অধীর চৌধুরী। — ফাইল চিত্র
কেন্দ্রীয় সরকারের কাশ্মীর নীতির কড়া সমালোচনা করলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী। অধীরের মতে, দু’বছর আগে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ভুল ছিল। শনিবার গভীর রাতে জম্মু বিমানবন্দরে বায়ুসেনার ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা নিয়েও মোদী সরকারকে একহাত নিয়েছেন অধীর।
সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে নিজের বাসভবনেই বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। ওই বৈঠকে ছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের ৩ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুখ আবদুল্লা, ওমর আবদুল্লা এবং মেহবুবা মুফতি। ছিলেন কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলের নেতারাও। সেই প্রসঙ্গ টেনে অধীর রবিবার বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ২ বছর আগে সংসদে দাঁড়িয়ে বুক চওড়া করে বলেছিলেন, ৩৭০ অনুচ্ছেদের অবলুপ্তি হলে কাশ্মীরে সন্ত্রাস বন্ধ হয়ে যাবে। কাশ্মীরে দুর্নীতি বন্ধ হয়ে যাবে। জাল টাকার লেনাদেনা বন্ধ হয়ে যাবে। কালো টাকার লেনাদেনা বন্ধ হয়ে যাবে। গোটা কাশ্মীরকে ৩-৪টি পরিবার মিলে লুঠেছে সেটাও বন্ধ হয়ে যাবে। বাইরের লোকের চাকরি হবে। শিল্প হবে। কাশ্মীর উন্নত হবে।’’
প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতির প্রসঙ্গ টেনে আনার পর, কাশ্মীরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে অধীর বলেছেন, ‘‘আগে পাকিস্তান থেকে বিদেশি সন্ত্রাসবাদীরা এসে কাশ্মীরে হামলা করত। এখন স্থানীয় স্তরে জঙ্গি তৈরি হচ্ছে। এখনও কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হল না। রাজ্য ভেঙে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি হল। পৃথিবীতে এর উদাহরণ নেই।’’
এই সূত্রেই অধীরের অভিযোগ, ‘‘প্রতি দিন কাশ্মীরে রক্তপাত চলছে। ২ বছর পর আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জেল থেকে কাশ্মীরের নেতাদের ছাড়িয়ে এনে বৈঠক করতে হচ্ছে। আমরা তো দু’বছর আগে বলেছিলাম, রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ভেঙে দিও না। সবাইকে আতঙ্কবাদী তৈরি করে দিও না। বিজেপি-র সরকারের ব্যর্থতায় কাশ্মীর অশান্ত।’’ জম্মুতে ড্রোন হামলা নিয়ে সমালোচনা করে অধীর বলেন, ‘‘আমাদের নিরাপত্তা শতছিদ্র হয়ে গিয়েছে। এগুলো তার প্রমাণ।’’ অধীরের বক্তব্য, ‘‘স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস অর্জন করার মধ্যে দিয়েই কোনও এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।’’ জম্মু-কাশ্মীরের মানুষকে ভারতের সঙ্গে একাত্ম করার পরামর্শও মোদীকে দিয়েছেন তিনি।