Bhaiphonta Special Recipe

ঠাকুরবাড়ির ভাইফোঁটাও হত জমাটি, বিশেষ দিনে ভাইয়ের জন্য রাঁধুন কবির বাড়ির দুই পদ

এই একটি দিন নিজের হাতে রেঁধে ভাইকে খাওয়ানোর সাধ হয় দিদিদের। সেই সাধ পূরণ করতে ভাইয়ের জন্য রাঁধতে পারেন ঠাকুরবাড়ির দু’টি বিশেষ পদ, পাঁঠার বাংলা এবং ফুলকপির সন্দেশ। রইল রেসিপি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:৫৮

ভাইফোঁটার ভূরিভোজ।

মাঝে আর এক দিনের অপেক্ষা। রবিবার ভাইফোঁটা। ঘরে ঘরে আপাতত সে উৎসব উদ্‌যাপনেরই প্রস্তুতি চলছে। ভাই-বোনের এই উৎসব জাঁকজমক ভাবে পালিত হত জোড়াসাঁকো ঠাকুরবা়ড়ির অন্দরেও। এ দিনে দিদিদের কাছ থেকে ফোঁটা নেওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকতেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বৃদ্ধ বয়সেও ভাইফোঁটার দিন জোড়াসাঁকোয় এসে কবিকে ফোঁটা দিয়ে যেতেন তাঁর ছোড়দি বর্ণকুমারী। ঠাকুরবাড়ির যে কোনও উৎসবেই খাবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত। দুর্গাপুজো হোক কিংবা ঘরোয়া অনুষ্ঠান, হেঁশেল থেকে ভেসে আসত খাবারের মনমাতানো সুঘ্রাণ। ভাইফোঁটার দিনও সে বাড়ির মেয়েরা তাঁদের খাদ্যরসিক ভাইদের জন্য নিজের হাতে নিত্যনতুন খাবার রাঁধতেন। এই একটি দিন নিজের হাতে রেঁধে ভাইকে খাওয়ানোর সাধ হয় দিদিদের। সেই সাধ পূরণ করতে ভাইয়ের জন্য রাঁধতে পারেন ঠাকুরবাড়ির দু’টি বিশেষ পদ, পাঁঠার বাংলা এবং ফুলকপির সন্দেশ। রইল রেসিপি।

Advertisement
পাঁঠার বাংলা।

পাঁঠার বাংলা। ছবি: সংগৃহীত।

ভাইফোঁটার ভূরিভোজে থাক পাঁঠার বাংলা

উপকরণ:

১ কিলো পাঁঠার মাংস

২৫০ গ্রাম ঘি

৩ চা চামচ আদা বাটা

৩ চা চামচ রসুন বাটা

১ কাপ পেঁয়াজ বাটা

১৫০ গ্রাম টক দই

২ টেবিল চামচ গোটা ধনে বাটা

এক কাপ ডুমো করে কাটা পেঁয়াজ

দেড় চা চামচ ভাজা জিরে গুঁড়ো

৫-৬টি চেরা কাঁচালঙ্কা

পরিমাণ মতো সর্ষের তেল

স্বাদমতো নুন এবং চিনি

প্রণালী:

প্রথমে মাংসের টুকরোগুলি ভাল করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে আলাদা পাত্রে রাখুন।

এ বার কড়াইয়ে বেশ খানিকটা ঘি গরম করে তাতে একে একে পেঁয়াজ বাটা, রসুন বাটা, ধনে বাটা, কাঁচালঙ্কা বাটা দিয়ে ভাল করে কষাতে থাকুন।

মশলার গন্ধ ছাড়লে বুঝবেন কষানো হয়ে এসেছে। তখন হলুদ আর টক দিয়ে আরও খানিক ক্ষণ কষিয়ে নিন। কষানো হয়ে গেলে নুন এবং চিনি দিয়ে নাড়াচাড়া করুন।

