ফাইল চিত্র।
জেলায় টিকার ব্যাপক চাহিদা থাকলেও রাজ্য থেকে মাত্র ৪৫ হাজার কোভিশিল্ড এসেছে শনিবার। একটিও কোভ্যাক্সিন আসেনি। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের ভাঁড়ারেও কোভ্যাক্সিন শূন্য। ঘরে থাকা হাজার চারেক কোভ্যাক্সিন শনিবার জেলার বিভিন্ন জায়গায় বিলিয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। যেখানে যেটুকু যা আছে তা দিয়ে দিন কয়েক চলবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। আবার টিকার প্রথম ডোজ়ও কম থাকায় রয়ে সয়ে পরিস্থিতি বিচার করে তা দেওয়া হচ্ছে। জোর দেওয়া হচ্ছে টিকার দ্বিতীয় ডোজ়ের প্রতিই। তাও কতদিন সবাই পাবে তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না টিকার দায়িত্বে থাকা কর্তারা।
স্বাভাবিক কারণেই টিকাকেন্দ্রের সংখ্যাও কমেছে। ফলে স্বাস্থ্য মন্ত্রী বদলে কেন্দ্র করোনা পরিস্থিতি ঘুরে দাঁড়ানোর কথা শোনালেও বাস্তবে টিকার হাহাকার ছবি এতটুকু বদলালো না মুর্শিদাবাদে। আর টিকা না পেয়ে বিশেষ করে বয়স্ক মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে প্রায় প্রতিদিন। এর জন্য টিকার অপর্যাপ্ত জোগানকেই দায়ি করছেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা।
কো-উইন পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী টিকার দুই ডোজ় মিলিয়ে জেলায় এখনও পর্যন্ত ৯ লক্ষ ৫৩ হাজার ২৪৬জন কোভিশিল্ড পেয়েছেন, কো-ভ্যাক্সিন পেয়েছেন ১ লক্ষ ৮২ হাজার ২৫৫ জন। এদের মধ্যে ৬০ এর উপরে তিন লক্ষ ৫৩ হাজার এক জন, ৪৫ থেকে ৫৯ বছর বয়স পর্যন্ত ৪ লক্ষ ৫১ হাজার ৫১ জন আর ১৮ থেকে ৪৪ বছরের মধ্য যাঁদের বয়স তাঁদের মধ্য অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ৩ লক্ষ ৩১ হাজার ৪৪৯ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে।
এখন মূলত ১৮ থেকে ৪৪ বছর আর ৪৫ বছরের উপরে যাদের বয়স, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তাঁদেরই মূলত টিকাকরণ চলছে জেলায়। তার ফাঁক গলে পরিচিতদের কেউ কেউ হয়তো টিকা পেয়েছেন কিন্তু সামগ্রিকভাবে সর্বস্তরের নাগরিকদের জন্য কবে থেকে এই টিকা দেওয়া হবে তা হলফ করে বলতে পারছেন না কেউ। শুধু তাইই নয়, কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজ় দেওয়ার পর ৮৪দিন পরে দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার দরুণ জেলা স্বাস্থ্য দফতর কোভিশিল্ড জোগাড়ের সময় পেলেও এখনও তা স্বাভাবিক হয়নি টিকা না আসার কারণে। ফলে টিকার প্রথম ডোজ় নেওয়ার পরে দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার সময়সীমা অনেকের পেরিয়ে গিয়েছে, অনেকের দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার সময় হয়ে এসেছে। এই অবস্থায় যাঁরা সেদিন কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজ় পেয়েছিলেন টিকার অভাবে তাঁদের সবাইকেও দ্বিতীয় ডোজ় দিতে পারবে না বলেই মনে করছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। সময় পেরিয়ে যাওয়া তাঁদেরও চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানান তাঁরা। তাই স্বাস্থ্য দফতর প্রথম ডোজ় না দিলেও কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ় প্রাপকদের তাড়াতাড়ি দিয়ে দেওয়াকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস।