Sujan Chakraborty

চাকরির ইন্টারভিউয়ে প্রথম হয়েছিলেন, তৃণমূলের অভিযোগের জবাবে পাল্টা চ্যালেঞ্জ সুজন-পত্নী মিলির

শনিবার সুজনের পত্নী মিলি আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে চাকরি পেয়েছিলাম না কি নিজের যোগ্যতায় পেয়েছি, তা তদন্ত করলেই সামনে আসবে! প্রমাণ প্রকাশ্যে আনুন। চ্যালেঞ্জ করলাম!’’

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৩ ১৫:৫৭
Mili Chakraborty wife of CPIM Leader Sujan Chakraborty challenges TMC government

সুজন-পত্নী মিলি চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘কারও সুপারিশে আমার চাকরি হয়নি। যাঁরা বলছেন সুপারিশে চাকরি পেয়েছি, তাঁরা সেই প্রমাণ প্রকাশ্যে আনুন।’’ —ফাইল চিত্র।

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা প্রাক্তন সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী মিলি কি বিধিবদ্ধ পরীক্ষা না-দিয়ে কলেজে চাকরি পেয়েছিলেন? নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ শাসক শিবিরের এই পাল্টা অভিযোগকে ঘিরে রাজনৈতিক চাপান-উতোর ক্রমশ বাড়ছে। এ বার সংশ্লিষ্ট বিতর্কে মুখ খুললেন সুজনের স্ত্রী স্বয়ং।

অবসরপ্রাপ্ত এই অধ্যাপক সরাসরি চ্যালেঞ্জ করেছেন তৃণমূল সরকারকে। তাঁর দাবি, সরকার পক্ষ যে অভিযোগ এনেছে, তা সর্বৈব মিথ্যে! যাঁরা তাঁর ‘জয়েনিং লেটার’-টির প্রতিলিপি সামনে এনেছেন, তাঁদের উদ্দেশে মিলির মন্তব্য, ‘‘আমার পার্সোনাল ফাইল থেকে জয়েনিং লেটার বার করেছেন। এটা বার করা যায় না। তবু মেনে নিলাম। কিন্তু সেখানে যে ইন্টারভিউ বোর্ড ছিল, যে পরীক্ষা হয়েছে, তার ফলও প্রকাশ্যে আনা হোক।’’

Advertisement

মিলি দাবি করেছেন, তাঁর চাকরির নিয়োগে কোনও ‘অস্বচ্ছতা’ ছিল না। কোনও ‘অনিয়ম’ হয়নি। ‘সিস্টেম’ মেনেই তিনি চাকরি পেয়েছেন এবং দীর্ঘসময় শিক্ষকতা করেছেন। শুধু তা-ই নয়, ইন্টারভিউ বোর্ড যে পরীক্ষা নিয়েছিল, তাতে তিনি প্রথম হয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন মিলি। সেই ফলাফলের প্রতিলিপি প্রকাশ্যে আনার জন্য সরকার পক্ষের কাছে আবেদন করেছেন মিলি।

শনিবার আনন্দবাজার অনলাইনকে সুজন-পত্নী বলেন, ‘‘কারও সুপারিশে আমার চাকরি হয়নি। আমি সুপারিশে চাকরি পেয়েছি বলে যাঁরা বলছেন, তাঁরা সেই প্রমাণ প্রকাশ্যে আনুন। আমি চ্যালেঞ্জ করলাম!’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বাম সরকারের সময় সিস্টেম ছিল। এখন সমস্ত সিস্টেম ভেঙে পড়েছে। নিয়োগপত্র, চাকরি সংক্রান্ত যাবতীয় রেকর্ড আছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে চাকরি পেয়েছিলাম না কি নিজের যোগ্যতায় পেয়েছি, তা তো তদন্ত করলেই সামনে আসবে।’’

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার মিলির চাকরির একটি চিঠির প্রতিলিপি দেখিয়ে তৃণমূলের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, কী ভাবে সুজনের স্ত্রী গড়িয়ার দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজে চাকরি পেয়েছিলেন। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ মিলির নিয়োগপদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তিনি আদৌ কোনও পরীক্ষা দিয়েছিলেন কি না এবং তখন নিয়োগপ্রক্রিয়া কেমন ছিল, তা নিয়েও কটাক্ষ করেছিলেন কুণাল। তৃণমূলের টুইটারেও সেই একই চিঠি দিয়ে ওই একই প্রশ্নই তোলা হয়েছিল। তার পর দিন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, সুজন-পত্নীর চাকরি পাওয়া নিয়ে কোনও তদন্ত হবে কি না, তা তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসা করবেন। তবে তদন্ত হতে পারে বলে ব্রাত্যের কথায় ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে।

পক্ষান্তরে, তৃণমূলের তোলা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে সুজন বলেছিলেন, বামফ্রন্ট আমলে নিয়োগে কোনও দুর্নীতি হয়নি। এ বার তাঁর স্ত্রী সরাসরি চ্যালেঞ্জ করলেন সরকার পক্ষকে। মিলি বলেন, ‘‘খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেখে চাকরির আবেদন করি। দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজে আবেদন করি। সেখানে একটা ইন্টারভিউ বোর্ড হয়। ইন্টারভিউ বোর্ড আমার পরীক্ষা নেয়। তার ভিত্তিতে আমার কাছে আবেদনপত্র আসে। অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার পেয়ে জয়েনিং লেটার নিয়ে জয়েন করি। যে জয়েনিং লেটার নিয়ে এত বাজার গরম করা হচ্ছে। পরে শুনেছিলাম, প্রিন্সিপাল বলেছেন, ইন্টারভিউতে আমি ফার্স্ট র‌্যাঙ্ক করেছি।’’ পাশাপাশি মিলি এ-ও জানান, তিনি চাকরি করছেন সুজনের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার আগে থেকে। ফলে তাঁর স্বামীর নাম জড়ানোর হচ্ছে শুধুমাত্র রাজনীতির কারণে।

এর মধ্যেই সমাজমাধ্যমে সুজন-মিলিকে নিয়ে একাধিক ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। কোথাও তাঁদের বিবাহের ছবি পোস্ট করে তাঁদের জৌলুসহীন জীবনযাত্রার উদাহরণ দেওয়া হয়েছে। কোথাও ছাত্র রাজনীতির সময়ে সুজন কেমন ছিলেন, তা নিয়ে বিভিন্ন পোস্ট করা হচ্ছে।

Advertisement
আরও পড়ুন