প্রতীকী ছবি।
করোনার প্রথম আক্রমণ থেকে একেবারেই নিরাপদ ছিল শিশুরা। শিশুদের সংক্রমণের দু-একটি কেস পাওয়া গিয়েছিল জেলায়। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে রাজ্যের অন্য প্রান্তের সঙ্গে জেলাতেও শিশুদের সংক্রমণের হার অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে।
এখনও পর্যন্ত জেএনএম হাসপাতালে শিশুদের ওয়ার্ডে ১৩জন শিশুর কোভিডের চিকিৎসা হয়েছে। প্রত্যকেই এখন অবশ্য সুস্থ। কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শান্তনু ঘোষের কাছ থেকেও জানা যাচ্ছে, শিশুদের সংক্রমণ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। তবে শিশুদের মৃত্যুর হার নেই বললেই চলে। প্রথম ঢেউয়ে শিশুরা পাঁচ শতাংশ সংক্রামিত হয়েছিল কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ে জেলায় মোট শিশুর ১৮ থেকে প্রায় ৩৩ শতাংশ সংক্রামিত হয়েছে।
শোনা যাচ্ছে, তৃতীয় ওয়েভে শিশুদের সংক্রমণ আরও বেড়ে যাবে। ফলে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন অভিভাবকেরা। যে প্রশ্নটা সবচেয়ে বেশি উঠছে তা হল, শিশুদের কি এখনই টিকাকরণের প্রয়োজন? তৃতীয় ওয়েভের আগে টিকা পাওয়া যাবে শিশুদের জন্য? শিশু বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, শিশুদের টিকা দেওয়া নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে। তার ফল এখনও পাওয়া যায়নি। কোভিড ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শিশুদের জন্য অনেকটাই পরে শুরু হয়েছে, তাই তাঁদের ভ্যাকসিনটাও পরে হবে।
জেএনএম হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ অরিজিৎ দাস বলছেন, “তৃতীয় ঢেউ আসার আগে মনে হয় না শিশুদের জন্য টিকা পাওয়া যাবে। তাদের মাস্ক পরাতে হবে, নির্দিষ্ট দূরত্ববিধি মেনে চলতে হবে। বড়দের সতর্ক থাকতে হবে। এছাড়া উপায় নেই।’’ জেএনএম শিশু বিভাগের চিকিৎসক মঞ্জরী বসুর কথায়, “শিশুদের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন দিতে গেলে ভাল ভাবে গবেষণা করতে হয়। যদি দেখা যায় ভাল ফল পাওয়া যাচ্ছে, তা হলে শিশুদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।”
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ভ্যাকসিনের একটা শর্ট ট্রায়াল করতেও দু থেকে তিন মাস সময় লাগে। ফলে টিকা কবে পাওয়া যাবে সেটা নির্দিষ্ট করে এখনই বলা যাচ্ছে না। ১২ বছরের বেশি বয়সী কিশোরদের ভ্যাকসিন পেতে ধরে নেওয়া যেতে পারে আরও ছয় মাস এক বছর সময় লেগে যাবে।
তবে তৃতীয় ঢেউ আসার আগেই শিশুদের ভ্যাকসিন দেওয়া গেলে ভাল হত, এটা সকলেই মানছেন। না হলে একটা বিপদের আশঙ্কা তো থেকেই যাচ্ছে। তবে শিশু বিশেষজ্ঞেরা এটাও আশা করছেন যে, তৃতীয় ঢেউয়েও শিশুদের মৃত্যুহার কমই থাকবে। এটাই আশার আলো।