ফাইল চিত্র।
রাজ্যের সাধারণ নির্বাচন চলাকালীন কোভিডে মৃত্যু হয়েছে দুই কেন্দ্রের দুই প্রার্থীর। যার জেরে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন করা যায়নি। এমনকি কোভিডের বাড়বাড়ন্তের কারণে নির্বাচন স্থগিত করে দেওয়া হয়েছিল। কোভিড থিতু হলেও এখনও আশঙ্কা পুরোপুরি যায়নি। কোভিড কালেই ফের সাধারণ নির্বাচন হচ্ছে। ফলে নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেওয়া কোভিড বিধি মেনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। রবিবার বহরমপুরে জেলাশাসকের অফিসের সভাগৃহে সর্বদলীয় বৈঠকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলিকে কোভিডবিধি মানার কথা যেমন জানানো হয়েছে, তেমনই ভোটের খুটিনাটি তথ্য জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলি অবশ্য জেলা প্রশাসনের কাছে জানিয়েছেন, কোভিডবিধি মানার বিষয়টি যেন সকলের কাছে সমান হয়। সব দল ও প্রশাসন যাতে কোভিডবিধি মেনে চলে তা দেখতে হবে।
এ দিনের বৈঠকে মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী, দুই জেলার পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার, ওয়াই রঘুবংশী-সহ জেলার অন্য প্রশাসনিক আধিকারিকরা ছিলেন। বৈঠক শেষে জেলাশাসক বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা সর্বদলীয় বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলিকে জানানো হয়েছে। কোভিড বিধি, করোনার টিকাকরণ সহ সব নির্দেশিকা তাঁদের বোঝানো হয়েছে। অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছি।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর শমসেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুর কেন্দ্রে নির্বাচন ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে আগেই মনোনয়নপর্ব হওয়ার পরে নির্বাচন স্থগিত হয়েছে। ফলে এ বারে মনোনয়নপর্ব হবে না। ভোটগ্রহণের ৭২ ঘণ্টা আগে নির্বাচনী প্রচার শেষ করতে হবে। ইন্ডোর মিটিংয়ের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ মানুষকে নিয়ে অথবা ২০০ জনের কম লোক নিয়ে বৈঠকের অনুমতি দেওয়া হবে। বাইরে লোকধারণ ক্ষমতার ৫০ শতাংশ নিয়ে জমায়েত অথবা ৫০০ জনের জমায়েত, তারকা প্রচারকের ক্ষেত্রে এক হাজার জন নিয়ে জমায়েত। স্বীকৃত দলের ক্ষেত্রে তারকা প্রচারক ২০ জন এবং নিবন্ধিকৃত দলের ক্ষেত্রে তারকা প্রচারক ১০ জনের অনুমোদন দেওয়া হবে। রোড শো, র্যালির অনুমতি দেওয়া হবে না। স্ট্রিট কর্নারের ক্ষেত্রে ৫০ জন, বাড়ি বাড়ি প্রচারে ৫ জনের অনুমতি দেওয়া হবে। প্রচারে ২০টি গাড়ি ব্যবহার করা যাবে। সেই গাড়িগুলিতে ৫০ শতাংশ লোক নিতে পারবে।
ভোটকর্মী-সহ ভোটের কাজে যুক্ত সকলের করোনার টিকার দুটি ডোজ় দেওয়া থাকা চাই। প্রার্থী, নির্বাচনী এজেন্ট, পোলিং এজেন্ট, কাউন্টিং এজেন্ট, গাড়ির চালকদের করোনার টিকার দুটি ডোজ় হওয়া চাই। এসব বিষয় এদিন সর্বদলীয় বৈঠকে জানানো হয়েছে।
এদিন জেলাশাসক বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নির্বাচনী আচরণবিধি ও নির্বাচনের সময়ে করোনা সুরক্ষাবিধির কথা এদিন রাজনৈতিকদলগুলিকে বোঝানো হয়েছে। ইতিমধ্যে জঙ্গিপুর ও শমসেরগঞ্জে ৮০ শতাংশ ভোটারের করোনার টিকাকরণ করানো হয়েছে।’’
এদিন জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অসীমকুমার রায় বলেন, ‘‘আমরা বৈঠকে জানিয়েছি কোভিডবিধি মানার বিষয়টি শুধুমাত্র বিরোধীদের উপরে যেন চাপিয়ে না দেওয়া হয়। সকলকে মেনে চলতে হবে। এ ছাড়া শমসেরগঞ্জের ভাসাইপাইকর, চাচণ্ডা সহ তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা উত্তেজনা প্রবণ। সেগুলি এখন থেকে পুলিশকে দেখার জন্য অনুরোধ করেছি।’’
জেলা তৃণমূল নেতা সুবোধ দাস বলেন, ‘‘এদিন বৈঠকে জেলা প্রশাসনের কর্তারা নির্বাচনের খুটিনাটি ও কোভিডবিধি নিয়ে আমাদের বিস্তারিত জানিয়েছেন। আমরা চাই কোভিডবিধি মেনে নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হোক।’’