রানাঘাট হাসপাতালে টিকার লাইন। নিজস্ব চিত্র।
শ’পাঁচেক টাকা দিলেই হল। টিকার লাইনে রাত জাগার লোকও ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে।
করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার জন্য রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে আগের দিন সন্ধ্যা থেকেই লাইন দিতে শুরু করেন অনেকে। যত রাত গড়ায়, লাইন বাড়ে। পর দিন সকালে যাঁরা লাইনে থাকেন, তাঁদের কুপন দেওয়া হয়। পরে সেই কুপন দেখিয়েই মেলে টিকা। অনেকের পক্ষেই কুপন নেওয়ার জন্য রাত জেগে লাইন দেওয়া সম্ভব হয় না। তাঁদের লাইন দিচ্ছেন কিছু অভাবি যুবক। তাদের কেউ-কেউ হাসপাতালেরই অস্থায়ী কর্মী বলেও সূত্রের দাবি।
মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালের লাইনে দেখা মেলে এমনই দুই যুবকের। সারা রাত জেগেও তাদের মেজাজ ফুরফুরে। কেননা দু’জনের পকেটেই পাঁচশোর কড়কড়ে নোট ঢুকেছে। দুই গ্রহীতার হয়ে তাঁরা লাইন দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় ডোজ়ের লাইন। সকাল ৯টায় কুপন দেওয়া শুরু হয়। যাঁরা লাইনে থাকেন, তাঁরা কুপন নিয়ে বাড়ি ফিরে যান। পরে সময় মত ফের হাসপাতালে এসে কুপন দেখিয়ে টিকা নেন। লোক বেশি হলে অনেকে কুপন না পেয়ে ফিরে যান। রাতজাগা ওই দুই যুবক কুপন পেয়ে পৌঁছে দিয়েছেন দুই গ্রহীতার বাড়িতে। হাতে-হাতে মিলেছে টাকা।
রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য তথা পুর প্রশাসক কোশলদেব বন্দোপাধ্যায় বলেন, “টাকার বিনিময়ে লাইন দেওয়ায় বিষয়টি আমিও শুনেছি। যাঁদের টাকা আছে, তাঁদের এতে মঙ্গল। কারণ অনেকের পক্ষেই রাত জেগে লাইন দেওয়া সম্ভব নয়। যাঁদের টাকা নেই, তাঁরা বঞ্চিত হবেন।” হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার শ্যামলকুমার পোড়ে অবশ্য বলেন, “আমার কাছএ এ রকম কোনও অভিযোগ আসেনি। কে লাইনে দাঁড়াচ্ছে, কে কুপন নিচ্ছে, তা আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। অনেক সময়ে দাদুর জন্য নাতি লাইনে দাঁড়ায় বলে শুনেছি। টাকা নেওয়ার কথা শুনিনি।”