Women Education

মেয়ের সঙ্গে পরীক্ষায় বসলেন ৩৩ বছরের মা, সংসারের চৌকাঠ পেরিয়ে নতুন করে পড়াশোনা, মুর্শিদাবাদে

হালিমা খাতুন-সহ তিন সন্তানের মা আসমাতারার বিয়ে হয় অনেক অল্প বয়সে। তখন তিনি রেজিনগর বিধানসভার অন্তর্গত তোকিপুর হাই মাদ্রাসাতে পড়াশোনা করতেন। স্কুলের গণ্ডি পেরোনার আগেই বিয়ে করতে হয়েছিল তাঁকে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০২:৪৯
An image of Women

আসমাতারা খাতুন এবং হালিমা খাতুন। —নিজস্ব চিত্র।

মেয়ের সঙ্গে মাদ্রাসার পরীক্ষা দিয়ে নজির গড়লেন ৩৩ বছরের আসমাতারা খাতুন। মুর্শিদাবাদের রেজিনগরে।

Advertisement

হালিমা খাতুন-সহ তিন সন্তানের মা আসমাতারার বিয়ে হয় অনেক অল্প বয়সে। তখন তিনি রেজিনগর বিধানসভার অন্তর্গত তোকিপুর হাই মাদ্রাসাতে পড়াশোনা করতেন। স্কুলের গণ্ডি পেরোনার আগেই বিয়ে করতে হয়েছিল তাঁকে। আসমাতারা জানান, অষ্টম শ্রেণির পরেই তাঁকে বিয়ে করতে হয়। মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যায় পড়াশোনা। ঘাড়ে চাপে সংসারের ভার। সেই ভারে পড়াশোনা থেকে বিছিন্ন হলেও সন্তানের ইচ্ছাতেই আবার পড়াশোনা শুরু করলেন তিনি। আসমাতারা বলেন, “মেয়ে চাইত আমি পড়াশোনা করি। তাই করোনার পর মেয়ের ইচ্ছেকেই মর্যাদা দিতে আমি আমার স্কুলের সঙ্গে পুনরায় যোগাযোগ করি। মেয়ের সঙ্গে আবার নতুন করে স্কুলে যাওয়া শুরু হয় আমার।” তাঁর সংযোজন, “মেয়েই লেখাপড়া শেখাল। ওর উৎসাহেই মাদ্রাসা পরীক্ষায় বসেছি।” সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া ছেলেও মাকে পড়তে দেখে উৎসাহিত হয়েছে।

ওই স্কুলেই ছিল আসমাতারার ফেলে আসা পড়াশোনার যাবতীয় নথি। তাই আবার ভর্তি হতে তাঁর কোনও সমস্যা হয়েনি। ওই স্কুলের শিক্ষক হাসিবুর রহমান বলেন, “মাদ্রাসায় ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে যে হেতু বয়সের ঊর্ধসীমা নেই তাই আসমাতারাকে ভর্তি করতে কোনও সমস্যা হয়নি।” তিনি আরও বলেন, “হালিমা মেধাবী পড়ুয়া। মা ও মেয়ে পড়াশোনার বিষয়ে খুবই যত্নশীল। আশা করি পরীক্ষায় দু’জনেই ভাল ফল করবে।”

তবে নিজের জন্য কোনও গৃহ শিক্ষক নেননি আসমাতারা। ভরসা রেখেছেন মেয়ের উপরেই। আসমাতারা বলেন, “মেয়ে টিউশন পড়ে এসে প্রতিটি বিষয়ের অধ্যায়ের পর অধ্যায় আমায় বুঝিয়ে দিত।” একান্নবর্তী পরিবারের বৌ আসমাতারা। ঘর সংসারের সমস্ত দায়িত্ব সামলে নিয়মিত বইখাতা নিয়ে মেয়ের সঙ্গে পড়তে বসেছেন তিনি। রাত জেগে আবার কখনও সবার আগে ঘুম থেকে উঠে আগেভাগে নিজের পড়া করে রাখেন। হাইমাদ্রাসা পরীক্ষায় বসার জন্য নিজেকে নতুন ভাবে তৈরি করেছেন তিনি। তাঁর বিশ্বাস তিনি এই পরীক্ষায় সফলতা অর্জন করবেন। আসমাতারার ইচ্ছা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করার। তিনি বলেন, “আমি আরও লেখাপড়া শিখতে চাই।”

আরও পড়ুন
Advertisement