AWAS YOJANA

ছেলেরা স্বাবলম্বী, আবাসের তালিকা থেকে নাম কাটাতে দরখাস্ত পূর্ব মেদিনীপুরের তৃণমূল নেতার!

পেশায় কৃষক। পরিবারকে নিয়ে থাকেন একটি মাটির বাড়িতে। তবে বাড়ির দুই ছেলেই এখন রোজগেরে। একটি পাকা বাড়ি তৈরিও শুরু করেছেন তাঁরা। তাই আবাসের তালিকা থেকে নাম কাটাতে দরখাস্ত জমা দিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের তৃণমূল নেতা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২৪ ২৩:৪৯
পূর্ব মেদিনীপুরের তৃণমূল নেতা শক্তিপদ মান্না।

পূর্ব মেদিনীপুরের তৃণমূল নেতা শক্তিপদ মান্না। —নিজস্ব চিত্র।

আবাস যোজনার উপভোক্তাদের তালিকা থেকে নাম কাটালেন পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার তৃণমূল নেতা শক্তিপদ মান্না। পাঁশকুড়ার নস্করদিঘি গ্রামে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে থাকেন তিনি। পেশায় কৃষক। এখনও পাকা বাড়ি হয়নি। একটি ছোট মাটির বা়ড়িতেই থাকেন তিনি। তবে বাড়ির দুই ছেলেই রোজগেরে। তাঁরা নিজেদের টাকায় পাকা বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেছেন। এমন অবস্থায় তাই আবাসের উপভোক্তাদের তালিকা থেকে নিজের নাম কাটানোর আবেদন জানালেন তিনি। বিডিও অফিসে এ বিষয়ে লিখিত দরখাস্তও জমা দিয়েছেন শক্তিপদ। তিনি চান, আবাসের ঘর তাঁর বদলে অন্য কেউ পাক।

Advertisement

তৃণমূলের নেতা বলে গ্রামে নামডাক আছে শক্তিপদর। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের টিকিটে জিতেছিলেন। শুরুতে পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। পরে ২০১৬-২০১৮ সাল পর্যন্ত পঞ্চায়েতের উপপ্রধানও থেকেছেন। আবাসের তালিকাতেও নাম উঠেছিল সেই সময়ে। এখন তিনি দলের বুথ সভাপতি পদে রয়েছেন। সম্প্রতি গ্রামে গ্রামে ঘুরে আবাস যোজনায় উপভোক্তার তালিকার সমীক্ষা চালাচ্ছে ব্লক প্রশাসন। তখনও তাঁর মাটির বাড়িই দেখে গিয়েছিলেন সমীক্ষক দলের সদস্যেরা। তাই নামও রয়ে গিয়েছে উপভোক্তাদের তালিকায়।

শক্তিপদের বক্তব্য, তিনি সম্প্রতি জানতে পেরেছেন যে আবাস যোজনার উপভোক্তা হিসাবে তিনিও টাকা পাবেন। তাই উপভোক্তার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার জন্য বিডিও অফিসে একটি দরখাস্ত জমা দিয়েছেন ওই তৃণমূল নেতা। তিনি বলেন, “আমি এই টাকা নিতে চাই না। বর্তমানে আমার দুই ছেলে কিছু উপার্জন করে। সেই টাকায় তাঁরা বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেছে। তাই আমি আবাসের টাকা নিতে চাই না বলেই জানিয়েছি।”

তা ছাড়া তাঁকে ঘিরে দলের ভাবমূর্তি খারাপ হোক, সেটাও চান না শক্তিপদ। সম্প্রতি আবাস যোজনার উপভোক্তাদের তালিকাকে কেন্দ্র করে বিরোধীরা বার বার আক্রমণ করেছে শাসক শিবিরকে। স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠে এসেছে বিভিন্ন জেলায়। শক্তিপদের বক্তব্য, তাঁকে নিয়েও বিরোধীরা এই ধরনের অভিযোগ তোলার সুযোগ পাক, সেটি তিনি চান না। তিনি চাইছেন, আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া অন্য কোনও পরিবার এই প্রকল্পের সুবিধা পাক। শক্তিপদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন পাঁশকুড়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূল নেত্রী শম্পা সাঁতরা রাউত। শম্পা বলেন, “তিনি (শক্তিপদ) যে ভাবে এগিয়ে এসেছেন তা একটা দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে। শক্তিপদকে দেখে অন্যেরাও যদি এগিয়ে আসেন, তাহলে এই প্রয়াস সফল হবে।”

আরও পড়ুন
Advertisement