সপরিবারে ইয়ামিন শেখ। —নিজস্ব চিত্র
জীবন তাঁর কাছে এখন আক্ষরিক অর্থেই যন্ত্রণার। নিজে হাঁটাচলা প্রায় করতে পারেন না। চিকিৎসার জন্য বন্ধক দেওয়া জমি। জর্জরিত ঋণের জালে। এই অবস্থা থেকে বার হয়ে আসতে চান মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরের ডাবকাই গ্রামের বাসিন্দা ইয়ামিন শেখ। এক সময় টোটো চালানোই পেশা ছিল ইয়ামিনের। কিন্তু অসুস্থতা আর লকডাউন, এই জোড়া ধাক্কায় থমকে সেই টোটোর চাকা। ইয়ামিন চাইছেন, সেই চাকায় ফের গতি উঠুক আগের মতো।
ইয়ামিনের পরিবারে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী, পুত্র এবং কন্যাও। প্রায় এক বছর ধরে অসুস্থ তিনি। ফলে বন্ধ তাঁর টোটো চালানোও। ইয়ামিনের একমাত্র পুত্রও অসুস্থ। ফলে পরিবারে উপার্জন করার মতো কেউ নেই। দারিদ্র দিন দিন চেপে বসছে ইয়ামিনের পরিবারের উপর। তাঁর স্ত্রী শুকরন্নিসার দাবি, আচমকাই ইয়ামিনের শরীরের নিম্নাংশ অসাড় হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে তাঁরা চাইছেন কেউ পাশে দাঁড়াক। হাত বাড়িয়ে দিক সাহায্যের। চোখের জল চেপেই ইয়ামিন বললেন, ‘‘সামান্য যা জমিজায়গা ছিল তা বন্ধক রেখে চিকিৎসা হচ্ছিল। এখন সেই টাকাও শেষ। এক জন ৫০০ টাকা সাহায্য করেছেন তা দিয়েই ওষুধ কিনলাম। ছেলে পঙ্গু। বাড়িতে উপায়ের আর কেউ নেই।’’ একই সুরে শুকরন্নিসা বলছেন, ‘‘আমরা দেনায় জর্জরিত। বসত ভিটে গিয়েছে আগেই। এখন বাস করি খাস জায়গায়। কেউ পাশে না দাঁড়ালে সংসারটা ভেসে যাবে।’’ দুয়ারে সরকার প্রকল্পে আবেদন করেও স্বাস্থ্য সাথী কার্ড মেলেনি বলে অভিযোগ শুকরন্নিসার। তাঁর দাবি, ‘‘পঞ্চায়েতের কোনও সদস্য খোঁজ নেয় না।’’
পরিবারটি যে দুরবস্থায় রয়েছে তা মেনে নিয়েছেন বহরমপুরের রাঙামাটি চাঁদপাড়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ইসমাইল শেখ। তাঁর দাবি, ‘‘আমরা যতটা পারি ততটা সাহায্য করি।’’ বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয় বহরমপুরের বিডিও অভিনন্দন ঘোষের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য সাথী কার্ড কেন করা হয়নি তা খবর নিচ্ছি। উনি শারিরীক ভাবে অসুস্থ। এমন পরিবারের জন্য ‘মানবিক প্রকল্প আছে’। তার জন্য আবেদন করলে মাসিক দেড় হাজার টাকা করে সাহায্য করা হবে।’’