বুধবার নন্দীগ্রামে দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিলেন তৃণমূল কর্মীদের একাংশ। নিজস্ব চিত্র।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নবজোয়ার যাত্রা’ কর্মসূচিতে প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়ায় কম ভোট পেয়েছিলেন শেখ সুফিয়ান। যিনি বেশি ভোট পেয়েছিলেন, সেই শামসুল ইসলামকে বাদ দিয়ে কেন সুফিয়ানকেই পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থী করা হল, এই প্রশ্ন তুলে বুধবার পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিলেন তৃণমূল কর্মীদের একাংশ। এ নিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র তথা পূর্ব মেদিনীপুরে দলের বিশেষ দায়িত্বে থাকা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘আমি যাচ্ছি ওখানে। যাঁরা পার্টি অফিসে তালা লাগিয়েছেন, তাঁরা কারা, আমি ওখানে গিয়ে দেখছি। রাস্তায় আছি।’’
পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর থেকেই নন্দীগ্রামে তৃণমূলের অন্দরে আলোড়ন চলছে বলে দলের একাংশের দাবি। গত বিধানসভা নির্বাচনে সুফিয়ান নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন। সুফিয়া-ঘনিষ্ঠদের অভিযোগ ছিল, পঞ্চায়েত ভোটের সময় তাঁর অনুগামীদের কোণঠাসা করা হচ্ছে। টিকিট না পেয়ে নন্দীগ্রামের ১৭টি পঞ্চায়েতে নির্দল প্রার্থী দেন সুফিয়ানের অনুগামীরা। সেই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তড়িঘড়ি নন্দীগ্রামে ছুটে যান দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল। তিনি নন্দীগ্রাম ছাড়ার পরেই বুধবার জানা যায়, জেলা পরিষদের প্রার্থিতালিকায় সুফিয়ানের নাম রয়েছে। এর পরেই প্রতিবাদ সরব হন সুফিয়ানের বিরোধী গোষ্ঠী।
বিক্ষোভকারী মুজিবুর রহমানের বক্তব্য, ‘‘যে আসনে সুফিয়ানকে আনা হয়েছে, সেখানে শামসুল ইসলামকে দাঁড় করানোর কথা হয়েছিল।’’ তাঁর দাবি, ‘‘এই আসনে প্রার্থী নিয়ে অভিষেকের নবজোয়ারের ভোটাভুটিতে সুফিয়ান পেয়েছিল ৭টি ভোট আর সামসুল পেয়েছিল ৭১টি ভোট। এর পরেও কী ভাবে সুফিয়ানকে টিকিট দেওয়া হচ্ছে, তা আমরা মানব না।’’ শামসুলকে টিকিট দেওয়া না হলে, তার প্রভাব ব্যালটে পড়বে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। মুজিবুর বলেন, ‘‘সামসুল দাঁড়ালে ৪ হাজার ভোটের লিড দেব। সুফিয়ান দাঁড়ালে ২ হাজার ভোটে হারবে।’’
এ প্রসঙ্গে সুফিয়ান বলেন, ‘‘আমি তৃণমূলের এক জন সৈনিক। দল যখন যে দায়িত্ব দিয়েছে, তা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করছি। আমি বৃহস্পতিবার সকালে হলদিয়া মহকুমাশাসকের দফতরে মনোনয়ন জমা করতে যাব। নন্দীগ্রামে তৃণমূলের প্রার্থীরা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় জিতবে। আমাকে ব্লক বা জেলা নয়, টিকিট দিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী, সুব্রত বক্সী এবং অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। আমি তাঁদের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করছি। তবে একটি আসনে একাধিক দাবিদার থাকতেই পারে। যাঁরা টিকিট পেলেন না, তাঁদের অনুগামীদের ক্ষোভ হওয়া স্বাভবিক। তবে আমি আগের মতোই রেকর্ড ভোটে এই আসনে জিতব। দলের অভ্যন্তরীণ ক্ষোভ আলোচনার মাধ্যমেই মিটে যায়। এতে ভোটে কোনও প্রভাব পড়বে না।’’