লালবাগের শ্রীপাটে রাধামাধবের স্নানযাত্রা। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।
কয়েক শতাব্দী ধরে একই প্রথা চলে আসছে লালবাগের শ্রীপাট কুমার পাড়ায়। রাধামাধব দেবের স্নানযাত্রার জন্য উপলক্ষে বাজনা কীর্তন গাইতে গাইতে গঙ্গা থেকে বড় বড় কলসিতে করে জল এনে স্নান করানো হয় রাধামাধব দেবকে, বড় মেলাও বসে মন্দির চত্বরে। প্রথমদিকে ওই মেলা একবেলা হত কিন্তু এখন তা বাড়তে বাড়তে দশদিন হয়। কিন্তু শতাব্দী ধরে চলে আসাপ্রথায় প্রথম ছেদ পড়েছিল গত বছর। কারণ ওই সময় করোনার প্রথম ঢেউ চলছিল গোটা দেশ সহ রাজ্য জুড়ে। এবারও সেই একই করোনার কারনে ওই নম নম করেই সারতে হল স্নান যাত্রার উৎসব।
রাধামাধব মন্দির সূত্রে খবর, সামান্য কিছু ভক্ত নিয়ে সমস্ত করোনা বিধি মেনেই পালন করা হয়েছে এবছরের স্নানযাত্রার উৎসব।
কথিত আছে, লালবাগের শ্রীপাট কুমারপাড়া রাধামাধব মন্দির বেশ কয়েক শতাব্দীর প্রাচীন। রাধামাধব মন্দির মতিঝিলের পূর্বপাড়ে। মোতিঝিলে ছিল ঘসেটি বেগমের স্বামী নওজেশ মহম্মদের প্রাসাদ। নওজেশ রাধামাধবের নামে জমিও দান করেন।
এদিন ১০৮ ঘটি দুধ, গঙ্গা জলে স্নান করানো হয় রাধামাধবকে তারপর নতুন পোষাক পড়িয়ে বসানো হয় সিংহাসনে। তারপর হয় মহাপ্রভুর মালসা ভোগ।
এদিন রাধামাধব মন্দিরের সেবাইত বিশ্বজিৎ রায় বলেন, ‘‘করোনা বিধি মেনেই সবটা করা হয়েছে যেখানে হাজার হাজার ভক্ত হয় সেখানে ওই ৫০ জন মত ভক্ত নিয়ে করা হয়েছে। আর মেলা দু'বছর থেকে বসেনি এমনকি ওই বাজনা সংকীর্তন করে গঙ্গা থেকে জল নিয়ে আসা হয় সেটাও করোনার জন্য দু'বছর থেকে বন্ধই রাখা হয়েছে।’’
অপর দিকে জিয়াগঞ্জের সাধকবাগ আখড়ার স্নানযাত্রার উৎসবও গত বছরের মত এ বছরও আড়ম্বরহীন ভাবেই পালন করা হয়েছে। সাধকবাগ আখড়ার জগন্নাথের স্নানযাত্রা উৎসব বেশকয়েক শতাব্দীর প্রাচীন। জানাযায় রামানুজ বৈষ্ণব সাধকরা সাধকবাগের আখড়া প্রতিষ্ঠা করেন। যদিও রানি ভবানীর দেওয়া অর্থ থেকেই আখড়ার বেশিরভাগ খরচটা চলতে বলেই বিভিন্ন ইতিহাসবিদদের লেখা থেকে যানা যায়।
প্রতি বছর স্নানযাত্রা উপলক্ষে আখড়ার মাঠে মেলা বসে কিন্তু গত বছর ও এই বছর করোনার কারণে মেলা বসেনি। নিয়ম মেনে জগন্নাথ বলরাম শুভদ্রাকে স্নান করানো বিশেষ পুজো সব হলেও সমান্য কিছু লোক নিয়েই তা হয়েছে।
এ দিন সাধকবাগ আখড়া কমিটির সম্পাদক বিজয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘স্নানযাত্রা উপলক্ষে প্রচুর মানুষ আসেন কিন্তু করোনার জন্য গত দুবছর থেকে কোনও রকম আড়ম্বর ছাড়াই স্নানযাত্রা পালন হচ্ছে এই বছরও মেলা বসেনি। ওই ২০ জন মত লোক নিয়ে পুজো করা হয়েছে।’’