হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে হিরু হালদারের। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হলেন জেলা কংগ্রেসের এসসি এসটি সেলের সভাপতি হিরু হালদার। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বহরমপুরের সৈদাবাদ কুঞ্জঘাটার কুমার দুর্গানাথ লেনের ছাপাখানার মোড়ে বৃহস্পতিবার রাত এগারোটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে।
কংগ্রেসের এসএসটি সেলের সহ সভাপতির বাড়ির পুজো দেখে হিরু ও তার সঙ্গীরা সৈদাবাদে নিজের বাড়ির এলাকায় ফিরে আসেন। অভিযোগ, সেই সময় প্রথমে পলাশ মণ্ডলের উপরে ও পরে হিরুর উপর হামলা করে দুষ্কৃতিরা। মাথায় গুরুতর চোট পান হিরু ও পলাশ। রক্তাত্ত অবস্থায় হিরু ও পলাশকে ওই দিন রাতেই মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আপাতত তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়।
ওই রাতেই বহরমপুর থানার পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে চার জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের মধ্যে পাপাই ঘোষের বাড়ি কুঞ্জঘাটায়। বাকি জয়লাল সাউ, ছোট্টু সাহা, মিঠুন সাউয়ের বাড়ি মুর্শিদাবাদ থানার আমানিগঞ্জে। শুক্রবার তাদের আদালতে তোলা হলে চোদ্দ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
ঘটনার দিন রাতেই হাসপাতালে ছুটে যান বহরমপুরের সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী। সেখানেই এই ঘটনার পেছনে শাসক দল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। সঙ্গে তিনি যোগ করেন, “হিরু হালদার একজন দলিত সম্প্রদায়ের লোক। তাকে সবাই পরোপকারী বলে চেনে। কেউ বলতে পারবে না সে কারও সঙ্গে কোনও বেআইনি কাজ করেছে। অথচ তাকে খুন করার উদ্দেশ্যে তার উপর এই আক্রমণ করা হয়েছে।” কংগ্রেস নেতার এই অভিযোগের জেরে ফের রাজনীতির পারদ চড়েছে বহরমপুরে।
হাসপাতাল বিছানায় শুয়ে হিরু বলেন “২০১৬-২০১৯ পর্যন্ত তৃণমূল না করার জন্য জেল খাটাল, মাদক মামলা করল। কিছু করতে না পেরে পাপাই ঘোষের নেতৃত্বে শাসক দলের মদতে এ বার ন’জন একসঙ্গে আমার উপর আক্রমণ করলো।”
বহরমপুর গ্রান্ট হলের মাঠে বৃহস্পতিবার শহর কংগ্রেসের ব্যবস্থাপনায় এক কর্মিসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই কর্মিসভায় মানুষের ভীড়ের কারণেই মূল উদ্যোক্তা হিরু শাসক দলের চক্ষুশীল হয়েছে বলে দাবি করেন অধীর। কংগ্রেসের প্রদেশ সভাপতি বলেন, “এই রকম চলতে থাকলে শহরের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। আজ না হয় কাল এলাকায় এলাকায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।” শুক্রবার দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে শহর কংগ্রেসের কর্মীরা বহরমপুর থানার সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। বহরমপুর থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির প্রতিশ্রুতি দিলে তাঁরা বিক্ষোভ তুলে নেন।
এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল যুক্ত নয় বলে জানান শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “হিরু হালদারের ব্যক্তিগত ব্যাপারেও অধীর চৌধুরী তৃণমূলের ভুত দেখছেন। আর হতাশার রাজনীতি করছেন।” এই ঘটনায় রাজনীতির কোনও গন্ধ পায়নি বলেই জানিয়েছে বহরমপুর থানার পুলিশ।