ফাইল চিত্র।
রাজ্য বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেযারম্যান সংক্রান্ত মামলাটিকে কেন ‘জনস্বার্থ মামলা’ বলা হবে, মামলাকারীর কাছে তা জানতে চাইল কলকাতা হাই কোর্ট। আদালত আরও জানিয়েছে, ওই মামলা কেন জনস্বার্থ মামলা হিসেবে আদালতে গ্রাহ্য হবে, তা আগামী ৪ অগস্টের মধ্যে সংক্ষিপ্ত আকারে জানান মামলাকারী। প্রত্যুত্তরে রাজ্যও তার মতামত জানাবে। প্রসঙ্গত, রাজ্য বিধানসভার পিএসি চেয়ারম্যান পদে বিধায়ক মুকুল রায়ের মনোনয়ন নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে ওই জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বিধানসভার পিএসি-র চেয়ারম্যান পদটি সাধারণত বিরোধীদের জন্য বরাদ্দ। কিন্তু ওই পদে স্পিকার মুকুলকে মনোনীত করেছেন। মুকুল আবার বিরোধীদের দ্বারা মনোনীত নন। সেই প্রশ্নেই কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন বিজেপি বিধায়ক তথা আইনজীবী অম্বিকা রায়। শুক্রবার উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চে ওই মামলাটির শুনানি হয়। মামলাকারীর আইনজীবী পি এস নরসিংহ আদালতে সওয়াল করেন, ওই কমিটির চেয়ারম্যান পদের কাজটি জনস্বার্থমূলক। সরকারের আয়ব্যয়ের সঙ্গে বিধানসভার ওই কমিটির সম্পর্ক রয়েছে। বিরোধীরা এর দাবিদার হলেও চেয়ারম্যান নির্ণয়ে স্পিকারের ভূমিকা ‘নিরপেক্ষ’ ভূমিকা ছিল না। বিষয়টিকে মামলাকারীর আইনজীবী বেআইনি বলেও উল্লেখ করেন।
তবে রাজ্য বিধানসভায় একাধিক প্রাক্তন এবং বর্তমান বিধায়ক জানিয়েছেন, পরিষদীয় রাজনীতির রেওয়াজ অনুযায়ী ওই পদটি বিরোধীদেরই সাধারণত দেওয়া হয়ে থাকে। যদিও এর কোনও আইনি বাধ্যবাধকতা নেই।
মামলায় রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান, শাসকদলের কোনও বিধায়ক ওই পদে মনোনীত হননি। মনোনীত হয়েছেন বিরোধী দলেরই এক বিধায়ক। এখন তিনি দলবদল করেছেন। যা নিয়ে বিধানসভায় শুনানি চলছে। অ্যাডভোকেট জেনারেল আরও বলেন, সংবিধানের ২১২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিধানসভার অন্তর্বর্তী কোনও কমিটির চেয়ারম্যান নির্ণয়ের ক্ষমতা স্পিকারের রয়েছে। সাংবিধানিক বিধি অনুযায়ী এতে হস্তক্ষেপ করা যায় না। এর সঙ্গে জনস্বার্থ সম্পর্কিত কোনও বিষয় সরাসরি যুক্তও নয়। ওই কমিটিতে শাসকদলের পাশাপাশি বিরোধীরাও রয়েছেন।
দু’পক্ষের এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল এবং রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চ জানায়, এই মামলা জনস্বার্থ হিসেবে আদৌও গ্রাহ্য হবে কি না তা বিচার্য বিষয়। কেন বিষয়টি জনস্বার্থের আওতায় পড়ে, ৪ অগস্টের মধ্যে মামলাকারীকে সংক্ষিপ্ত আকারে জানিয়ে তা আদালতে জমা দিতে হবে। এর উত্তরে রাজ্যও তাদের বক্তব্য জানাবে। আগামী ১০ অগস্ট ওই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে আদালত।