—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
গ্রামীণ আবাস প্রকল্পে স্বচ্ছতা আনতে এ বারে উপভোক্তাদের নির্দিষ্ট নম্বর (ইউনিক ডকুমেন্ট আইডেন্টিফিকেশন নম্বর) তৈরি করবে প্রশাসন। সে জন্য আধার ভিত্তিক তথ্য যাচাই করা হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপভোক্তাদের মোবাইল নম্বরে ওটিপি পাঠানো হবে। পরে আধার কার্ডে যে মোবাইল নম্বর যুক্ত রয়েছে তাতে সেই ওটিপি দিয়ে উপভোক্তাদের তথ্য যাচাই করা হবে। যাঁদের আধার যুক্ত মোবাইল নম্বর নেই তাঁদের বায়োমেট্রিকের মাধ্যমে আধার যাচাই করা হবে।
আজ সোমবার থেকে জেলায় এই কাজ শুরু হবে। আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে জেলা সর্বত্র এভাবে আধার কার্ডের মাধ্যমে উপভোক্তাদের তথ্য যাচাইয়ের কাজ হবে।
ব্লক ভিত্তিক শিবির করে উপভোক্তাদের ডেকে আধার ভিত্তিক তথ্য যাচাই করা হবে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, প্রকৃত উপভোক্তা যাতে আবাসের টাকা পান সে কারণে আধার ভিত্তিক তথ্য যাচাই করা হবে। সূত্রের খবর, ট্যাবের অনেক প্রকৃত উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে টাকা নিয়ে গিয়ে অন্য অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে। সম্প্রতি ট্যাবের টাকা পাঠানো নিয়ে রাজ্য জুড়ে এমন চিত্র সামনে এসেছে। ট্যাবের মতো যাতে পরিস্থিতি তৈরি না হয় এবং প্রকৃত প্রাপক যাতে আবাসের টাকা পান সে জন্য এমন আধার ভিত্তিক তথ্য যাচাই করা হবে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওটিপি পাঠানোর তা যাচাইকরণ করলে একটি নির্দিষ্ট নম্বর যেমন তৈরি হবে, তেমনই উপভোক্তাদের একটি ঘোষণাপত্র আসবে। সেই স্ব-ঘোষণাপত্রে লেখা রয়েছে উপভোক্তার মাসিক আয় ১৫ হাজার টাকার বেশি নয় একটি পাকা বাড়ির জন্য বিডিও-র কাছে আবেদন করছেন। যোগ্য উপভোক্তা হলে সরকারের কাছে থেকে পাওয়া টাকা বাড়ি তৈরির কাজে লাগাবেন এবং ভুল তথ্য দিলে সরকারকে টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে।
আবাসন অনুদানের জন্য ঘুষ চাওয়া এবং দেওয়া অপরাধ। এমন ঘটনা ঘটলে স্থানীয় থানায় জানাবেন বলে উপভোক্তা স্ব-ঘোষণা দেবেন। মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলা শাসক (জেলা পরিষদ) মহম্মদ সামসুর রহমান বলেন, ‘‘এ বারে আবাসের উপভোক্তাদের আধার ভিত্তিক যাচাইকরণ হবে। এ জন্য উপভোক্তাদের বিভিন্ন শিবিরের ডেকে তাদের মোবাইল নম্বরে ওটিপি পাঠিয়ে তা আধারযুক্ত মোবাইল নম্বরে যাচাই করা হবে। যাদের আধারযুক্ত মোবাইল নম্বর নেই, তাঁদের বায়োমেট্রিকের মাধ্যমে আধার ভিত্তিক যাচাইকরণ করা হবে।’’
মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, ২০২২ সালে বাংলা আবাসের জন্য একটি সমীক্ষা হয়েছিল। সমীক্ষা শেষে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবাসের উপভোক্তাদের তালিকা পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সে সময় কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের জন্য টাকা বরাদ্দ করেনি। যা নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের চাপানউতোর তৈরি হয়েছিল। সে সময় বাড়ি পাওয়ার স্থায়ী অপেক্ষামাণ তালিকায় অনেকেই ছিলেন। সব মিলিয়ে মুর্শিদাবাদের ২ লক্ষ ৯৪ হাজার ৭৮৬ জন মানুষের নাম বাড়ি প্রাপকের তালিকায় ছিল। গত অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে জেলায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত জেলার ২ লক্ষ ৭০ হাজার ৯৯৫ জন উপভোক্তার বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। তাতে প্রায় ৭০.১০ শতাংশ যোগ্য বলে উঠে এসেছে।