্রীয় সংস্থাকে অভিযানে পাঠানো হচ্ছে। তৃণমূলের লোকজনকে হেনস্থা করাই উদ্দেশ্য। যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি।
অন্য দিকে, বুধবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিষেক-পত্নী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইডি দফতরে পাঠানো হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের মধ্যেই রাজ্যের নানা জায়গায় ইডি তল্লাশির খবর মিলছে। শুধু নদিয়া জেলাতেই বুধবার সকালে একযোগে পাঁচ জায়গায় হানা দিয়েছে তাদের পাঁচটি দল। শান্তিপুর, ধুবুলিয়া, রানাঘাট, কৃষ্ণনগরে এই মুহূর্তে তল্লাশি চলছে। কেন আচমকা চালকলে হানা? ইডির একটি সূত্র বলছে, পুর-নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে ধৃত একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হওয়া নথি থেকে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, দুর্নীতির টাকার একটা অংশ ওই চালকলে বিনিয়োগ করা হয়েছে। এই কারণে শান্তিপুরের ওই চালকলে পৌঁছে গিয়েছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি, রেশনের জিনিসপত্র খোলা বাজারে বিক্রির অভিযোগে ভিন্ন একটি মামলায় বিভিন্ন কারখানাতে হানা দিয়েছে ইডি।