মশলা থেকে ঘি বেরোতে শুরু করলে মাংস দিয়ে দিন কড়াইয়ে। আঁচ কমিয়ে খুন্তি দিয়ে হালকা হাতে নাড়তে থাকুন। মাংসের মধ্যে যাতে মশলা ঢোকে, সেটা মাথায় রেখেই নাড়তে থাকুন। কষতে কষতে মশলা শুকিয়ে এলে সামান্য গরম জল দিতে পারেন।

মাংস, মশলায় ভাল মতো মাখামাখি হয়ে গেলে ডুমো করে কাটা পেঁয়াজগুলি দিয়ে দিন। আঁচ কমিয়ে কড়াইয়ের ঢাকনা আটকে ৩-৪ মিনিট মতো অপেক্ষা করুন।

ঢাকা খুলে যদি দেখেন ভাপে মাংস সেদ্ধ হয়নি, তা হলে আরও খানিকটা ঢিমে আঁচে বসিয়ে রাখুন। মাংস সেদ্ধ হয়ে এলে একেবারে সামান্য জল দিয়ে খানিক ক্ষণ ফুটিয়ে নিন। মাখো মাখো হয়ে এলে উপর ভাজা জিরের গুঁড়ো ছড়িয়ে ভাইকে পরিবেশন করুন সরু চালের গরম ভাতের সঙ্গে।

ফুলকপির সন্দেশ।

ফুলকপির সন্দেশ। ছবি: সংগৃহীত।

ফুলকপির সন্দেশ দিয়েই হোক মিষ্টিমুখ

উপকরণ:

১টি বড় আকারের ফুলকপি

দে়ড় কাপ দুধ

২ চা চামচ এলাচ গুঁড়ো

আধ কাপ কনডেন্সন্ড মিল্ক

২ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো

৩ চা চামচ ঘি

২ কাপ চিনি

গরম দুধে ভিজিয়ে রাখা জাফরান, কিশমিশ, কাঠবাদাম

প্রণালী:

প্রথমে ছোট ছোট টুকরো করে ফুলকপি কেটে ধুয়ে নিন।

এ বার একটি পাত্রে জল নিয়ে তার মধ্যে ৪টি ছোট এলাচ, আধ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে গরম করতে বসান। জল ফুটে এলে তার মধ্যে ফুলকপির টুকরোগুলি দিয়ে ভাল করে সেদ্ধ করে নিন। সেদ্ধ হয়ে এলে আলাদা পাত্রে সেদ্ধ ফুলকপিগুলি তুলে রাখুন।

ফুলকপি ঠান্ডা হয়ে এলে ভাল করে চটকে নিয়ে ছাঁকনিতে ছেঁকে নিন। তাতে ফুলকপির মধ্যে থাকা জল বেরিয়ে যাবে।

এ বার ক়ড়াইয়ে ঘি গরম করে তার মধ্যে মেখে রাখা ফুলকপি দিয়ে পাক দিতে থাকুন। ফুলকপি একটু আঠালো হয়ে এলে তার মধ্যে ৫ চামচ চিনি মিশিয়ে ভাল করে নাড়তে হবে।

চিনি গলতে শুরু করলে খোয়া ক্ষীর দিয়ে আবার একটু নাড়াচাড়া করতে হবে। মিনিট পাঁচেক পরে কনডেন্সড মিল্ক দিয়ে দিন। দুধ দেওয়ার পর একটানা খুন্তি নাড়তে হবে। না হলে তলা ধরা যেতে পারে।

কিছু ক্ষণ নাড়াচাড়া করার পর কেশর ভেজানো দুধ ঢেলে দিন কড়াইয়ে। নাড়তে নাড়তে একদম দলা পাকিয়ে এলে নামিয়ে নিন।

গোল কানা নেই এমন থালায় মিশ্রণটি নামিয়ে ঠান্ডা করে নিন। ঠান্ডা হয়ে এলে ইচ্ছেমতো আকারে কেটে প্রতিটি সন্দেশের উপর দুধে ভিজিয়ে রাখা কিশমিশ আর কাঠবাদাম কুচি দিয়ে সাজিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। ফুলকপির ঠান্ডা ঠান্ডা সন্দেশে ভাইফোঁটা জমে যাবে।

আরও পড়ুন
Advertisement