COVID19

মায়েদের টিকা দিতে সমীক্ষা, পাবেন প্রসূতিও

স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, কোনও শিশু বা বালক-বলিকা সংক্রমিত হলে  মায়েদেরই সব সময়ে তাদের সঙ্গে থাকতে হবে।

Advertisement
সুস্মিত হালদার
শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২১ ০৬:২২

করোনা মোকাবিলায় শিশু ও বালক-বালিকাদের মায়েদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সেই মর্মে রাজ্য থেকে জেলাগুলির কাছে নির্দেশিকাও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশিপাশি প্রসূতিদেরও দ্রুত টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই এঁদের টিকাকরণ শুরু হবে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে।

করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে শিশু ও বালক-বালিকাদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা বেশি বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা। শি‌শুদের চিকিৎসার জন্য জেলার একাধিক হাসপাতালে বিশেষ পরিকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে। সেই সঙ্গেই সদ্যোজাত থেকে ১২ বছর বয়সিদের মায়েদেরও দ্রুত টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলার স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ৫ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের তালিকা এমনিতেই তাদের কাছে আছে। কারণ এই বয়সের শিশুদের অন্য টিকা দেওয়া হয় ও পোলিও খাওয়ানো হয়। ফলে তাদের মায়েদের চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি করা সহজ। ৬ থেকে ১২ বছর বয়সিদের মায়েদের তালিকা তৈরি করার জন্য ব্লক স্তরে আশাকর্মী ও পুরসভার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি-বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা করে তালিকা তৈরি করছেন। তা তৈরি হয়ে গেলেই নিকটবর্তী টিকাদান কেন্দ্র থেকে ওই মায়েদের টিকা দেওয়া হবে। তাঁদের টিকা নেওয়ার সময়ে আধার কার্ডের পাশাপাশি সন্তানের জন্মের শংসাপত্র সঙ্গে আনতে বলা হবে বলে জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়েছেন।

Advertisement

কেন শুধু মায়েদেরই টিকা দেওয়ার এই উদ্যোগ?

স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, কোনও শিশু বা বালক-বলিকা সংক্রমিত হলে মায়েদেরই সব সময়ে তাদের সঙ্গে থাকতে হবে। উপসর্গহীন বা স্বল্প উপসর্গযুক্ত শিশুরা বাড়িতে থাকলে সাধারণত মায়েরাই তাদের সুশ্রূষা করবেন। তা ছাড়া, নয় মাস থেকে ১২ বছর পর্যন্ত শিশু ও বালক-বালিকারা আক্রান্ত হয়ে হাসাপাতালে ভর্তি হলে তাদের কোভিড হাসাপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে রাখা হবে। সঙ্গে থাকবেন মা। টিকা নেওয়া নেই এমন কাউকে করোনা ওয়ার্ডে থাকতে দেওয়া বিপজ্জক। বেশির ভাগ শিশু মায়ের বেশি ঘনিষ্ঠ হওয়ায় মা আক্রান্ত হলে সন্তানেরও সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। সেই কারণেই ১২ বছর পর্যন্ত শিশু ও বালক-বালিকাদের মাকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, আইসিএমআর প্রসূতিদেরও টিকা দেওয়ার কথা বলেছে। সেই মত প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। তবে রাজ্য থেকে এখনও পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে কোনও নির্দেশিকা পাঠানো হয়নি। রানাঘাট মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক পুষ্পেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, “প্রসূতিদের ক্ষেত্রে রাজ্য এখনও পর্যন্ত কোনও নির্দেশিকা পাঠায়নি। নির্দেশিকা পেলেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”

নির্দেশিকা এলেও এখনই শিশুদের মা বা প্রসূতিদের টিকাকরণ শুরু করা মুশকিল। তার প্রধান কারণ টিতার অপ্রতুলতা। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে কোভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ় দেওয়া হলেও জেলায় প্রথম ডোজ় প্রায় বন্ধ। রাজ্য থেকেও এখন দ্বিতীয় ডোজ়ের জন্য টিকা পাঠানো হচ্ছে। এই মুহূর্তে নদিয়া জেলায় প্রায় এক লক্ষের মত গ্রাহকের দ্বিতীয় ডোজ় বাকি। রাজ্য থেকে প্রথম ডোজ়ের জন্য টিকা এলেই শিশুর মা ও প্রসূতিদের টিকা দেওয়া শুরু হবে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে তা চালু করা যাবে বলে জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা আশাবাদী।

আরও পড়ুন
Advertisement