দুই কেন্দ্রে বিপাকে তৃণমূল
CPM

হারানো জমি ফেরাতে মাঠে সক্রিয় বামেরা

তৃণমূল ছেড়ে বাম শিবিরে যোগ দেওয়ার কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে তেহট্ট-পলাশিপাড়া জুড়ে। পলাশিপাড়ার গোপীনাথপুরে বিভিন্ন বুথ থেকে কয়েকশো তৃণমূল কর্মী-সমর্থক দলবদল করেছেন।

Advertisement
সাগর হালদার  
তেহট্ট শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২৩ ০৭:৪০
An image of CPM flag

জমি ফিরে পেতে মরিয়া চেষ্টা শুরু করেছে সিপিএম। ফাইল ছবি।

পাশাপাশি দুই বিধানসভা কেন্দ্র পলাশিপাড়া ও তেহট্টের দুই তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ। এক জন ইতিমধ্যেই বিচারবিভাগীয় হেফাজতে, অন্য জনের ক্ষেত্রে তদন্ত করছে সিবিআই। এই পরিস্থিতিতে হৃতজমি ফিরে পেতে মরিয়া চেষ্টা শুরু করেছে সিপিএম। তাতে প্রাথমিক ভাবে কিছুটা সাড়াও মিলছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর।

পলাশিপাড়ার বিধায়ক, রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য বর্তমানে সপরিবার জেল হেফাজতে রয়েছেন। তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহার বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে সিবিআই, তাঁকে কলকাতার নিজ়াম ভবনে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। ফলে তৃণমূল কর্মীদের একাংশ নেতৃত্বের প্রতি আস্থা হারাতে শুরু করেছেন বলে সিপিএমের দাবি।

Advertisement

ইতিমধ্যেই তৃণমূল ছেড়ে বাম শিবিরে যোগ দেওয়ার কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে তেহট্ট-পলাশিপাড়া জুড়ে। পলাশিপাড়ার গোপীনাথপুরে বিভিন্ন বুথ থেকে কয়েকশো তৃণমূল কর্মী-সমর্থক দলবদল করেছেন। তেহট্টের আশরাফপুরে শ্যামনগরের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য-সহ প্রায় তিনশো পরিবার সম্প্রতি সিপিএমে যোগ দেয়। কিছু দিন ধরে সমবায় সমিতির নির্বাচনগুলিতেও তৃণমূল-বিজেপিকে ধরাশায়ী করছে সিপিএম। সম্প্রতি চাঁদেরঘাট সমবায় সমিতির নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতে তারা। তেহট্ট চাতরপাড়া সমবায় সমিতি ও সম্প্রতি ধোপট্ট কুষ্টিয়া সমবায় সমিতি নির্বাচনেও বামেরা জয়ী হয়।

সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য বর্তমানে প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়া চলছে। রোজ করা হচ্ছে গৃহসভা, কর্মিসভাও চলছে বিভিন্ন জায়গায়। মিছিল হচ্ছে। বুথে-বুথে কর্মী-সমর্থকেরা সাধারণ মানুষদের নিয়ে সান্ধ্য বৈঠক সারছেন। সংগঠন মজবুত করতে তরুণ যুবকদের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। নদিয়া জেলা এসএফআইয়ের সহ-সম্পাদক সমীর সরকার বলেন, “এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনে ছাত্র-যুবদের প্রার্থী করারও পরিকল্পনা হয়েছে। আমাদের সভা ও সান্ধ্য বৈঠকে আগের তুলনায় ভাল সাড়া মিলছে।”

২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় এলেও তেহট্ট-পলাশিপাড়ায় তখনও ভিত শক্ত ছিল সিপিএমের। ২০১৬-তে এই দুই জায়গায় পরিবর্তন আসে। হারানো জমি পুনরুদ্ধারে সিপিএম এখন কার্যত মরিয়া। দলের তেহট্ট দক্ষিণ এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুবোধ বিশ্বাসের দাবি, “জনগণ দুর্নীতি সমর্থন করবে না। সিপিএম ফিরছে।” দলের পলাশিপাড়া এরিয়া কমিটির সম্পাদক সলিল করের দাবি, “আগের তুলনায় এখন আমাদের যে কোনও মিটিং-মিছিলে প্রচুর কর্মী-সমর্থকদের দেখা যাচ্ছে।”

তবে তেহট্ট ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস বিশ্বাসের দাবি, “বিধায়কের অনুপস্থিতি নির্বাচনে তেমন প্রভাব ফেলবে না।” নদিয়া জেলা উত্তর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি কল্লোল খাঁ-ও দাবি করছেন, “উন্নয়নের জোয়ারে সব এলাকাতেই তৃণমূলের জয় নিশ্চিত।” আবার, নদিয়া জেলা উত্তর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি অর্জুন বিশ্বাসের দাবি, “সিপিএমের অত্যাচার আর তৃণমূলের দুর্নীতি মানুষ ভুলবে না। বিজেপিকেই তারা বেছে নেবে।”

আরও পড়ুন
Advertisement