(বাঁ দিক থেকে) শিশির অধিকারী এবং কুণাল ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের দায়ের করা মানহানি মামলায় সাংসদ শিশির অধিকারীর বিরুদ্ধে সমন জারির নির্দেশ দিল কলকাতা নগর দায়রা আদালত। সমাজমাধ্যমে এমনটাই দাবি করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা দলীয় মুখপাত্র কুণাল। অন্য দিকে, কাঁথির সাংসদ শিশিরের আইনজীবী জানিয়েছেন, এ নিয়ে এখনও তাঁরা কোনও কাগজপত্র হাতে পাননি।
সোমবার কুণাল সমাজমাধ্যমে জানিয়েছেন, তাঁর সম্পর্কে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য করেছিলেন শিশির। তার প্রেক্ষিতে আইনের দ্বারস্থ হন তিনি। কুণালের আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী শিশির-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা দায়ের করেন। সোমবার ওই মামলার শুনানি হয় আদালতে। বিচারক শিশির-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে সমন জারির নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ১১ মার্চ শিশির এবং অন্য অভিযুক্তদের আদালতে উপস্থিত হবে।
কুণাল সমাজমাধ্যমে এই খবর জানানোর পর সাংসদ শিশিরের আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করে আনন্দবাজার অনলাইন। আইনজীবী অনির্বাণ চক্রবর্তী জানান, আদালতের কোনও কাগজপত্র তাঁদের হাতে এসে পৌঁছোয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘এই মামলার বিষয়টি আমরা জানি। তবে এ নিয়ে কোনও কাগজ পাইনি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এমন অনেক মামলাই আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে হয়েছে। এই বিষয়ে আদালতের কাগজ পেলে তখন আমাদের তরফে পদক্ষেপ করা হবে।’’
শিশিরের পুত্র শুভেন্দু অধিকারী গত বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে কাঁথির শান্তিকুঞ্জের (অধিকারীদের বাসভবন) সঙ্গে ঘাসফুল শিবিরের দূরত্ব চওড়া হয়েছে। শিশির এখনও খাতায় কলমে তৃণমূলের সাংসদ। তবে তাঁকে বিজেপির একাধিক সভায় দেখা গিয়েছে। যদিও আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও রাজনৈতিক দলে তিনি যোগদান করেননি। এর আগে শিশিরের সম্পত্তিবৃদ্ধি নিয়ে অভিযোগ করেছেন কুণাল। তিনি প্রশ্ন তোলেন জাতীয় নির্বাচন কমিশনে ২০০৯ সালে শিশিরের জমা দেওয়া হলফনামা নিয়ে। কুণালের দাবি, সেখানে শিশির তাঁর মোট সম্পত্তি ১০ লক্ষের বলে জানান। কিন্তু, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে জমা দেওয়া ঘোষণাপত্রে তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ১০ কোটি টাকা বলে জানান। আবার ২০১৯ সালে কমিশনে নতুন জমা দেওয়া হলফনামায় দেখা যায় শিশিরের সম্পত্তি ৩ কোটির। কী করে এই ওঠাপড়া চলল তা নিয়ে তদন্ত দাবি করে কেন্দ্রকে চিঠি লেখেন তিনি। এর পাল্টা কুণালকে ‘জেলখাটা আসামি’ বলে কটাক্ষ করেন শিশির।