প্রতীকী ছবি।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। তাই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগাম প্রস্ততি নিতে শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর। করোনা-আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার জন্য শুরু হয়ে গিয়েছে পরিকাঠামো তৈরির কাজ।
জেলার স্বাস্থ্য কর্তারা জানিয়েছেন, নদিয়া জেলাতে দ্বিতীয় ঢেউয়ে অনেক শিশু আক্রান্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে এগারো মাস এমনকি দু’মাসের শিশুরাও আছে। তবে শিশুদের কারও শারীরিক অবস্থার তেমন অবনতি হয়নি। কিন্তু তৃতীয় ঢেউয়ে সংখ্যাটা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কর্তারা। তাই জেলার যে সব হাসপাতালে এসএনসিইউ (সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিট) আছে সেখানে তৈরি হচ্ছে আইসিইউ। ১ থেকে ৯০ দিনের শিশুদেরও করোনার চিকিৎসা করা যাবে সেখানে। ৯০ দিন থেকে ১১ বছর পর্যন্ত শিশুদের চিকিৎসায় তৈরি হচ্ছে আলাদা পরিকাঠামো। তাদের জন্য অবশ্য কোভিড হাসপাতালেই প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে।
জেলা সদর হাসপাতালের পাশাপাশি কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতাল, রানাঘাট এবং তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে ১ থেকে ৯০ দিনের শিশুদের চিকিৎসার জন্য এসএনসিইউ আছে। কোনও এসএনসিইউয়ে যত শয্যা আছে তার ২০ শতাংশ কোভিড আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার জন্য সংরক্ষিত করা হচ্ছে। সেটা কী ভাবে করা সম্ভব সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন হাসপাতালের এসএনসিইউ বিভাগে কর্তব্যরত শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। এই চার হাসপাতালের এসএনসিইউয়ে পাঁচটি করে শয্যা নিয়ে তৈরি হবে আইসিইউ। সেখানে থাকবে বিশেষ ধরনের ‘নিওনেটাল ভেন্টিলেটর’। কোনও শিশুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সেখানে ভর্তি করা হবে। জেলায় এখনও পর্যন্ত কোনও হাসপাতালের এসএনসিইউ বিভাগে এই ধরনের ভেন্টিলেটর নেই। গত মার্চ মাসে জেলা থেকে প্রতিটি এসএনসিইউ বিভাগের জন্য একটি করে নিওনেটাল ভেন্টিলেটর চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরে।
সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তৈরি হয়েছে বিশেষ টিম। তা ছাড়া এক জন করে নোডাল অফিসার নিয়োগ করে হয়েছে। গত বৃহস্পতিবারই বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট চারটি হাসপাতালের তৈরি হওয়া বিশেষ টিমের সদস্যদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করছেন জেলার কর্তারা। ওই হাসপাতালগুলিতে দু-এক দিনের মধ্যে শিশুদের চিকিৎসার পরিকাঠামো তৈরির জন্য ঠিক কী কী প্রয়োজন তা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে।
৯০ দিন থেকে ১১ বছর পর্যন্ত শিশুদের জন্য কোভিড হাসপাতালের মহিলা বিভাগকে ব্যবহার করা হবে। শিশুদের সঙ্গে তাদের মায়েরা থাকবেন। কোন কোভিড হাসপাতালের মহিলা বিভাগের কতগুলি শয্যা শিশুদের চিকিৎসার জন্য সংরক্ষণ করতে হবে তার তালিকা পাঠিয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ১০টি শয্যা, কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে ২৫টি, রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে ১০টি, নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ১০টি ও কল্যাণীর নেতাজী সুভাষ সেনিটেরিয়াম বা যক্ষ্ণা হাসপাতালে ২০টি শয্যা শিশুদের চিকিৎসার জন্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এদের জন্য আলাদা আইসিইউ করার প্রয়োজন হবে না। কারণ, প্রাপ্তবয়স্কদের আইসিইউতে ব্যবহৃত কিছু ভেন্টিলেটর আছে যা শিশুর ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যায়।