পুজোর মণ্ডপে। নিজস্ব চিত্র।
শুক্রবার। একদিকে জুম্মাবার অন্যদিকে কাজের জায়গায় বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজন। স্বভাবতই শুক্রবার সকাল থেকেই ব্যস্ততা ছিল মাঝারুল ইসলাম, নওসাদ আলি, মিলন জাভেদ, সাজেম আলি কবিরাজ, রফিকুল ইসলামদের।
তাঁরা সকলেই হরিহরপাড়া বিদ্যুৎ দফতরের কেউ অস্থায়ী কর্মী, কেউ আবার ঠিকা শ্রমিক। বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে প্রতিবছরই অফিসে বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজন করা হয়। করোনা আবহেও গত বছর থেকে স্বল্প পরিসরে পুজোর আয়োজন করে থাকেন দফতরের কর্মীরা। জানা গিয়েছে হরিহরপাড়া কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে অধিকাংশ কর্মীই মুসলিম সম্প্রদায়ের। প্রতি বছরই তাঁরাও সুকান্ত চৌধুরী, দর্পনারায়ণ মৈত্র, অভি ঘোষদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পুজোর আয়োজন করেন। বৃহস্পতিবার অফিসের এক প্রান্তে অভি, দর্পনারায়ণদের সঙ্গে মণ্ডপ তৈরি করেছেন সাজেম, মিলন, মাঝারুলরা। শুক্রবার বিশ্বকর্মা পুজোর দিন সকালে নিজের খেতের আখ, বেলপাতা নিয়ে হাজির অফিসের নিরাপত্তারক্ষী জামিরুল মণ্ডল। প্রসাদ, ভোগের আয়োজনে দায়িত্ব ছিল অফিসের গাড়ির চালক রফিকুল ইসলামের। তা ছাড়া অফিস থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার দূর ভজরামপুর গ্রাম থেকে ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে করে প্রতিমা নিয়ে আসার দায়িত্ব ছিল ঠিকাশ্রমিক রুবেল সেখ, সোহরাব হোসেন, জাহাঙ্গীর শেখের উপর। সকাল সকাল মোটরবাইকে দুটি আস্ত কলাগাছ বেঁধে নিয়ে অফিসে হাজির দফতরের ঠিকাশ্রমিক আব্দুল মজিদ।
এদিন সকাল থেকেই ফুল দিয়ে মণ্ডপ সাজানো, ফল কাটা, ভোগ রান্নায় মজে ছিলেন মাঝারুল, নওসাদরা। জুম্মার নমাজের সময় হতেই অফিস সংলগ্ন তালতলাপাড়া জুম্মা মসজিদে নমাজ পড়তে যান মাঝারুল, নওসাদ,মিলন,সাজেমরা। নমাজ শেষে সওয়া একটা নাগাদ অফিসে ফিরতে ফিরতেই ততক্ষণে শেষ পুজো পাঠও। পুজো শেষে সহকর্মীদের কপালে টিকা দিতেও ভুল করেননি তাদের সহকর্মী পুরোহিত দর্পনারায়ণ মৈত্র। বিদ্যুৎ দফতরের স্টেশন ম্যানেজার ( অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার) ওয়াসিকুর রহমান বলেন, ‘‘অফিসে বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজন যেমন হয় তেমনি ইফতার মজলিসের আয়োজন করে থাকেন আমাদের কর্মীরা। ধর্মের ভেদাভেদ ভুলে একে অপরের উৎসবে শামিল হই আমরা।’’ মাঝারুল, নওসাদরা বলেন, ‘‘আজ জুম্মার দিন ছিল বলে আগাম পুজোর সব আয়োজন সেরে রেখেছিলাম।’’