প্রতীকী ছবি।
লড়াই কঠিন জেনেও জঙ্গিপুরে কোমর কষে নামছে বিজেপি। শমসেরগঞ্জে তাদের লড়াই আরও কঠিন। তাই সে ভাবে সেখানে নেতাদের ভিড় বাড়াচ্ছে না বিজেপি।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিককে মাথার উপর বসিয়ে ৯ জন সাংসদ ও বিধায়ককে জঙ্গিপুর ও শমসেরগঞ্জে নির্বাচনের দায়িত্ব দিয়েছে বিজেপি। দুই কেন্দ্রে ৪ থেকে ৫ টি সভা করবেন শুভেন্দু অধিকারীও।
রবিবারই জঙ্গিপুরে আসার কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর। থাকবেন রঘুনাথগঞ্জেই। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই আসবেন দুই সাংসদ জগন্নাথ সরকার ও খগেন মুর্মু। হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার, মালদহের বিধায়ক গোপাল সাহা, মুর্শিদাবাদের বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষ, দুবরাজপুরের অনুপ সাহা, ইংলিশবাজারের শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী, হবিবপুরের ডি এল মুর্মু, মাফুজা খাতুন সহ আরও তিন জন।
বিজেপির উত্তর মুর্শিদাবাদের জেলা সভাপতি সুজিত দাস বলেন, “দুই নির্বাচন কেন্দ্রে ৯টি মণ্ডল কমিটি রয়েছে দলের। এক একটি মণ্ডলের দায়িত্বে থাকবেন সাংসদ ও বিধায়করা। ৪ জন থাকবেন শমসেরগঞ্জে। ৫ জন জঙ্গিপুরে। পুর এলাকার জন্য আরও একজন। নিশীথবাবু আপাতত দু’সপ্তাহ যাতায়াত করবেন। ২০ সেপ্টেম্বর প্রচার শুরু হলে টানা থাকবেন তিনি জঙ্গিপুরে। তবে মণ্ডলের দায়িত্বে থাকা বিধায়কেরা থাকবেন সেই এলাকাতেই। তাঁদের নেতৃত্বেই কাজ করবেন দলীয় কর্মীরা। মূলত জোর দেওয়া হচ্ছে ছোট ছোট সভা ও পথসভার উপর। এতে বেশি সংখ্যক লোকের কাছে বিজেপির পৌঁছনো সম্ভব হবে।”
বুধবারই জঙ্গিপুরে কর্মিসভা করতে এসেছিলেন বিজেপির দুই নেতা অমিতাভ চক্রবর্তী ও বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। সুকান্ত সাংবাদিকদের বলেন, “দুই বিধানসভাতেই বিজেপি তার সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে লড়াই করবে। এর জন্য যা যা করা দরকার দল তা করবে। প্রচারের ইস্যু দুটো। নির্বাচনের পরে রাজ্য জুড়ে সন্ত্রাস ও কোভিড বিধি লঙ্ঘন করে ৫০০ টাকার জন্য মানুষকে লাইনে দাঁড় করিয়ে বিপদে ফেলা। এ ছাড়াও টেট দুর্নীতি বড় ইস্যু। কর্মীরা ছোট ছোট বৈঠক করে মানুষকে শোনাবেন তৃণমূলের যাবতীয় কুর্কীতির কথা।”
দু’টি কেন্দ্রের মধ্যে বিজেপি জঙ্গিপুরের নির্বাচনকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে। কারণ ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ৬৬,১৯৩ ভোট পেয়েছিলেন জঙ্গিপুর বিধানসভা এলাকায় বিজেপি প্রার্থী মাফুজা খাতুন।
সুজিতবাবুই জঙ্গিপুরে দলের প্রার্থী এবারের বিধানসভা নির্বাচনে। তিনি বলছেন, “বিজেপি জঙ্গিপুরের নির্বাচনকে গুরুত্ব দিচ্ছে কারণ ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ৬৬,১৯৩ ভোট পেয়েছিল বিজেপি। তারপর আর কোনও নির্বাচন হয়নি। বিজেপি দেখতে চায় তাদের এই ভোট এ বারে কতটুকু বাড়ছে। ২.৫৫ লক্ষ মত ভোট রয়েছে জঙ্গিপুর কেন্দ্রে। এর মধ্যে বিজেপির টার্গেট ৪৩ শতাংশ ভোট। অর্থাৎ প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার ভোট। লড়াই কঠিন হলেও এক ইঞ্চি জমিও ছাড়ব না। বিধানসভা ভোটের এই লড়াই ২০২৪-এ পথ দেখাবে বিজেপিকে। বাম প্রার্থী যদি ৪০ হাজার ভোট কাটতে পারে তাহলে জঙ্গিপুরে ভাল লড়াই দিতে পারবে বিজেপি। সেই কারণেই এত সংখ্যায় সাংসদ ও বিধায়ককে নিয়ে আসা হচ্ছে। তবু কেন যে তৃণমূল বিজেপির শক্তিকে জঙ্গিপুরে ধর্তব্যের মধ্যেই রাখতে চাইছে না, তা জানি না।”
শমসেরগঞ্জে অবশ্য সেই অর্থে বিজেপির শক্তি নেই বললেই চলে। গত লোকসভায় বিজেপি মাত্র ২৯ হাজার ভোট পেয়েছিল সেখানে। এই কেন্দ্রে ২৩৭,৭৫০টি ভোটের মধ্যে কোনও কালেই বিজেপির সেই অর্থে প্রভাব নেই কিছু নির্দিষ্ট এলাকা ছাড়া। তাই শমসেরগঞ্জকে এক অর্থে বাদের খাতাতেই রাখছে বিজেপি।