প্রতীকী ছবি।
তাঁদের দলের ভোটব্যাঙ্কে ভাগ বসিয়েই জঙ্গিপুর এবং শমসেরগঞ্জে তৃণমূল ভাল ফল করেছে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাম এবং বিজেপি নেতারা। তাঁদের মতে, বিরোধী সমর্থকদের কেউ ‘নিরাপত্তাহীনতা’য় ভুগে ভরসা হারিয়েছেন, কেউ আবার ‘প্রলোভনের ফাঁদে’ রাজ্যের শাসকদলের দিকে ঢলেছেন। রাজনীতির কারবারিদের একাংশের মতে, এর সঙ্গেই ভোটে মেরুকরণেরও প্রভাব পড়েছে অনেকটাই। তৃণমূলের এই ‘শ্রীবৃদ্ধি’ সে সবেরই ফসল।
২০১৯ সালে জঙ্গিপুরে কংগ্রেস, বিজেপি ও বামেরা ভোট পেয়েছিল ১ লক্ষ ৪ হাজার। এবার কংগ্রেস প্রার্থী দেয়নি জঙ্গিপুরে। বাম ও বিজেপি মিলিয়ে ভোট পেয়েছে ৫২ হাজার। বাকি ভোটের প্রায় সবটাই তৃণমূলের ভাঁড়ারে গিয়েছে। লোকসভায় তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৭৯ হাজার। তার সঙ্গে বিরোধী ভোটের ৫২ হাজার যোগ হয়েছে। তাতেই এবারের নির্বাচনে তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট বেড়ে হয়েছে ১ লক্ষ ৩৬ হাজার। শমসেরগঞ্জে গত লোকসভা ভোটে বিজেপি ও কংগ্রেস ভোট পেয়েছিল প্রায় ৯৫ হাজার। তৃণমূল পায় ৬৫ হাজার। বিরোধীদের সেই ভোটের অনেকটাই এবার চলে গিয়েছে তৃণমূলের দিকে। তাতেই তৃণমূলের ভোট বেড়ে ৯৬ হাজার।সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তোয়াব আলি স্বীকার করেছেন, “শহর এলাকার বাম সমর্থকদের একটা বড় অংশের ভোট গিয়েছে তৃণমূলের দিকে। শহর এলাকার বিজেপি সমর্থকদের ভোটেরও প্রায় পুরোটাই চলে গিয়েছে তৃণমূলের দিকে। সবই নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কে। কারণ, ধুলিয়ানে তৃণমূলের মূলস্রোতের নেতা-কর্মীদের চেয়ে সাধারণ ভোটার বেশি ভয় পেয়েছেন তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীকে, যারা এবারের ভোটে কংগ্রেসের হয়ে খেটেছে। গ্রামীণ এলাকার ভোটাররা তৃণমূলের প্রধান গোষ্ঠীকে নিয়ে ভয়ে ছিলেন। তাই সেখানে বাম ভোট চলে গিয়েছে কংগ্রেসের ঘরে। এটাই শমসেরগঞ্জের ভোট নিয়ে আমাদের প্রাথমিক মূল্যায়ন।’’ শমসেরগঞ্জের বিজেপি প্রার্থী মিলন ঘোষের কথায়, “মানুষ নিজের এলাকায় কিছুটা নিরাপদ থাকতে চেয়েছেন। হয় তো তাঁরা ভেবেছেন, বাম ও বিজেপি সেই নিরাপত্তা দিতে পারবে না। তাই কোথাও তাঁরা কংগ্রেস, কোথাও তৃণমূলকে বেছে নিয়েছেন।’’ জঙ্গিপুরের বিজেপি প্রার্থী সুজিত দাস বলেন, “বিজেপির ভোটের বেশির ভাগটাই গিয়েছে তৃণমূলে। চাওয়া-পাওয়া তো আছেই, ভয়েও তাঁরা ভরসা করেছেন তৃণমূলকে। তবে বিজেপির প্রতি তাঁদের বিশ্বাসে চিড় ধরেনি।’’ তৃণমূলের জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি খলিলুর রহমানের অবশ্য দাবি, “রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি দেখেই মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছেন। সে জন্যই এত ভাল ফল।’’