‘টেক্কা’র চিত্রনাট্য লিখেছেন ভাস্কর চট্টোপাধ্যায়। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
পুজোয় মুক্তি পেয়েছে সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ছবি ‘টেক্কা’। ছবি কেমন হয়েছে, তা নিয়ে এখনও পক্ষে-বিপক্ষে মতামতে সরগরম সমাজমাধ্যম। কিন্তু, দর্শকের সিংহভাগের পছন্দ হয়েছে ছবির শেষের চমক। যার ফলে কৌতূহল জেগেছে ছবির কাহিনিকারকে ঘিরে। সাধারণত সৃজিত নিজেই তাঁর চিত্রনাট্য লেখেন। তবে ‘টেক্কা’র চিত্রনাট্য লিখেছেন ভাস্কর চট্টোপাধ্যায়। ‘টেক্কা’ দেখে তিনি কতটা খুশি? টলিপাড়া সম্পর্কে তাঁর কী রকম ধারণা তৈরি হল? সম্প্রতি এক কফির আড্ডায় আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে তাঁর সামনে প্রশ্ন রাখা হয়।
পেশায় মূলত ছোটগল্পকার এবং ঔপন্যাসিক। এক সময়ে সাংবাদিকতাও করেছেন। তবে এক সময়ে কলকাতার সন্তোষপুরের বাসিন্দা ভাস্কর এই মুহূর্তে প্রবাসী বাঙালি। কানাডার ইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে স্ক্রিনরাইটিংয়ের শিক্ষক। ‘টেক্কা’র প্রচার এবং মুক্তি উপলক্ষেই কয়েক দিনের জন্য তাঁর শহরে ফেরা। চিত্রনাট্যকার হিসেবে ছবিটি তাঁর কেমন লেগেছে? ভাস্কর হেসে বললেন, ‘‘আমার বেশ ভাল লেগেছে। কিছু দৃশ্য সৃজিত বাদ দিয়েছে, কিন্তু বাড়তি কিছু যোগ করেনি। হাতে সময় ছিল, তাই কলকাতা ছাড়াও মফস্সলের বেশ কিছু প্রেক্ষাগৃহে ছবিটা দেখেছি। দর্শক কিন্তু উপভোগ করেছেন।’’ একই সঙ্গে এই ছবি নিয়ে গঠনমূলক সমালোচনাকেও সাদরে গ্রহণ করেছেন তিনি।
প্রায় বছর দশেক আগে উপন্যাস হিসেবেই কাহিনিটিকে ভেবেছিলেন ভাস্কর। কিন্তু পরে তা চিত্রনাট্যে বদলে যায়। উল্লেখ্য, ‘টেক্কা’ কিন্তু শুরুতে বাংলার জন্য লিখতে চাননি ভাস্কর। তাঁর লক্ষ্য ছিল বলিউড। কিন্তু, সৃজিতের অনুরোধে শেষ পর্যন্ত রাজি হন। ভাস্করের বিশ্বাস, সফল চিত্রনাট্যের চাবিকাঠি সময়। পরিচালক এবং চিত্রনাট্যকার যদি ভিন্ন ব্যক্তি হন, তা হলে উভয়ের দৃষ্টিভঙ্গি মেলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ‘টেক্কা’র ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে বলে দাবি ভাস্করের। তবে ‘টেক্কা’র চিত্রনাট্য তিনি মাত্র পাঁচ দিনে লিখে ফেলেছিলেন। বললেন, ‘‘আমি এতটাই তথ্যপূর্ণ চিত্রনাট্য লিখেছিলাম যে, সেখানে টিমকে আর কোনও রদবদল করতে হয়নি। ঘুমহীন রাত কেটেছিল। ওষুধ খেতে হয়। কিন্তু একেবারে লেখা শেষ করে থেমেছিলাম।’’
‘টেক্কা’ দেখার পর দর্শকের একাংশ জন ট্রাভোল্টা এবং ডস্টিন হফম্যান অভিনীত হলিউড ছবি ‘ম্যাড সিটি’র সঙ্গে সাদৃশ্য খুঁজে পেয়েছেন। এই প্রসঙ্গে ভাস্করের বক্তব্য, ‘‘ছবিটা দেখেছি। আমি একাধিক হস্টেজ় ড্রামা দেখেছি। তাই সে দিক থেকে বলা যেতে পারে, এই ঘরানার ছবির প্রতি ‘টেক্কা’ একটি শ্রদ্ধার্ঘ্য।’’ বাংলায় ভাল চিত্রনাট্যকারের অভাব। আর ভাস্কর বিশ্বাস করেন, বাংলায় গল্পের অভাব নেই। ‘টেক্কা’ মুক্তির পর ইতিমধ্যেই টলিপাড়া থেকে নতুন কাজের প্রস্তাব পাচ্ছেন ভাস্কর। তবে এখনই তা নিয়ে কোনও তথ্য প্রকাশ করতে রাজি নন তিনি। ভাস্কর বললেন, ‘‘তাড়াহুড়ো করা উচিত নয়। কারণ ছবির ভিতই হল চিত্রনাট্য।’’
এই মুহূর্তে মুম্বইয়ে রয়েছেন ভাস্কর। ওখানেও চলচ্চিত্রনির্মাতা বন্ধুদের সঙ্গে ‘টেক্কা’ দেখার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। পাশাপাশি, একাধিক পরিচালক এবং প্রযোজনা সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। তালিকায় রয়েছে শ্রীরাম রাঘবন, সিদ্ধার্থ রয় কপূরের নামও। তবে এই বিষয় নিয়ে এখনই কোনও কথা বলতে নারাজ ভাস্কর। আগামী বছর আবার কলকাতায় আসবেন তিনি। তবে কাজের যোগসূত্র তৈরি হলে তার আগেও শহরে ফিরতে পারেন ভাস্কর।