শহিদ তর্পণে তৃণমূল নেতৃত্ব। — নিজস্ব চিত্র।
নন্দীগ্রামে শহিদ তর্পণ শুরুর আগেই উত্তেজনা। নন্দীগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষের নামে পড়ল একাধিক পোস্টার, ফেস্টুন। যা দেখে ‘আমোদিত’ কুণাল বললেন, ‘‘আমার উপস্থিতি শুভেন্দুদের চক্ষুশূল হচ্ছে জেনে ভাল লাগছে।’’ সব মিলিয়ে, জমি আন্দোলনের ধাত্রীভূমি নন্দীগ্রামে শহিদ দিবস পালনের অনুষ্ঠান শুরু থেকেই গনগনে আঁচে সেঁকা।
২০০৭ সালের ৭ জানুয়ারি নন্দীগ্রামের সোনাচূড়ায় সিপিএমের বাহিনীর হাতে খুন হয়েছিলেন জমি আন্দোলনকারী তিন যুবক। সেই ঘটনার ১৭তম বর্ষপূর্তিতে রবিবার ভোর থেকেই সোনাচূড়ার ভাঙাবেড়া ব্রিজে শুরু হয় শহিদ তর্পণ। সেখানে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের নামে একাধিক পোস্টার দেওয়াকে কেন্দ্র করে শুরু হয় জোর বিতর্ক। যদিও তাতে আমোদ পেয়েছেন বলেই প্রকাশ্যে জানিয়েছেন কুণাল।
এ দিন কুণালের নিশানায় ঘুরেফিরে বার বার এসেছেন শুভেন্দু। স্থানীয় বিধায়ককে নিশানা করতে গিয়ে কুণাল তুলে এনেছেন নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলনের কথা। তিনি বলেন, “এক সময় যে সিপিএমের হার্মাদ বাহিনীর বিরুদ্ধে নন্দীগ্রামে নারকীয় হত্যাকাণ্ড ঘটানোর অভিযোগ উঠেছিল, এখন সেই সিপিএম নেতারাই দল বদলে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন। আর তাঁদের সঙ্গে নিয়েই নন্দীগ্রামের শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী!’’ নিজের রাজনৈতিক অভিসন্ধি পূরণ করতে গিয়ে হার্মাদদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন শুভেন্দু বলে অভিযোগ করে কুণাল ফিরে আসেন তাঁর বিরুদ্ধে পোস্টার লাগানোর ঘটনায়। তিনি বলেন, ‘‘আমার নামে রাতের অন্ধকারে গো ব্যাক স্লোগান দিয়ে পোস্টার মারা হয়েছে। একে আমি আসলে ‘ওয়েলকাম’ পোস্টার হিসেবেই দেখি। আমার উপস্থিতি বিজেপির চক্ষুশূল হচ্ছে জেনে ভাল লাগছে।” উপস্থিত তৃণমূল কর্মীদের প্রতি কুণালের বার্তা, “সদ্যসমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল ১০ হাজার ভোটের লিড পেয়েছিল। আসন্ন লোকসভা ভোটে এখান থেকেই ২০ হাজার ভোটের লিড বার করে বিজেপিকে দেখিয়ে দিতে হবে।”
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রবিবার ভোর ৫টায় সোনাচূড়ার ভাঙাবেড়া ব্রিজের কাছে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে মোমবাতি জ্বেলে শহিদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন কুণাল-সহ তৃণমূলের নেতৃত্ব। এর পর ঘন্টাখানেকের শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠানে জমি আন্দোলনে মৃত শহিদদের স্মরণ করা হয়।