(বাঁ দিকে) এম কে স্ট্যালিন। মহম্মদ সেলিম (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাস নিয়ে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যৌথ রাজনৈতিক প্রতিরোধের ডাক দিয়েছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন। এই নিয়ে শনিবার বৈঠক ডেকেছেন তিনি। সেই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানালেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক তথা পলিটব্যুরোর সদস্য মহম্মদ সেলিমকে। তাঁকে চিঠি পাঠিয়েছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী। যদিও ওই বৈঠকে যোগ দিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন সেলিম। যে কারণে স্ট্যালিন বৈঠক ডেকেছেন, তাকে সমর্থন জানিয়ে সেলিমের বক্তব্য, সে সময় দিল্লিতে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক রয়েছে। তাই তিনি স্ট্যালিনের আমন্ত্রণে চেন্নাইয়ে গিয়ে বৈঠকে যোগ দিতে পারবেন না।
আসন পুনর্বিন্যাস নিয়ে শনিবার বৈঠকের ডাক দিয়েছেন স্ট্যালিন। তাতে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। পাশাপাশি, অবিজেপি শাসিত পঞ্জাব, কেরল, তেলঙ্গানা, কর্নাটক, পঞ্জাবকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ওড়িশায় এখন ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। তা সত্ত্বেও সেই সরকারকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন স্ট্যালিন। ওই রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েককেও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের এনডিএ শরিক টিডিপি সরকারকে। সূত্রের খবর, স্ট্যালিন মনে করছেন, আসন পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে হিন্দি ভাষার আধিপত্য নেই, এমন রাজ্যগুলিকে বিজেপি নানা কৌশলে ‘পিষতে’ চাইছে। সে কারণে ওড়িশা এবং অন্ধ্রের সরকারকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে কয়েকটি রাজ্যের প্রদেশ বিজেপিকেও চিঠি পাঠিয়েছেন স্ট্যালিন। এ রাজ্যে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সেলিমকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী। স্ট্যালিনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সেলিম। কিন্তু বিনয়ের সঙ্গে জানিয়েছেন, তিনি উপস্থিত থাকতে পারবেন না। কারণ, বৈঠকের দিন, শনিবার এবং পরের দিন, রবিবার দিল্লিতে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক রয়েছে। সে দিন সেখানে যোগ দিতে যাবেন তিনি। তবে বৈঠকের বিষয়কে সমর্থন জানিয়েছেন।
বিরোধীদের আশঙ্কা, ২০২৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার আসন পুনর্বিন্যাস করে লোকসভা কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়িয়ে নিতে পারে। জনসংখ্যা অনুযায়ী লোকসভায় সাংসদসংখ্যাও বৃদ্ধি হওয়ার কথা। তা হলে হিন্দি বলয়ের রাজ্যগুলি থেকে লোকসভার আসনসংখ্যা অনেকটা বৃদ্ধি পাবে। তুলনায় দক্ষিণের রাজ্যগুলির সাংসদসংখ্যা তেমন বৃদ্ধি পাবে না। ফলে গোটা প্রক্রিয়ায় বিজেপির লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা বলে মনে করছে বিরোধী দলগুলির একটা অংশ। স্ট্যালিন অভিযোগ করেন, যে পদ্ধতিতে আসন পুনর্বিন্যাসের চেষ্টা হচ্ছে, তাতে দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলি বিপাকে পড়তে পারে। জনসংখ্যার ভিত্তিতে লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাস হলে তামিলনাড়ু আট জন সাংসদ খোয়াতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। তাঁর আরও দাবি, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত করছে কেন্দ্র। যদিও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই দাবি মানেনি।