‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরকে আরও বেশি কার্যকর করতে সহায়ক হিসেবে ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল শাসক দল। ফাইল চিত্র।
আগামী মার্চ মাসে আরও এক বার ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরের পরিকল্পনা করেছে নবান্ন। পঞ্চায়েত ভোটের আগে যত বেশি সম্ভব সহজ সমস্যাগুলির সমাধান করতে চায় শাসক শিবির। সেই রকম সমস্যা সংক্রান্ত অভাব-অভিযোগ আরও বেশি করে সংগ্রহ করতে দলের ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’-কর্মসূচিও আরও কিছু দিন বাড়িয়ে দেওয়ার কথা ভাবছে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস।
প্রশাসন ও দল— সরকারি প্রকল্প রূপায়ণে এই দুই শাখায় যৌথ উদ্যোগের কথা আগেই স্পষ্ট করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরকে আরও বেশি কার্যকর করতে সহায়ক হিসেবে ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল শাসক দল। দলের তরফে গ্রামাঞ্চল থেকে মানুষের সমস্যা নির্দিষ্ট ভাবে নথিভুক্ত করে সরকারি প্রকল্পে তার সমাধানই ছিল এই উদ্যোগের মূল ভাবনা। সেই পরিকল্পনা মতোই পঞ্চায়েত ভোটের আগে ফের এক দফায় ‘দুয়ারে সরকার’ চালু করার কথা ভাবা হচ্ছে। নবান্ন সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত ভোট মে মাসে হবে ধরে নিয়েই এই শিবিরে সমস্যা সমাধানে জোর দিতে চাইছে রাজ্য সরকার।
রাজ্য সরকারের ঘোষিত প্রকল্পগুলির সুযোগ সকলের কাছে না পৌঁছনোর অভিযোগ উঠছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। একাধিক জায়গায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই সরাসরি এ ব্যাপারে অভিযোগ করেছেন সাধারণ মানুষ। জনসংযোগ কর্মসূচিতে বেশ কিছু জায়গায় এই অভিযোগ পেয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তার পরেই এ ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহের জন্য দল ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ নামে যে কর্মসূচি শুরু করেছিল, তার ১৫ দিন হয়ে গিয়েছে। ২৮ তারিখ পর্যন্ত
রাজ্যের ২০টি জেলায় ৮০০ গ্রাম পঞ্চায়েতে দলের তরফে পাঠানো ‘দিদির দূত’-এর কাছ থেকে যে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, তার ভিত্তিতে কাজের জন্য প্রশাসনিক স্তরেও প্রস্তুতি চলছে।
বেশ কিছু জায়গায় তৃণমূলের এই প্রতিনিধিরা বিক্ষোভের মুখে পড়লেও প্রাথমিক পর্যালোচনায় দলীয় নেতৃত্ব মনে করছেন, যে লক্ষ্যে এই কর্মসূচি, তার কাছাকাছি পৌঁছতে পেরেছেন তাঁরা। দলীয় সূত্রে খবর, যে অভিযোগ দলের কাছে পৌঁছতে শুরু করেছে, তার বেশির ভাগ সরকারি পরিষেবা সংক্রান্ত। না- পাওয়া বা প্রশাসনিক জটিলতার যে সব অভিযোগ রয়েছে, সেগুলির মধ্যে বার্ধক্যভাতার মতো সরাসরি আর্থিক সুবিধা দেওয়ার প্রকল্প রয়েছে। রাস্তা, জলের সমস্যা ইত্যাদি থাকলেও শংসাপত্র, ভাতা ইত্যাদি সমস্যাগুলিকে অপেক্ষাকৃত সহজ হিসেবে চিহ্নিত করে মার্চের ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে যত বেশি সম্ভব মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতে চাইছে নবান্ন।
আবাস প্রকল্প নিয়ে যে ক্ষোভ- বিক্ষোভ সামনে এসেছে, তা নিয়েও দল ও সরকারি স্তরে পর্যালোচনা করেছে তৃণমূল। দলীয় নেতৃত্বের মতে, পুরনো তালিকা থেকে ইতিমধ্যেই ‘অযোগ্য’ প্রায় ১৬ লক্ষ নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। বাকি যে ৩৯ লক্ষ নাম চূড়ান্ত হয়েছে, তার মধ্যে ১১ লক্ষের বাড়ি এখন তৈরি হওয়ার কথা। তবে বাকিদের নাম তালিকাভুক্ত থাকায় তাঁরা আশ্বস্ত থাকবেন বলে মনে করছে শাসক শিবির। পাশাপাশি ‘অযোগ্য’দের বাদ দেওয়ার কারণে দল ও প্রশাসনের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে বলেও ধারণা তাঁদের।