—প্রতীকী ছবি।
দুপুরবেলা হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠল গোটা এলাকা। কিছু ক্ষণের মধ্যে আকাশ জুড়ে সাদা ধোঁয়ার কুণ্ডলী। বিস্ফোরণের তীব্র শব্দ শুনে তত ক্ষণে ছুটে এসেছেন এলাকার লোক জন। দেখেন, চারিদিকে রক্ত। দলা পাকানো দেহাংশ। ঠিক তার পাশেই মাটিতে কাতরাচ্ছেন দুই ব্যক্তি। রক্ত ভেসে যাচ্ছে তাঁদের শরীর থেকে। আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তাজা বোমা আর বোমা তৈরির সরঞ্জাম। মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ায় এই বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটেছে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। দুই জখম ব্যক্তিকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই এক জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরে বেআইনি বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় অন্তত ন’জনের প্রাণ গিয়েছে, আহতও হন কয়েক জন। তাঁদের মধ্যে মুর্শিদাবাদের বাসিন্দাও রয়েছেন। বিরোধীদের অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গ বারুদের স্তূপের উপর দাঁড়িয়ে। প্রশাসন সব দেখেও কোনও পদক্ষেপ করছে না। সরকার অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মুর্শিদাবাদে বিস্ফোরণের ঘটনা সেই বিতর্ককেই উস্কে দিল। স্থানীয়দের দাবি, হরিহরপাড়া থানার খলিলাবাদ গ্রামের একটি কলাবাগানে বৃহস্পতিবার দুপুরে বোমা বাঁধার কাজ করছিলেন ১২ জন। সেই সময়েই অসাবধানতাবশত বিস্ফোরণ হয়। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া জখম দুই ব্যক্তিকে প্রথমে হরিহরপাড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, যাঁর মৃত্যু হয়েছে, তাঁর নাম সাজিজুল শেখ। প্রচুর তাজা বোমা ও বোমা বাঁধার মশলাও উদ্ধার হয়েছে এলাকা থেকে। মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) সুবিমল পাল বলেন, ‘‘একটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এক জনের মৃত্যু হয়েছে। এক জন আহত। গোটা ঘটনার তদন্ত চলছে।’’
স্থানীয়দের দাবি, শুধু দু’জন নন, অন্তত আট-ন’জন জখম হয়েছেন বিস্ফোরণের ঘটনায়। পরিবারের লোকেরা তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছেন। তার পর এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দা কেরামত শেখ বলেন, ‘‘দুপুরবেলা হঠাৎ শব্দ পেয়ে ছুটে যাই আমরা। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি, দু’জন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। বাকিদের নিয়ে যাচ্ছে কয়েক জন। কলাবাগানের ভিতরে ঢুকে দেখি প্রচুর বোমা ও বোমার মশলা পড়ে আছে।’’