Illegal

Illegal: মৃত্যুর শংসাপত্র ছাড়াই শবদাহ হচ্ছে প্রায়ই, উদ্বিগ্ন গ্রামবাসীরা

যদিও স্থানীয় থানার আধিকারিকেরা বলছেন, ‘‘কাউকে না জানিয়ে মৃতদেহ সৎকারের মতো ঘটনা বা ওই ধরনের কোনও অভিযোগ আগে আসেনি।’’

Advertisement
মফিদুল ইসলাম
হরিহরপাড়া শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২২ ০৭:১০

প্রতীকী ছবি।

জেলার বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে একাধিক শ্মশান। অভিযোগ, মৃতদেহ সৎকার করতে সেখানে লাগে না হাসপাতাল বা চিকিৎসকের দেওয়া মৃত্যুর শংসাপত্র, প্রয়োজন পড়ে না পঞ্চায়েত প্রধানের দেওয়া শংসাপত্রেরও। ফলে অভিযোগ, নিয়ম না মেনেই মৃতদেহ পোড়ানো হয় ওই ধরনের অধিকাংশ শ্মশানে।

হরিহরপাড়ার চোঁয়া এলাকায় থানা থেকে কয়েকশো মিটার দূরেই রয়েছে একটা শ্মশান। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে শ্মশানটি বহু পুরনো। জমিদারদের আমল থেকেই সেখানে মৃতদেহ সৎকার করা হয়। আগেই পূর্ত দফতরের উদ্যোগে ওই এলাকায় তৈরি হয়েছে স্থায়ী পাকা চুল্লি, মৃতদেহ রাখার জন্য পাকা বাড়ি। তবে সেখানে দেখভালের জন্য নেই কোনও লোক। ফলে স্থানীয় বাসিন্দারাই উদ্যোগ নিয়ে গড়েছেন একটি ‘শ্মশান কমিটি’। ওই কমিটির সদস্যরা বলছেন, শ্মশানে এলাকার আদিবাসী সম্প্রদায় ও দুঃস্থ পরিবারের লোকেরাই মৃতদেহ সৎকারের জন্য নিয়ে আসেন। কমিটির সম্পাদক শিব শঙ্কর ঘটক বলেন, ‘‘যেহেতু মৃতদেহগুলি গ্রাম ও আশেপাশের দু’একটা গ্রাম থেকে আসে, তাই ডাক্তারের বা পঞ্চায়েতের সার্টিফিকেট দেখা হয় না। আর দেখার লোকজনও নেই। কোনও আদিবাসী, দুঃস্থদের মৃতদেহ আসলে আমাদের সহযোগিতা করে টাকা পয়সা জোগাড় করে কাঠ, খড়ি কিনে দিতে হয়।’’

Advertisement

তবে গত জানুয়ারি মাসে হরিহরপাড়া এলাকায় কাজ করতে এসে পড়শি জেলা মালদহের এক আদিবাসী মহিলার মৃত্যু হয়। সেক্ষেত্রে পুলিশকে জানানোর পাশাপাশি, হাসপাতালের মৃত্যুর সার্টিফিকেট দেওয়ার পর তা দাহ করা হয় বলেও জানান তিনি। কতগুলো মৃতদেহ ওই শ্মশানে দাহ হয়, তার কোনও নথি বা হিসেব আগে থাকত না কারও কাছে। তবে গত জানুয়ারি মাস থেকে মৃতদের নাম ঠিকানা লিখে রাখা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে কমিটির তরফে। শ্মশান কমিটির এক সদস্য রনজয় ভদ্র বলেন, ‘‘বিষয়টি দেখার জন্য প্রশাসন বা পঞ্চায়েতের তরফে লোক রাখা প্রয়োজন। তা হলে আর কোনও সমস্যা থাকবে না।’’

স্থানীয় চোঁয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মুর্শিদা খাতুন বলেন, ‘‘এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের কেউ স্বাভাবিক ভাবে মারা গেলে মৃতদেহ সৎকারে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্য পঞ্চায়েতের তরফে একটি নির্দিষ্ট সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। তবে এলাকার শ্মশানে দাহ করার ক্ষেত্রে কেউ ওই ধরনের সার্টিফিকেট নেন না। তবে বিষয়টি নজরে আসতে কয়েক মাস আগে শ্মশানের কমিটিকে বলা হয়েছে মৃতদের নাম ঠিকানা সহ অন্যান্য তথ্য নিয়ে রাখতে।’’

তবে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলছেন, ‘‘নির্জন এলাকায় শ্মশান। কেউ নদিয়ার মতো শ্মশান কমিটির লোকজনকে কোনও কিছুই না জানিয়ে মৃতদেহ সৎকার করতেই পারেন। কিন্তু সে ক্ষেত্রে দায় কে নেবে?’’

যদিও স্থানীয় থানার আধিকারিকেরা বলছেন, ‘‘কাউকে না জানিয়ে মৃতদেহ সৎকারের মতো ঘটনা বা ওই ধরনের কোনও অভিযোগ আগে আসেনি।’’এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, অনেক সময় রাতে শবদাহ হয়। সে সব ক্ষেত্রে কেউ অন্যায় সুযোগ নিতেও পারে। সেটা দেখা দরকার।

হরিহরপাড়ার বিধায়ক নিয়ামত সেখ বলেন, ‘‘পুলিশ, প্রশাসন ও স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতকে বলেছি ওই ধরনের শ্মশানের উপর নজর রাখতে, যাতে কখনও কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি না হয়।’’

আরও পড়ুন
Advertisement