তেল-ভাণ্ডারের খবরে স্মৃতিতে বুঁদ উত্তর-দত্তপাড়া
ONGC

গর্ত করে, বোমা ফাটিয়ে তেল খুঁজত ওএনজিসি

প্রসঙ্গত, অশোকনগরে অশোধিত তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের ভাণ্ডার পাওয়া গিয়েছিল। ইতিমধ্যেই সেখানে বাণিজ্যিক ভাবে তেল উত্তোলনের কাজ শুরু হয়েছে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২৩ ০৮:৪৬
ওএনজিসির ঘোষণায় শোরগোল হরিণঘাটায়।

ওএনজিসির ঘোষণায় শোরগোল হরিণঘাটায়। প্রতীকী চিত্র।

তেল-গ্যাসের ভাণ্ডারের হদিশ পেতে জমি খনন হবে বলে খবর প্রকাশিত হতেই হরিণঘাটার মোল্লাবেলিয়া পঞ্চায়েতের উত্তর দত্তপাড়ায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে।

অপেক্ষাকৃত প্রবীণদের মনে পড়ছে প্রায় বছর ৩০ আগের ঘটনা। উত্তর দত্তপাড়া, চরণডাঙা, কুড়ুমবেলিয়া-সহ বিভিন্ন এলাকার মাঠে-মাঠে ‘অয়েল অ্যান্ড ন্যাচারাল গ্যাস কমিশন’ (ওএনজিসি) থেকে লোহার পাইপ দিয়ে মাটিতে গর্ত করা হত। তার পর পাইপ তুলে নিয়ে ওই গর্তের মধ্যে তারের সংযোগে বোম ফাটানো হত। এই ভাবে মাটির নীচে তেল আছে কি না পরীক্ষা করা হত।

Advertisement

প্রসঙ্গত, অশোকনগরে অশোধিত তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের ভাণ্ডার পাওয়া গিয়েছিল। ইতিমধ্যেই সেখানে বাণিজ্যিক ভাবে তেল উত্তোলনের কাজ শুরু হয়েছে। রাজ্যের আরও পাঁচ জেলায় তেল এবং গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে মাটির নীচে। ওএনজিসিও ওই জেলাগুলির মোট ২২টি জায়গাকে নির্বাচিত করেছে। সেখানে কোথায় কত তেল রয়েছে তা জানার জন্য ড্রিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনার ১৩টি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার তিনটি, পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের ৫টি এবং নদিয়ার ১টি জায়গায় হতে পারে ড্রিল। নদিয়ার ওই জায়গাটি হল হরিণঘাটার উত্তর দত্তপাড়া। বাণিজ্যিক ভাবে এই জায়গাগুলি থেকে তেল উত্তোলন করতে কত সময় লাগবে, মূলত সেই বিষয়টি স্পষ্ট হতে পারে এই ড্রিলে। এর জন্য ওই ২২ জায়গায় পাঁচ একর করে জমি লিজে নেওয়া হতে পারে। সব কিছু ঠিক থাকলে এই জায়গাগুলিতে আগামী দিনে বাণিজ্যিক ভাবে তেল এবং গ্যাস উত্তোলন করা হবে।

এই খবর প্রকাশিত হতেই সোমবার সকালে উত্তর দত্তপাড়া ও কুড়ুমবেলিয়া বাজারের সেলুনের দোকান, চায়ের দোকানে মানুষের চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে পুরোনো দিনের কথা। সেই সময় ওএনজিসি এলাকায় তেলের উপস্থিতি খুঁজছিল।

বছর পঞ্চাশের শ্যামল ঘোষ বলেন, ‘‘দেখতাম ওএনজিসির গাড়িতে লোকজন আসত। মাঠে-মাঠে পাইপ দিয়ে গর্ত করে তার মধ্যে বোম ফাটাতো। শুনেছিলাম তেলের ভাণ্ডারের খোঁজ করছে।" এই পঞ্চায়েতের চরণডাঙা গ্রামের বছর চল্লিশের কার্তিক বিশ্বাস বা কুড়ুমবেলিয়া বাজারের বছর পঞ্চাশের প্রসেনজিৎ প্রামাণিকের কথায়, ‘‘সেই সময় খালবিল থেকেও ওএনজিসির লোকজন জল নিয়ে পরীক্ষা করত।"

তবে তেল বা গ্যাসের জন্য জমি খননের ব্যাপারে প্রশাসনিক স্তরে এখনও কোনও খবর নেই। হরিণঘাটা ব্লকের বিডিও অনির্বান মজুমদার বলেন, "আমাদের কাছে এই বিষয়ে কোনও খবর নেই।" একই কথা বলেন মোল্লাবেলিয়া পঞ্চায়েতের প্রধান কামালউদ্দিন মণ্ডল। জানান, "সম্প্রতি কোনও প্রতিনিধি দল আসারও খবর আমাদের কাছে নেই।" তবে মোল্লাবেলিয়া পঞ্চায়েতের কয়েকটি এলাকার মানুষের এখন চর্চার অন্যতম বিষয় হয়ে উঠেছে তেল-গ্যাসের ভাণ্ডারের কথা।

আরও পড়ুন
Advertisement