পরিদর্শনে চাকদহ পুরসভার প্রতিনিধিরা। শুক্রবার পালপাড়ায়। ছবি: সৌমিত্র সিকদার Soumitra Sikdar
পালপাড়া স্টেশনের ধারে জলাশয় ঘেঁষে নির্মীয়মাণ কাফে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিল চাকদহ পুরসভা। শুক্রবার পুরসভার একটি প্রতিনিধি দল ওই কাফে তৈরির জায়গা পরিদর্শনে যায়। চাকদহ ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকও (বিএলএলআরও)এ দিন গিয়ে জায়গাটি দেখে এসেছেন। যিনি ওই কাফে তৈরি করছিলেন, সেই উজ্জ্বল সরকারকে আজ, শনিবার জমির কাগজপত্র নিয়ে দেখা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুর্ব রেলের শিয়ালদহ-রানাঘাট শাখার পালপাড়া স্টেশনের আপ প্ল্যাটফর্মের পাশে ওই পুকুরে এক সময় জল টলমল করত। এলাকার মানুষজন সেখানে স্নান করতেন। কিন্তু রাতের অন্ধকারে জলাশয়ের একটা অংশ বুজিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, পুকুরটি পুরোপুরি বুজিয়ে ফেলার ছক কষা হয়েছিল। তার জন্য মাটিও আনা হয়। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ পুকুর বোজানোর প্রতিবাদে চাকদহ-কল্যাণী রাজ্য সড়ক অবরোধ করায় তা আর করা যায়নি।
সরাসরি পুকুর বোজানো না হলেও জমি মালিকেরা এখন অন্য রাস্তা নিয়েছেন এলাকাবাসীর একাংশের দাবি। ২৮ কাঠা জুড়ে ওই পুকুর এবং তার পাশের জমি উজ্জ্বল সরকারের স্ত্রীর নামে রয়েছে। সম্প্রতি সেখানে বাঁশ দিয়ে কাফে তৈরি শুরু হয়। জমি থেকে শুরু হয়ে জলের ভিতর পর্যন্ত এগিয়ে গিয়েছে সেই বাঁশের পাটাতন। এর জন্য পুরসভা বা প্রশাসনের কারও কাছ থেকে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। উজ্জ্বল উল্টে দাবি করেন, জলাশয় ঘেঁষে বাঁশ দিয়ে কাফে তৈরি করে তিনি ‘বেআইনি’ কিছু করছেন না। যদিও ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর জানিয়েছে যে বিনা অনুমতিতে জলাশয়ে কোনও রকম নির্মাণ করা যায় না।
এ দিন দুপুরে চাকদহের পুরপ্রধান অমলেন্দু দাস, উপ-পুরপ্রধান দেবব্রত নাগ, পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক বিজয় রায় এবং বাস্তুকার সুব্রত সরকার জায়গাটি দেখতে যান। উজ্জ্বল সপরিবার বেড়াতে যাওয়ায় তাঁর দেখা মেলেনি। পরে পুরপ্রধান বলেন, “যে কাঠামো তৈরি করা হচ্ছিল, তা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জলে অথবা জলের পাশে কোনও কাঠামো তৈরি করা যাবে না। যত দূর জেনেছি, জমিটির মিউটেশনও করা হয়নি।”
বিএলএলআরও পুষ্পান্ন মণ্ডল বলেন, “আমি জায়গাটি দেখে এসেছি। শনিবার রেভিনিউ অফিসার যাবেন। সোমবার তাঁর রিপোর্ট পাওয়ার পরে পদক্ষেপ করব।” উজ্জ্বল সরকারকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি।