Murshidabad Mess

মুর্শিদাবাদের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা কর্মব্যস্ত করতে জেলা প্রশাসন ক্ষতিপূরণ দিক, চাইছে নবান্ন, আলোচনা ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও

১৬ এপ্রিল নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ইমাম-মোয়াজ্জিমদের সম্মেলনে মুর্শিদাবাদে অশান্তির ঘটনায় নিহতদের পরিবারগুলিকে আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৫ ১২:২৫
নবান্ন চাইছে মুর্শিদাবাদের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা কর্মব্যস্ত করতে জেলা প্রশাসন ক্ষতিপূরণ দিক।

নবান্ন চাইছে মুর্শিদাবাদের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা কর্মব্যস্ত করতে জেলা প্রশাসন ক্ষতিপূরণ দিক। —নিজস্ব চিত্র।

ধীর গতিতে হলেও ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে মুর্শিদাবাদের উত্তেজনাপ্রবণ এলাকাগুলি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার মধ্যেই গোষ্ঠীসংঘর্ষের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কাজ শুরু করতে চায় রাজ্য সরকার। তবে এ ক্ষেত্রে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষমহল থেকে বিষয়টিতে নজরদারি করা হলেও তা কার্যকর করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলার প্রশাসনকেই।

Advertisement

রাজ্য প্রশাসন সূত্রের খবর, মূলত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি সার্বিক ভাবে দেখবেন মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক রাজশ্রী মিত্র। প্রাথমিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের যে তালিকা তৈরি হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে ৬০টির মতো বাড়ি পুরোপুরি ভেঙে গিয়েছে। সঙ্গে বাজার এলাকার একাধিক দোকানও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঠিক হয়েছে, নতুন বাড়ি তৈরি করতে জেলা প্রশাসন মারফত ক্ষতিগ্রস্তদের ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি বানিয়ে দেওয়া হতে পারে। পাশাপাশি, যাঁদের দোকানের যাবতীয় মালপত্র লুটপাট হয়েছে বা আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে, তাঁদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কাজ শুরু করে দেবে জেলা প্রশাসন।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আগে জঙ্গিপুর, সুতি, শমসেরগঞ্জ, ফরাক্কা এবং ধুলিয়ান এলাকার ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকেরা। তাঁদের মতামত নিয়েই ওই বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। গোষ্ঠীসংঘর্ষের ঘটনায় লুটপাটের অনেক ঘটনা ঘটেছে বলেই প্রাথমিক ভাবে জেনেছে নবান্ন। সেই লুটপাটে গরু, ছাগলের মতো গবাদি পশু এবং হাঁস, মুরগি চুরি করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ওই বিষয়েই ক্ষতির পরিমাণ জানার উদ্যোগ শুরু হয়েছে। সঠিক পরিমাণ জানার পরে জেলা প্রশাসনের তরফে ক্ষতিগ্রস্তদের গবাদি পশু দেওয়া হবে রাজ্য সরকারের তরফে। গবাদি পশু কী ভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে তুলে দেওয়া হবে, সেই বিষয়েই একটি রূপরেখা তৈরি করতে বলা হয়েছে জেলা প্রশাসনের একাংশকে। শান্তি ফেরার পর ওই সমস্ত এলাকার মানুষ যাতে অর্থনৈতিক ভাবে দ্রুত স্বাভাবিক হতে পারেন, সেই প্রচেষ্টাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে নবান্নের একটি সূত্র।

প্রসঙ্গত, গত ১৬ এপ্রিল নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ইমাম-মোয়াজ্জিমদের সম্মেলনে মুর্শিদাবাদে অশান্তির ঘটনায় নিহতদের পরিবারগুলিকে আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশিই, মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, অশান্তির জেরে যাঁদের বাড়িঘর এবং দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁদেরও দেওয়া হবে ক্ষতিপূরণ। তিনি বলেছিলেন, ‘‘বাংলার বাড়ি প্রকল্পের আওতায় ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি তৈরি করে দেবে সরকার।’’ শুধু বাড়িঘর নয়, দোকানপাটও ভাঙচুর হয়েছে। তাঁদেরও সাহায্য করা হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কার দোকান কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন তিনি। নবান্ন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়ার পরেই এলাকায় শান্তি ফেরানোর পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যসচিব। পুরোপুরি সম্ভব না হলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই জানা সম্ভব হয়েছে। তাই চলতি সপ্তাহ থেকেই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কাজ শুরু করে দিতে চাইছে প্রশাসন। নবান্নের নজরদারিতে সেই কাজ করবে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন।

Advertisement
আরও পড়ুন