Anup Mahata

জল্পনা বাড়িয়ে কুড়মি নেতা ক্যামাক স্ট্রিটে

রবিবার সাংগঠনিকসভা ডেকে আদিবাসী নেগাচারী কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন অনুপ।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৪ ০৯:৩২
সোমবার সমাজ মাধ্যমে অনুপ মাহাতোর এই পোস্ট নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।

সোমবার সমাজ মাধ্যমে অনুপ মাহাতোর এই পোস্ট নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।

প্রথমে জানিয়েছিলেন একুশে জুলাই নতুনভাবে পথ চলা শুরু করবেন। এ বার ক্যামাক স্ট্রিটে বিশেষ কাজে গিয়েছেন জানিয়ে জল্পনা বাড়ালেন কুড়মি নেতা অনুপ মাহাতো। সোমবার অনুপ সমাজ মাধ্যমে নিজের ছবির কোলাজ পোস্ট করে ওই কথা লেখেন। ক্যাম্যাক স্ট্রিটেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতর। ফলে অনুপের তৃণমূল যোগের জল্পনা জোরদার হচ্ছে।

Advertisement

রবিবার সাংগঠনিকসভা ডেকে আদিবাসী নেগাচারী কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন অনুপ। লোকসভা ভোটে কুড়মিদের কাছে আশাতীত সাড়া না মেলায় (ঝাড়গ্রামে তাঁর সংগঠনের সমর্থিত প্রার্থীর জামানত জব্দ হয়) নৈতিক দায় নিয়ে তিনি পদ ছাড়েন। তবে বৃহত্তর কুড়মি সমাজের ‘মহামোড়ল’ পদ ছাড়েননি অনুপ। তবে ক্যামাক স্ট্রিটে যাওয়া নিয়ে ফোনে তাঁর দাবি, ‘‘ব্যবসার প্রয়োজনে কলকাতায় এসেছি। ক্যাম্যাক স্ট্রিট তো ব্যবসায়িক অফিস পাড়া।’’ তৃণমূলেই যাচ্ছেন? অনুপের মন্তব্য, ‘‘একুশে জুলাই সমস্ত জল্পনার অবসান হবে।’’

কুড়মিদের নিয়ে তৃণমূলের অবস্থান বছর দুয়েকে বদলেছে। গোড়ায় জাতিসত্তার দাবিকে মান্যতা দেননি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কুড়মিরা তৃণমূলকে ভোট দেন না বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। তারপর ঝাড়গ্রামে মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদার গাড়িতে হামলার অভিযোগে অনুপ-সহ কুড়মি আন্দোলনের ১৫ জন নেতা-কর্মী গ্রেফতার হন। পরে সকলেই জামিন পান। তবে চার্জশিট থেকে বাদ পড়ে অনুপের নাম।

গত বছর পঞ্চায়েত ভোটে জাতিসত্তার দাবিতেই কুড়মি সংগঠনগুলির ঘাঘর ঘেরা মঞ্চের তরফে জঙ্গলমহলের একাধিক আসনে নির্দল প্রার্থী দেওয়া হয়। ঝাড়গ্রাম জেলায় ৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ডও গড়ে নির্দল কুড়মিরা। এরপরই সুর নরম হয় নবান্নের। কুড়মি নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন মুখ্যমন্ত্রী। কুড়মিদের নিয়ে সমীক্ষার ঘোষণা হয়। লোকসভায় তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তাহারে কুড়মিদের জনজাতি তালিকাভুক্তির দাবিকে সমর্থন জানানো হয়। লোকসভায় বিপুল জয়ের পরে এ বার কি তাহলে কুড়মি ঐক্যে ফাটল ধরানো তৃণমূলের লক্ষ্য? অনুপ নীরব। আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি শিবাজী মাহাতোর মতে, ‘‘কুড়মিদের দীর্ঘদিনের দাবিটিকে সুকৌশলে হিমঘরে পাঠানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’

বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলা সহ-সভাপতি দেবাশিস কুণ্ডুরও দাবি, ‘‘পাহাড়ের মতো জঙ্গলমহলেও মূলবাসীদের মধ্যে বিভাজনের তাস খেলছে তৃণমূল।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক প্রদীপকুমার সরকার বলছেন, ‘‘তৃণমূল সব সময়ই বিভাজনের রাজনীতি করে।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি দুলাল মুর্মুর বক্তব্য, ‘‘কেউ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে আস্থা রেখে দলে এলে স্বাগত জানাব। আর বিরোধীরা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গিয়ে বিভাজনের তত্ত্ব খাড়া করছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement